মধুর মহাবালেশ্বরে
ঘন সবুজ চারপাশ। ঝুপ ঝুপ বৃষ্টিতে ভেজা পথ-ঘাট। বন্ধ জানলার বাইরে ক্লান্তিহীন ডেকে যাওয়া ঝিঁঝিঁর সিম্ফনি। মেঘ-চাঁদের অনাবিল লুকোচুরি।
ঘন সবুজ চারপাশ। ঝুপ ঝুপ বৃষ্টিতে ভেজা পথ-ঘাট। বন্ধ জানলার বাইরে ক্লান্তিহীন ডেকে যাওয়া ঝিঁঝিঁর সিম্ফনি। মেঘ-চাঁদের অনাবিল লুকোচুরি। ভালবাসা-বাসি মন। উষ্ণতা সন্ধানী শরীর। মধু রাত, মধু চাঁদ সঙ্গী মহাবালেশ্বর। মহারাষ্ট্রের বিখ্যাত শৈল শহর। সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে ৪৫০০ মিটার উঁচু। যথার্থ নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়া অত্যন্ত আরামদায়ক। তাকে খুব কাছে পাওয়ার একান্ত মুহূর্তের কয়েকদিনের অন্য রকম ঠিকানা। বুনো ফার্নে ঘেরা আবছা আলোছায়ায় মাখা রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ করে `নরম ঠোঁটে স্বেচ্ছা ব্যাথার নীল`। এলফিস্টন পয়েন্ট থেকে কোয়েনা আর সাবিত্রীর মিলেমিশে এক হয়ে যাওয়ার মধ্যে নিজেদের খুঁজে পাওয়া। অথবা মার্জোরি পয়েন্ট থেকে সহ্যাদ্র্যি পর্বতের `ভার্জিন` রূপে বুঁদ হয়ে ডুবে থাকার মধ্যে মধুচন্দ্রিমা অন্য মাত্রা খুঁজে পাবেই। প্রকৃতি তার বুনো রূপের ডালি মহাবালেশ্বরের আনাচে কানাচে উজাড় করে দিয়েছে। এই শ্যাওলা সবুজ উপত্যকার সেরা জায়গা আর্থার সিট। কোঙ্কন আর ডেকান উপত্যকার ভৌগলিক সীমারেখার চাক্ষুষ দর্শন মেলে এখান থেকে। আর্থার পয়েন্ট থেকে কয়েক কদম এগিয়ে গেলে দেখা মেলে উপত্যকার বুক চিরে তিরতির করে বয়ে চলা টাইগার ঝরনার। এর ঠিক নিচেই রয়েছে উইনডো পয়েন্ট। উইন্ডো পয়েন্টকে পাশ কাটিয়ে সামনের দিকে এগোনো গেলেই শ্বাসরোধ করা সুন্দর প্রকৃতির আস্বাদ পাওয়া যায়। একদিকে ঘন সবুজ কৃষ্ণা উপত্যকা, অন্যদিকে ধোম বাঁধের গভীর জল। এছাড়াও চলে যাওয়াই যায় কাছে পিঠের বাগদাদ পয়েন্ট, ক্যাসেল রক, নর্থ কোট পয়েন্ট, প্রতাপগড় ফোর্ট, মাউন্ট ম্যালকম, হোলি ক্রস চার্চ আরও বেশ কিছু জায়গায়। সদ্য বিয়ের অনুভূতির মাদকতা যখন মন থেকে শরীরের দরজায় ধাক্কা মারে, নিষ্পাপ উদ্দামতা যখন ব্যস্ত জীবনের মাঝে সন্ধান করে এক ফালি নির্জন কোণ, তখন ব্যাগ গুছিয়ে মধুচন্দ্রিমা যাত্রায় পাড়ি দেয় দু`জন। আর সেই যাত্রা পথ যদি গিয়ে মেশে মহাবালেশ্বরের মেঘে তাহলে নিশ্চিত ভাবেই মধুচাঁদ মধু মেশা ঋতু সঙ্গে নিয়ে জীবনে ঝরে পরবেই।
যাওয়ার পথ: কলকাতা থেকে মুম্বই যাওয়ার এখন বেশ কয়েকটি ট্রেন রয়েছে। গীতাঞ্জলি, হাওড়া-মুম্বই দুরন্ত, হাওড়-মুম্বই মেল ইত্যাদি। মুম্বই থেকে মহাবালেশ্বরের দূরত্ব ২২১ কিমি। ট্রেনে করে মুম্বই থেকে মহাবালেশ্বরে আসতে গেলে নামতে হয় বাথার স্টেশনে। সেখান থেকে ট্যাক্সি বা বাসে চেপে খুব সহজেই পৌঁছে যাওয়া যায় এই শৈল শহরে।
থাকার হদিশ: মহরাষ্ট্র ট্যুরিজিমের একটি বেশ ভালো অথিতি নিবাস রয়েছে সান সেট পয়েন্টের কাছে। ভাড়া ১৫০০ টাকা। এছাড়াও বেশ কিছু বেসরকারি রিসর্ট, হোটেল। ভাড়া ১০০০ থেকে ৫০০০ এর মধ্যে।