মত্যুর কাছে হার আফরিনের

দিন তিনেক লড়াইয়ের পর মৃত্যুর কাছে হার মানল ছোট্ট আফরিন। চিকিত্‍সকরা জানিয়েছেন, বুধবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বেঙ্গালুরুর হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে তার।

Updated By: Apr 11, 2012, 11:52 AM IST

দিন তিনেক লড়াইয়ের পর মৃত্যুর কাছে হার মানল ছোট্ট আফরিন। চিকিত্‍সকরা জানিয়েছেন, বুধবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ হৃদরোগে আক্রান্ত হয় সে। বেলা এগারোটা দশ মিনিটে বেঙ্গালুরুর হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে তার। ভাঙা ঘাড় ও সারা গায়ে সিগারেটের ছেঁকা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল শিশুটি। তার পর থেকেই ভেন্টিলেশনে ছিল সে। মঙ্গলবার সেমি কোমায় চলে গিয়েছিল তিন মাসের শিশুকন্যাটি। মঙ্গলবার বিকেল থেকে শ্বাস-প্রশ্বাসের গতি অনেকটাই বেড়ে গিয়েছিল আফরিনের। বেশ কয়েকবার বমিও করেছে শিশুটি। সমস্ত চেষ্টা সত্ত্বেও শেষ রক্ষা করতে পারলেন না চিকিত্সকরা। আফরিনের মৃত্যুর পর তার বাবার বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করেছে বেঙ্গালুরু পুলিস।
বাবার অত্যাচারে বেঙ্গালুরুর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল ৩ মাসের আফরিন। মেয়ে হওয়ায়, জন্মের পর থেকেই তার ওপর শুরু হয় নৃশংস নির্যাতন। বাবার সিগারেটের ছ্যাকায় দগ্ধ আফরিনের শরীর। মাথাতেও গুরুতর আঘাত রয়েছে। দিনের পর দিন অত্যাচারের জেরে শরীর নীল হয়ে গিয়েছে আফরিনের। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই চালাচ্ছে শিশুটি।
চলতি বছরের গোড়ার দিকে ভাঙা হাত, শরীরে অসংখ্য মানুষের কামড়ের দাগ, ইস্ত্রির ছ্যাঁকা সহ আরও বেশ কিছু ক্ষত নিয়ে দিল্লির এইম্‌স-এ ভর্তি হয় ফলক। প্রায় দু'মাস যুদ্ধ করে মার্চ মাসের ১৫ তারিখ রাত ৯টা ৪০ মিনিটে তিন নম্বর হার্ট অ্যাটাকের ধকল সামলাতে পারেনি ফলক। একমাস কাটতে না-কাটতেই সেই রোমহর্ষক ভয়াবহতার স্মৃতিকে তাজা করে নিজের মেয়েকে কোমায় পাঠালেন বেঙ্গালুরুর ওমর ফারুক।
আফরিনের মা রেশমার অভিযোগ, পণের টাকা না-মেটানোয় অসন্তোষ ছিলই, তার ওপর কন্যাসন্তানের জন্ম ওমরের ক্ষোভে ঘৃতাহুতি দেয়। বহুদিন ধরেই স্ত্রীর ওপর শারীরিক নিগ্রহ চালাচ্ছিল সে। রেশমার অভিযোগ, জন্মের পর থেকে বাবার নৃশংস নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে আফরিনকেও। রবিবার, বমি ও শ্বাসকষ্টে অসুস্থ আফরিনকে বেঙ্গালুরুর একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার পর থেকে কোমায় আচ্ছন্ন ছিল তিন মাসের শিশুটি। চিকিত্‍সকদের সংশয় ছিল প্রথম থেকেই। আশঙ্কাই সত্যি হল বুধবার বেলা এগারোটা দশ মিনিটে।

.