Basanti Puja: আর মাত্র সপ্তাহখানেক পরেই শুরু হতে চলেছে 'দুর্গাপুজো'! জেনে নিন এর দিনবদলের কারণ...
Basanti Puja: আর ক'দিন পরেই শুরু হতে চলেছে 'দুর্গাপুজো'! এ বাক্যটি পড়ে আপনারা কি চমকে উঠলেন? চমকে ওঠার কিছু নেই। 'দুর্গাপুজো'ই শুরু হতে চলেছে! ইতিহাস সাক্ষ্য দিচ্ছে, চৈত্রমাসের শুক্লপক্ষের বাসন্তী পুজোই (বাঙালির) প্রকৃত দুর্গাপুজো। যদিও একালে দুর্গাপুজো বলতে মানুষ আশ্বিন মাসের দুর্গাপুজোকেই বোঝেন।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: আর ক'দিন পরেই শুরু হতে চলেছে 'দুর্গাপুজো'! পাঠক, এই বাক্যটি পড়ে আপনারা কি একটু চমকে উঠলেন? না, চমকে ওঠার কিছু নেই। 'দুর্গাপুজো'ই শুরু হতে চলেছে বইকি! এ মাসের শেষসপ্তাহে এই পুজো। কিন্তু একে 'দুর্গাপুজো' বলা হচ্ছে বলে আপনার কিঞ্চিৎ আপত্তি রয়েছে, তাই তো? ইতিহাস কিন্তু সাক্ষ্য দিচ্ছে, চৈত্রমাসের শুক্লপক্ষের বাসন্তী পুজোই (বাঙালির) প্রকৃত দুর্গাপুজো (durga puja)। যদিও একালে দুর্গাপুজো বলতে মানুষ আশ্বিন শুক্লপক্ষের দুর্গাপুজোকেই বোঝেন।
আরও পড়ুন: Sankha Rituals: বাড়িতে শঙ্খ রয়েছে? শাঁখ রাখার সময় এই বিশেষ নিয়ম না মানলে সংসারে আসবে অশান্তি
অশুভ শক্তির বিনাশের জন্য সব কালেই মানুষ আদ্যাশক্তির আরাধনা করে। পুরাণ অনুযায়ী, সমাধি নামক বৈশ্যের সঙ্গে মিলে রাজ্য-হারানো রাজা সুরথ বসন্তকালে ঋষি মেধসের আশ্রমে মূর্তি গড়ে দেবী দুর্গার আরাধনা করেছিলেন। যা পরে বাসন্তী পুজো নামে প্রসিদ্ধি পায়। সেটাই চলতে থাকে। কিন্তু রামচন্দ্র (Ramachandra) সীতা-উদ্ধারকালে শরৎকালেই দুর্গার আরাধনা করলেন। এটি অকালবোধন হিসাবে বিখ্যাত হল। আর তার পর থেকে এই পুজোই চলতে থাকল।
আরও পড়ুন: Horoscope Today: প্রেমে শুভ বৃষর,পরিকল্পনা প্রয়োজন সিংহর, পড়ুন রাশিফল
বাল্মীকি (Valmiki) অকালবোধনের ঘটনাটি তাঁর রচনায় উল্লেখ করেছিলেন ঠিকই। তবে তার প্রভাব ততটা অনুভূত হয়নি। কিন্তু বাঙালি কবি কৃত্তিবাস ওঝা তাঁর বঙ্গ-রামায়ণে এই অংশের এমন আবেগমথিত বর্ণনা দিলেন যে, তা বরাবরের জন্য বাঙালিচিত্তে গেঁথে গেল। শরৎকালের দেবীপুজোই তখন বাঙালির কাছে 'দুর্গাপুজো' হয়ে দাঁড়াল। আর এইভাবেই ধীরে ধীরে এই পুজো তার নিজস্ব ধর্মীয়-সামাজিক-সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞান রচনা করে চলতে-চলতে গণমনে ক্রমশ চিরস্থায়ী হয়ে উঠল।
কিন্তু তবুও বাঙালি (the Bengalees) তার আদি দুর্গাপুজো, বসন্তকালীন এই দুর্গাপুজোকে কোনওদিনই পুরোপুরি ভুলে যায়নি। সে এখনও দুর্গাপুজোর আদিরূপ বাসন্তী পুজোর আয়োজন করে। যদিও এই পুজো কোনও দিনই বারোয়ারির আকার নেয়নি। যে সময়ে রমরম করে বাসন্তী পুজো হত তখনও তা আয়োজিত হত মূলত জমিদার নায়েব গোমস্তাগোষ্ঠীর লোকজনদের দ্বারাই। এই পুজো কোনও দিনই সাধারণের পুজো হয়ে ওঠেনি। এখনও এই পুজো পরিবারতন্ত্রেই আটকে, বারোয়ারি হয়নি। খোঁজ করলে দেখা যাবে, আজও এ শহরের (kolkata) কিছু ভুঁইফোঁড় উঠতি বড়লোকের বাড়ির হঠাৎ-শুরু-হওয়া বাসন্তী পুজো ছাড়া তা মূলত হয় বনেদি বড়লোকদের বাড়িতেই। পড়তি বড়লোকের বাড়িতে হলেও এই পুজোর সঙ্গে ধন-তন্ত্রের যোগই প্রবল।
কেন এক সময় রমরম করে বাসন্তী পুজো হত, তার একটা অন্য কারণও কেউ কেউ বলে থাকে। বসন্ত ঋতুর শেষে গ্রীষ্মের শুরুর এই সময়টায় সেকালে বসন্ত রোগের (pox) প্রকোপ ছিল। টিকাহীন চিকিৎসাহীন সেই অতীতে দুর্বার বসন্তের সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য মায়ের আরাধনা করে মায়ের কৃপা প্রার্থনা করা হত। রোগকে প্রশমিত করার জন্য়ও তাই বাসন্তীদেবীর পুজোর চল হয়েছিল বলে ধরে নেওয়া তাই যেতেই পারে।