বেকালের বালুকাবেলায়
বিয়ে আর হনিমুন শব্দ দুটো কেমন যেন একটা আর একটার সঙ্গে মিলে মিশে থাকে। প্রথম জনের আঁচল ধরে পরের জন না এলে জীবনটা যেন ইলিশ ছাড়া বর্ষাকাল। ভীষণ পানসে। অতএব `হানিমুন যানা জরুরী হে`। তা সেই অত্যাবশক কাজটির জন্য চাই মনোমত স্থান। এত আর ব্যাগ গোছালাম, ঘুরতে চললাম নয়। জীবনের খুব স্পেশাল মুহুর্ত গুলোকে চির স্মরণীয় করে তোলার জন্য স্পেশাল জায়েগা এসেনশিয়াল।
বিয়ে আর হনিমুন শব্দ দুটো কেমন যেন একটা আর একটার সঙ্গে মিলে মিশে থাকে। প্রথম জনের আঁচল ধরে পরের জন না এলে জীবনটা যেন ইলিশ ছাড়া বর্ষাকাল। ভীষণ পানসে। অতএব `হানিমুন যানা জরুরী হে`। তা সেই অত্যাবশক কাজটির জন্য চাই মনোমত স্থান। এত আর ব্যাগ গোছালাম, ঘুরতে চললাম নয়। জীবনের খুব স্পেশাল মুহুর্ত গুলোকে চির স্মরণীয় করে তোলার জন্য স্পেশাল জায়েগা এসেনশিয়াল। তবে অনেকতো হল দার্জিলিং, পুরী, নৈনিতাল, কাশ্মীর যাত্রা। একটু অন্যরকম মধুচাঁদ যাপনের হদিশ নয় রইল এবার। কেরালার খোলসে। বেকাল বিচে।
প্রত্যেক সমুদ্র তটের মধ্যেই নিজের একটা গল্প লুকিয়ে থাকে। বেকাল বিচও এই দল থেকে আলাদা নয়। এর রুপোলী বালি আর নোনা জলের বুকে নরম আঙ্গুল দিয়ে আঁচর কেটে দিয়ে যায় সমুদ্দুরের হাওয়া। বেকালের নিঝুম একলা প্রকৃতির ছোঁয়া পেয়ে পূরণ না হওয়া ইচ্ছে গুলো মনের মধ্যে নতুন করে বুড়বুড়ি কাটতে থাকে। `ঈশ্বরের আপন দেশ` কেরলের কাসারগদ থেকে ১৪ কিলোমিটার গেলেই পৌঁছে যাওয়া যায় বেকালের বুকে। বিচের বুকে বেকাল ফোর্টের উপস্থিতি অন্য মাত্রা যোগ করে এখানকার পরিবেশে।
বিচের বুকে ৩৫ একর জায়গা জুরে এই দুর্গটির অবস্থান। বহু পুরাতন এই দুর্গের গায়ে পরম ভালবাসায় বাসা বেঁধেছে সবজে শ্যাওলার দল। দুর্গের গোটা শরীর জুরে তাদের সপরিবার আঁকিবুঁকি। দিনের পর দিন ক্লান্তিহীনভাবে এর দেওয়ালে মাথা কোটে আরব সাগরের ঢেউ। কি জানি কিসের টানে বারবার ব্যর্থ হয়েও ঢেউগুলো ফিরে ফিরে আসে।
অগাস্ট থেকে মার্চ, এই সময়টা বেকাল ভ্রমণের আদর্শ সময়। অন্য সময় শান্ত থাকলেও বছরের এই সময়টা আরব সাগরের মাতাল ঢেউয়ের গুম গুম শব্দে খানখান হয়ে যায় রাতের নিস্তব্ধতা। বেকালের আনাচে কানাচে ইতিহাস ঘাঁটি গেরে বসে আছে। টিপু সুলতান মসজিদ, বেকাল ফোর্টের কামান, শীত ঘুমে যাওয়া প্রাচীন বন্দর সেই ইতিহাসেরই সাক্ষ্য বহন করে চলেছে। টিপু সুলতান মসজিদের আর্কিটেকচার মধ্য প্রাচ্যের কবিতার কথা মনে পড়িয়ে দেবেই। তবে ছোট্ট একটি সতর্ক বাণী। সুয্যি মামার প্রখর দৃষ্টি এখানে বেশ প্রবল। তাই দিনের বেলা বেড়াতে বেরলে সানস্ক্রিন লোশন আর ছাতা কে সঙ্গী করা অতি আবশ্যক। তবে ঘোরাঘুরির চ্যাপ্টারটা বিকেল-সন্ধ্যের জন্য জমিয়ে রাখাটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। কুসুম রঙা সূর্যের চুপচাপ শান্ত সমুদ্রের বুকে টুক করে ডুবে যাওয়া দেখতে দেখতে ভালোই কেটে যাবে মধুচন্দ্রিমার মধু মেশানো দিন রাত। দূরে ভেসে চলা একলা কোন জাহাজের সীমায় নতুন নতুন উড়ান পাবে ভালবাসা মেশানো মন খারাপের দল। তাই আর দেরি কেন সঙ্গী বা সঙ্গিনীকে সঙ্গে করে বেকালের বালুকাবেলায় পাড়ি জমালেই হয়।