মাতাল মাথেরনের ডাকে

যদিও বিয়েটা হয়েছিল সেই এপ্রিলের মাঝামাঝি। কিন্তু দুজনেরই কাজের চাপ আর সময়ের চাপে বাকি পড়ে গিয়েছিল মধুচন্দ্রিমার অবকাশ। সামনে পুজো। হাতে কিছুদিন ছুটি। এই সুযোগে সেরে নেওয়া যায় ডিউ থাকা মধুযামিনী।

Updated By: Sep 28, 2012, 01:55 AM IST

যদিও বিয়েটা হয়েছিল সেই এপ্রিলের মাঝামাঝি। কিন্তু দুজনেরই কাজের চাপ আর সময়ের চাপে বাকি পড়ে গিয়েছিল মধুচন্দ্রিমার অবকাশ। সামনে পুজো। হাতে কিছুদিন ছুটি। এই সুযোগে সেরে নেওয়া যায় ডিউ থাকা মধুযামিনী। ছক বাঁধা হনিমুন ডেস্টিনেশনের বদলে হয়েই যাক না একটু অন্য রকমের ভ্রমণ। মাথেরন। পশ্চিমঘাট পর্বতমালার কোলে ভারতের সবথেকে ছোট শৈলশহর। জল, জঙ্গল আর পাহাড় এখানে মিলেমিশে একাকার। আর সবকিছু ছাপিয়ে এই শৈলশহরকে সবসময় ঘিরে রাখে এক অদ্ভুত নীরবতা। মুম্বই থেকে মাত্র একশো কিলোমিটার দূরে মাথেরন আজও বহু পর্যটকের কাছেই অঘ্রাত এক ডেস্টিনেশন।

দেশের অন্য শৈলশহরগুলির থেকে এক্কেবারে আলাদা এই মাথেরন। কারণ, আটশো মিটার উচ্চতায় অবস্থিত মাথেরনে আজও প্রবেশ করতে পারে না তেলচালিত কোনও গাড়ি। কেন্দ্রীয় পরিবেশমন্ত্রকের কড়া নির্দেশের কারণেই আজও মাথেরনে প্রবেশ করতে গেলে ভরসা শুধুমাত্র হাতে টানা রিকশা কিংবা ঘোড়া। দিন দুয়েকের রসদ নিয়ে ঢুকে পড়তে হবে কুয়াশামাখা মাথেরনের জঙ্গলে।
কিন্তু, কী আছে এই ছোট্ট জঙ্গলে? সূর্যের আলোকে ঢুকতে বাধা দেওয়ার মতো গাছের সারি আর জঙ্গলের সুরিপথে হারিয়ে যাওয়ার আনন্দটা যিনি উপভোগ করতে পারেন, তাঁর জন্য সেজেগুজে তৈরি মাথেরন। জঙ্গলের পথ পেরিয়ে পৌঁছে যাওয়া যায় লুসিয়ানা পয়েন্টে। এখান থেকেই দেখে নেওয়া যেতে পারে খাদের গায়ে আটকে থাকা প্রবাল দুর্গকে।
সালটা ১৮৫০। ক্রমশ শক্ত হচ্ছে ভারতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ভিত। আর তখনই থানের তত্কালীন ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টর হুগ পয়েন্টজ মালে আবিষ্কার করেন জল, জঙ্গলে ভিজে থাকা মাথেরনকে। তারপর থেকে একটু একটু করে সেজে উঠেছে এই শৈলশহর।
বর্ষাকালটা বাদ দিলে বছরের প্রায় প্রতিটি সময়েই যাওয়া যেতে পারে মাথেরনে। বিশেষত গরমের সময় মুম্বই এবং পুণে থেকে বহু মানুষই ভিড় করেন এখানে। সপ্তাহ শেষে দুটো দিন একটু নিরিবিলিতে কাটিয়ে যেতে মাথেরনের জুড়ি মেলা ভার।
যাওয়ার পথ: পুজোর কটা দিন কি কাটিয়ে যেতে ইচ্ছে করছে মাথেরনে? এখনই সেরে ফেলতে পারেন ট্যুর প্ল্যানটা। হাওড়া থেকে মুম্বই বা পুণে। আর তারপর ন্যোরো গেজের ট্রেন ধরে সোজা মাথেরন। সেখান থেকে দস্তুরি নাকা। এখানেই কিন্তু আপনাকে ছেড়ে দিতে হবে গাড়ি। এরপর ভরসা শুধু রিকশা কিংবা ঘোড়া। আর, জঙ্গলে প্রবেশের ক্ষেত্রে রয়েছে কড়া নিয়ম। কোনওরকম প্লাস্টিকজাতীয় জিনিস ব্যবহার নিষিদ্ধ এই জঙ্গলে।
থাকার হদিশ: জঙ্গলের ভিতরে বনবাংলোতে মিলবে না বিদ্যুতও। তাই সেই অনুযায়ী আগে থেকেই করে রাখতে হবে বন্দোবস্ত।

.