লকডাউনের ফলে অনিচ্ছাকৃত মাতৃত্বের সম্মুখীন প্রায় ৭০ লক্ষ মহিলা! জানাল রাষ্ট্রপুঞ্জ
লকডাউনের ফলে তৃতীয় বিশ্বের বা মধ্য আয়ের দেশগুলির অন্তত ৪ কোটি ৭০ লক্ষ মহিলা দাম দিয়ে অত্যাধুনিক মানের গর্ভনিরোধক ওষুধ কিনতে পারছেন না।
নিজস্ব প্রতিবেদন: সারা বিশ্বে এই মুহূর্তে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩১ লক্ষ ৩৯ হাজার ৪৭১। এই ভাইরাসের প্রকোপে এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ২ লক্ষ ১৮ হাজার ০২৪ জনের। ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে লকডাউন চলছে আমেরিকা, ইতালি, স্পেন, ভারত-সহ সারা বিশ্বের ১৮৫টি দেশে।
এই পরিস্থিতিতে তৃতীয় বিশ্বের বা মধ্য আয়ের দেশগুলিতে বাড়ছে অনিচ্ছাকৃত মাতৃত্বের ঘটনা। বাজার থেকে অত্যাধুনিক মানের গর্ভনিরোধক ওষুধ দাম দিয়ে কিনতে পারছেন না অনেকেই। ফলে অনিচ্ছাকৃত মাতৃত্বের শিকার হতে চলেছেন অন্তত ৭০ লক্ষ মহিলা। এমনটাই জানিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জ।
রাষ্ট্রপুঞ্জের পপুলেশান ফান্ড ও তার সহযোগী সংস্থাগুলির (UNFPA) সমীক্ষায় সামনে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। ওই সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী, লকডাউনের ফলে তৃতীয় বিশ্বের বা মধ্য আয়ের দেশগুলির অন্তত ৪ কোটি ৭০ লক্ষ মহিলা দাম দিয়ে অত্যাধুনিক মানের গর্ভনিরোধক ওষুধ কিনতে পারছেন না। ওই সমীক্ষার রিপোর্টে জানানো হয়েছে, লকডাউনের আগে পর্যন্ত তৃতীয় বিশ্বের বা মধ্য আয়ের ১১৪টি দেশের প্রায় ৪৫ কোটি মহিলা অনিচ্ছাকৃত মাতৃত্বের থেকে বাঁচতে নিয়মিত ভাবে গর্ভনিরোধক ব্যবহার করতেন যা এখন অনেক ক্ষেত্রেই সম্ভব হচ্ছে না।
রাষ্ট্রপুঞ্জের পপুলেশান ফান্ডকে এই সমীক্ষায় সাহায্য করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং অ্যাভেনির হেলথ-এর বিশেষজ্ঞরা।
ইউএনএফপিএ (UNFPA)-এর এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর নাটালিয়া কানেম জানান, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ফলে বিশ্ব জুড়ে মারাত্মক প্রভাব পড়তে চলেছে তরুণী ও মহিলাদের উপর। পরিবারকে সুরক্ষিত রাখার ক্ষেত্রে মারাত্মক বিপদের মুখে পড়তে হচ্ছে মহিলাদের। কানেম আশঙ্কা প্রকাশ করে জানান, লকডাউন যদি ৬ মাসের জন্য প্রলম্বিত হয় তাহলে আরও ৩ কোটি ১০ লক্ষ গার্হস্থ্য হিংসার ঘটনা বাড়াবে বিশ্বের এই সব দেশগুলিতে। লকডাউন দীর্ঘ দিন ধরে চললে, তার যথেষ্টই প্রভাব পড়বে অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রেও। মহিলাদের উপর দীর্ঘায়ীত এই লকডাউনের কু-প্রভাব হবে সুদূরপ্রসারি। পরবর্তী দশকে আরও অন্তত ২০ লক্ষ মহিলার যৌনাঙ্গহানির আশঙ্কা রয়েছে। আগামী ১০ বছরে বাল্যবিবাহের ঘটনাও আরও অন্তত ১ কোটি ৩০ লক্ষ বাড়বে।
আরও পড়ুন: আমাজনের ‘রাক্ষুসে’ মাছ রহস্যজনক ভাবে বাড়ছে মণিপুরের একটি হ্রদে!
সব মিলিয়ে ইউএনএফপিএ (UNFPA)-এর এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর জানান, এই পরিস্থিতিতে মহিলাদের প্রজননক্ষমতা আর অধিকারকে যে কোনও ভাবেই নিরাপত্তা দিতে হবে। তার জন্য প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা অব্যাহত রাখা অত্যন্ত জরুরি।