দিল্লির নিজামউদ্দিনের ধর্মসভা থেকে কে কে পশ্চিমবঙ্গে ফিরেছেন? চলছে খোঁজ
আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ থেকে সভায় অংশ নেওয়া ৯ জন ও তাদের একজনের স্ত্রী করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হয়েছেন
নিজস্ব প্রতিবেদন: দিল্লির নিজামউদ্দিনের ধর্মসভায় অংশ নিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গেরও কয়েকজন বাসিন্দা। তবলিঘ-ই-জামাতের ওই সভার পর পশ্চিমবঙ্গেই আবার ফিরে আসেন কয়েকজন। তাঁরা কোথায়? কেমন আছেন তাঁরা? সে বিষয়েই এবার নড়েচড়ে বসল মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের প্রশাসন।
মঙ্গলবার রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় টুইট করে জানালেন, নিজামউদ্দিন ফেরত সকলের খোঁজ চালাচ্ছে প্রশাসন। দ্রুত চিহ্নিত করে তাঁদের সকলের কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হবে। শুধু তাই নয়, তাঁদের বাধ্যতামূলক ১৪ দিনে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে।
All those from WB who have participated in this event (Tablighi Jamaat in Delhi) are being identified and will be immediately tested for COVID and put under mandatory 14 days quarantine.
— Alapan Bandyopadhyay (@alapan1961) March 31, 2020
মার্চের মাঝামাঝি দিল্লির নিজামউদ্দিনের ওই ধর্মসভায় অংশ নেন প্রায় ২ হাজার মানুষ। মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সৌদি আরব থেকে ধর্মগুরুরা আসেন তবলিঘ-ই-জামাত নামে ওই ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সভাতে। সমাবেশ শেষ হওয়ার পর সেই অতিথিরা ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে যান। লকডাউনের আগে ও পরে যখন বিভিন্ন রাজ্যের যখন করোনা ভাইরাস আক্রান্তের হদিশ মিলছে, তখন কিছু সংখ্যক ব্যক্তির ক্ষেত্রে দেখা যায় তাঁরা প্রত্যেকেই মধ্য-মার্চে তবলিঘ-ই-জামাতের ধর্মসভায় অংশ নিয়েছিলেন। ব্যাপারটা যে কাকতালীয় নয় তা বুঝতে বেশি দেরি হয়নি প্রশাসনের।
আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ থেকে সভায় অংশ নেওয়া ৯ জন ও তাদের একজনের স্ত্রী করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হয়েছেন। তবলিঘ-ই-জামাতের সভার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন তেলেঙ্গানার ৬ জন। করোনাভাইরাসের রিপোর্ট পজিটিভ আসে তাঁদের। আইসোলেশনে চিকিত্সাধীন থাকাকালীনই তাঁদের মৃত্যু হয়। ধর্ম সভায় অংশ নেওয়ার পর তেলেঙ্গানায় যান কয়েকজন ইন্দোনেশীয়। তাঁদের মধ্যে ১০ জনের দেহে করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে। তবলিঘ-ই-জামাতের সভা থেকে শ্রীনগর ফেরার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন ১ ধর্মগুরু। তাঁরও দেহে করোনাভাইরাসের হদিশ মেলে। গত সপ্তাহে আইসোলেশনে থাকাকালীন তাঁর মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন- করোনার জেরে বিশ্ব মন্দার প্রভাব সম্ভবত পড়বে না ভারত-চিনে: রাষ্ট্রসঙ্ঘ
সব যোগসূত্র মিলতেই নড়েচড়ে বসে দিল্লির প্রশাসন। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব লাভ আগরওয়াল বলেন, "আমাদের বুঝতে হবে যে এটা ভুল-ত্রুটি খুঁজে বেরনোর সময় নয়। বরং এখন কোথায় কোথায় সংক্রমণ ছড়িয়েছে তার খোঁজ করা বেশি গুরুত্বপূর্ণ।" করোনা ভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে সেই সভায় যারা সংস্পর্শে এসেছিলেন তাঁদের প্রত্যেককে অবিলম্বে কোয়ারান্টিনে পাঠানোর ও লালা রসের নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। শুধু তাই নয়, নিজামুদ্দিনের আশেপাশে দক্ষিণ দিল্লির বহু মানুষের দেহে করোনাভাইরাস থাকার প্রাথমিক লক্ষণগুলি দেখা দেওয়ায় পুরো এলাকা কার্যত সিল করে দেওয়া হয়েছে। সভায় অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের ওপর চালানো হচ্ছে কড়া নজরদারি।
দিল্লির নিজামউদ্দিনের ঘটনার পর পশ্চিমবঙ্গে ফিরেছিলেন ক'জন? তাঁরা সেল্ফ কোয়ারেন্টাইনে আছেন কি না? এই প্রশ্নই এখন ভাবচ্ছে রাজ্যের প্রশাসনিক কর্তাদের।