যোগ্য
নীলাদ্রি বাসু বল
আমার একমাত্র মেয়ে পর্ণা আর ওর সহপাঠী অর্ক। আমি মেয়েকে আদরে বৈভবে মানুষ করেছি। ওই সাদামাটা ছেলেটাই কিন্তু মেয়ের প্রিয় বন্ধু হয়ে উঠলো। পর্ণা বিদ্যায় বুদ্ধিতে অর্কর চেয়ে অনেক এগিয়ে। তবু অর্ককে না বললে ওর কোন কিছুই সম্পূর্ণ হোত না।
মেয়ে আমার দিল্লি চলে গেল বড় চাকরি নিয়ে। আমি হাফ ছেড়ে বাঁচলাম অর্কর থেকে ওকে দূরে পাঠিয়ে। অর্ক কিন্তু আমাদের খবরাখবর নিতো নিয়মিত। একদিন হঠাৎ আমায় এসে বলল ও পর্ণাকে ভালবাসে, বিয়ে করতে চায়। আমি যথা সম্ভব তাচ্ছিল্লের সাথে জানতে চাইলাম পর্ণাও কি বিয়েটা করতে চায়? অর্ক বলেছিল ওদের মধ্যে কথা হয়নি, কিন্তু ও জানে পর্ণাও এটাই চায়। ও কলেজে পড়ানোর চাকরিটা পেয়েই বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে এসেছে। আমি সেদিন ওকে অপমান করে বার করে দিয়েছিলাম।
পর্ণার যোগ্য একটি পাত্র পাওয়া গেল। ও অর্কর কথা জানতে চাইলো। বললাম আজকাল দেখা হয় না। শুনলাম অর্ক জানিয়েছিল চাকরি নিয়ে বাইরে যাচ্ছে, পরে যোগাযোগ করবে। আর কথা হয়নি। বিয়ের দেড় মাসের মধ্যে সেই সুযোগ্য পাত্রের গুণাগুণ ঝরে পড়লো পর্ণার গালে, পিঠে। দিনে অফিস, রাতে মদ্যপ স্বামীর কাছে ফিজিক্যালি, মেন্ট্যালি অ্যাবিউজড্ হচ্ছিলো। পর্ণা মুক্তি চেয়েছিল। কাজকর্ম শুরু করলো পুরো দমে। একদিন হঠাৎ বলল, অর্কটা যে কোথায় গেলো.... এখন ও থাকলে...... আমার ভিতরটা কেঁপে গেলো।
একদিন হঠাৎ দরজা খুলে দেখি অর্ক। হাতজোড় করে বলল-- আমি কি এখনো ওর যোগ্য হইনি? আমি সমস্ত অহং জলাঞ্জলি দিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরলাম। (আরও পড়ুন- আই-ভি-এফ)