টিভি, মোবাইলের নেশায় ডায়াবেটিস, সমীক্ষায় উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য
ব্যুরো: আপনার বাচ্চা কি ঘণ্টার পর ঘণ্টা টিভি দেখছে? সময় পেলেই কম্পিউটার ঘাঁটছে? আপনার মোবাইলে গেম খেলছে? সাবধান। ঘোর বিপদ। চোখের বারোটা তো বাজছেই। আপনার বাচ্চার ডায়াবেটিস পর্যন্ত হতে পারে।
ইট, বালি, পাথরের আড়ালে আটকা পড়ছে শিশুদের বর্ণিল শৈশব। কংক্রিটের আড়ালে হারিয়ে যাচ্ছে সবুজ। হঠাত্ উধাও খেলার মাঠ। কিন্তু বাড়ির একচিলতে মেঝেও কি ওদের খেলাঘর হয়ে উঠতে পারে না? বাড়ির ছাদ কিংবা কাছেপিঠে কোথাও পার্ক, যেখানে হাত পা ছুড়ে খেলা করতে পারবে শিশুরা। টিভি, মোবাইলের নেশায় আর বাঁধা পড়বে না শিশুমন। প্রয়োজন একটু মনোযোগ। সুন্দর ভবিষ্যত্ নির্মাণ হবে শিশুর। আর তা না হলেই বিপদ। ভয়ানক বিপদ। আমেরিকান অ্যাকাডেমি অফ পেডিয়াট্রিক্সের সাম্প্রতিক সমীক্ষা বলছে,
শিশুদের টিভি দেখা ও মোবাইল ঘাঁটার পিছনে ওত পেতে রয়েছে ডায়াবেটিসের মারাত্মক থাবা। দিনে ৩ ঘণ্টার বেশি টিভি, মোবাইলের স্ক্রিনে চোখ রাখলে বারোটা বাজবে শিশুস্বাস্থ্যের। নিউক্লিয়ার পরিবারের ফাঁদে দাদু-দিদারা এখন তফাতে। ফল ভুগছে শিশুরা। টিভি, মোবাইলের প্রতি আসক্তি বাড়ছে। হারিয়ে যাচ্ছে কল্পনাশক্তি। গবেষকদের দাবি,
অতিরিক্ত ওজন
সারাক্ষণ মোবাইল বা টিভি নিয়ে মেতে থাকার ফলে বাচ্চাদের মধ্যে খেলার ইচ্ছেটাই আস্তে আস্তে হারিয়ে যায়। ছোটবেলার অভ্যাস ধীরে ধীরে নেশায় পরিণত হয়। বাচ্চারা ক্লাস এইটে ওঠার মধ্যেই অতিরিক্ত ওজনের সমস্যায় ভোগে। তার সঙ্গে টিভি দেখার সময় স্ন্যাক্স ও চিনিযুক্ত ড্রিঙ্ক পান করা পছন্দ করে। ফলে অন্যান্য বাচ্চাদের তুলনায় এদের ৪৩ শতাংশ মোটা হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে।
কম ঘুম
ওজন বাড়ার পিছনে অন্যতম কারণ কম ঘুম। শোওয়ার পরেও হয় টিভিতে চোখ, না হয় হাতে মোবাইল। ঘুমের মধ্যেই তারই স্বপ্ন। ৭ ঘণ্টার কম ঘুমে ওজন বাড়ার প্রবণতা বাড়তে থাকে।
ডায়াবেটিস
খেলাধুলো কম। টিভি, মোবাইলেই চোখ বেশি। শারীরিক কসরত করছে না শরীর। ফলে, ইনসুলিন উত্পাদনে শিশুশরীরের ক্ষমতা কমছে। রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ বাড়ছে। টাইপ টু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ছে শিশুদের।
সমীক্ষায় উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। ৩৭ শতাংশ শিশু ১ ঘণ্টা বা তার কম টিভি ও মোবাইলের নেশায় আক্রান্ত। ১ থেকে ২ ঘণ্টা সময় ব্যয় করে ২৮ শতাংশ শিশু। ১৩ শতাংশ শিশু ২ থেকে ৩ ঘণ্টা টিভি দেখে বা মোবাইল ঘাঁটে। ১৮ শতাংশ শিশু ৩ ঘণ্টার বেশি।
যত দিন যাচ্ছে, টিভি ও মোবাইলের প্রতি শিশুদের নেশা বাড়ছে। শিশু হয়ে পড়ছে আত্মকেন্দ্রিক, অসহনশীল ও অসামাজিক। বুদ্ধির বিকাশে বাধা। মাথাব্যথা, চোখব্যথা, চোখ দিয়ে জল পড়ায় দৃষ্টিশক্তি হারানোর সম্ভাবনা বাড়ছে। এই বিপদ ছিলই। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে ডায়াবেটিসের আশঙ্কা। এখনই সাবধান না হলে শিরে সংক্রান্তি।