মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, `আমি কিছু জানতাম না`

কলকাতায় এসে এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে গেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সচিন পাইলটও। ফলে, মুখ্যমন্ত্রীর `জানতাম না` তত্ত্ব ধোপে টিকছে না বলেই অভিযোগ ওয়াকিবহাল মহলের। সারদা গোষ্ঠীর বেআইনি কারবার সম্পর্কে আগে ধারণা ছিল না তাঁর। এমনই দাবি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কিন্তু, ২০১০এই দশেই সারদার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে সেবিকে চিঠি দিয়েছিল বামফ্রন্ট সরকার। রাজ্যে চিটফান্ড সংস্থার বাড়বাড়ন্ত নিয়ে একাধিকবার সরব হয়েছে তারা।

Updated By: Apr 26, 2013, 05:41 PM IST

কলকাতায় এসে এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে গেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সচিন পাইলটও। ফলে, মুখ্যমন্ত্রীর `জানতাম না` তত্ত্ব ধোপে টিকছে না বলেই অভিযোগ ওয়াকিবহাল মহলের। সারদা গোষ্ঠীর বেআইনি কারবার সম্পর্কে আগে ধারণা ছিল না তাঁর। এমনই দাবি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কিন্তু, ২০১০এই দশেই সারদার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে সেবিকে চিঠি দিয়েছিল বামফ্রন্ট সরকার। রাজ্যে চিটফান্ড সংস্থার বাড়বাড়ন্ত নিয়ে একাধিকবার সরব হয়েছে তারা।
সারদা গোষ্ঠীর প্রতারণার শিকার হয়ে সর্বস্বান্ত সাধারণ মানুষ। গত শনিবার, মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির দরজায় পৌঁছে গেল তাঁদের ক্ষোভ। দেখতে দেখতে ক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়ল রাজ্যজুড়ে। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী বললেন, এ সব তাঁর আগে জানা ছিল না। সত্যিই কি তাই? ১৫ এপ্রিলের আগে সারদা গোষ্ঠীর কুকীর্তির কথা জানত না সরকার? বাস্তব কিন্তু অন্য কথা বলছে। ২০১০এই সারদা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সেবির কাছে অভিযোগ জানায় ততকালীন বামফ্রন্ট সরকার।
২০১০-এর ২৩ এপ্রিল পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ডিরেক্টর ইকনমিক অফেন্সেস ইনভেস্টিগেশন সেলের কাছ থেকে চিঠি পায় সেবি। চিঠিতে জানানো হয়, পশ্চিমবঙ্গের গ্রামাঞ্চলে মানুষের কাছ থেকে টাকা তুলছে সারদা রিয়েলটি ইন্ডিয়া লিমিটেড। চিঠির সঙ্গে দেওয়া হয়েছিল সংস্থার ব্রোশিওরও। যাতে মানুষের কাছ থেকে তারা কী ভাবে টাকা তুলছে তার বিবরণ দেওয়া ছিল, যা সেবি আইনকে লঙ্ঘন করে।
তিন বছর আগে বামফ্রন্ট সরকারের দেওয়া চিঠির ভিত্তিতে সারদার বিরুদ্ধে তদন্তও শুরু করে সেবি। ২০১১-র ডিসেম্বরে, তাদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে সারদা রিয়েলটি ইন্ডিয়া লিমিটেডকে সেবি শোকজ নোটিশ দেয়।
২০১১-য় রাজ্যে সরকার বদল হয়েছে। কিন্তু, আগের সরকারের তোলা অভিযোগের কথা কি জানতেই পারেনি নতুন সরকার? সারদার বিরুদ্ধে সেবি যে খোঁজখবর নিচ্ছে সে খবর পৌঁছয়নি মহাকরণে? শুনতে যতই অবাস্তব লাগুক মুখ্যমন্ত্রীর দাবি কিন্তু এমনই। বাম আমলে বিধানসভায় তৃণমূল বিধায়কদের উপস্থিতিতে সর্বসম্মতভাবে চিটফান্ড দমনে বিল পাশ হয়েছে। রাজ্যে চিটফান্ডের বাড়বাড়ন্ত নিয়ে বামেরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে দরবার করেছেন। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর চিটফান্ড নিয়ে মুলতুবি প্রস্তাব দাবি করে বিধানসভায় নিগৃহীত হয়েছেন বাম বিধায়কেরা। এতকিছুর পরও মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, তিনি জানতেন না কিছুই।
আর্থিক অপরাধ দমনে বাম আমলে রাজ্যে গঠিত হয়েছিল ইকনমিক অফেন্সেস ইনভেস্টিগেশন সেল। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর গত দুবছর ধরে সেলটি কার্যত নিষ্ক্রিয় হয়ে রয়েছে। সারদা গোষ্ঠীর কাজকর্ম নিয়ে তারাই আবার তিন বছর আগে চিঠি দিয়েছিল সেবিকে। ফলে, সারদার বেআইনি কারবার; সম্পর্কে আগে জানা ছিল না - এই ধরনের মন্তব্যে সরকারের দায় এড়ানোর চেষ্টাই স্পষ্ট বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

.