ব্রেন বের করেননি, কীভাবে মায়ের ভিসেরা করেন? শুভব্রতর মনের তল পেতে 'ধীরে চলো' নীতি

হাসপাতাল থেকে বার বারই বাড়ি ফিরতে চাইছেন শুভব্রত। এমনকি সকল রোগীদের সঙ্গে শৌচাগার ব্যবহারও করতে চাইছেন না তিনি।

Updated By: Apr 7, 2018, 06:04 PM IST
ব্রেন বের করেননি, কীভাবে মায়ের ভিসেরা করেন? শুভব্রতর মনের তল পেতে 'ধীরে চলো' নীতি

নিজস্ব প্রতিবেদন : রবিনসন স্ট্রিটের পার্থ দে-র মত একেবারেই নন বেহালার  শুভব্রত মজুমদার। প্যাভলভের চিকিত্সকেরা তাঁর সঙ্গে কথা বলে রীতিমতো হতবাক। দেহ সংরক্ষণ নিয়ে তাঁর জ্ঞান অবাক করেছে চিকিত্সকদের। তবে তাঁর মনের গভীরে পৌছতে 'ধীরে চলো' নীতি নিতে চান ডাক্তাররা।  

বেহালার শুভব্রত মজুমদার লেদার টেকনোলজি নিয়ে পড়াশোনা করেছেন। অথচ তাঁর অগাধ জ্ঞান ক্রায়ো-প্রিজারভেশন এবং মাইক্রো বায়োলজিতে। শনিবার সকালে প্রায় দেড় ঘণ্টা শুভব্রতর সঙ্গে কথা বলেন চিকিত্সকেরা। কীভাবে নিজের বিষয় না হওয়া সত্ত্বেও দেহ সংরক্ষণ নিয়ে পড়াশোনা করে তিনি জ্ঞান অর্জন করেন, চিকিত্সকদের সে বিষয়ে জানান শুভব্রত।

পাশাপাশি তিনি চিকিত্সকদের আরও জানান, ভিসেরা করে পচনশীল দেহাংশ বের করে নিলেও তিনি ব্রেন বের করেননি। কারণ ব্রেন বের করলে তাঁর মায়ের মলিউকিলার ডেথ হয়ে যেত। যেভাবে ভিসেরা অর্থাত্‍ বুক থেকে নাভি পর্যন্ত চিরে ভিতরের পচনশীল দেহাংশ বের করা হয়েছে, তা দেখে ডাক্তাররা বলছেন, খুব পাকা হাত না হলে এত সুন্দর ও পরিপাটি কাজ কেউ করতে পারে না।

আরও পড়ুন, ফ্রিজারে দেহ, 'মাকে বাঁচিয়েই হত যুগান্তকারী আবিষ্কার', বেহালায় ছেলের 'হাড়হিম' কীর্তি!

প্রথম দিকে মনে করা হচ্ছিল, শুভব্রত বোধহয় পার্থ দে-র মত। কিন্তু চিকিত্সকেরা জানিয়েছেন, পার্থ দে-র মত একদমই নন শুভব্রত। কারণ পার্থ দে প্রথমে কোনও রকম সহযোগিতাই করেননি। শুভব্রত প্রথম থেকেই সাহায্য করছেন। মূলত বাংলায় কথা বললেও, উত্তেজিত হয়ে গেলে  মার্কিন অ্যাকসেন্টে ইংরেজি বলছেন তিনি।

শুভব্রত মজুমদারকে পর্যবেক্ষণে রাখতে ৫ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করেছে প্যাভলভ কর্তৃপক্ষ। চিকিত্সকেরা বলছেন, শুভব্রতকে বুঝতে অনন্তপক্ষে আরও ৭ দিন সময় লাগবে। এরমধ্যেই শুভব্রতকে আরও ভালো করে বুঝতে তাঁর বাড়ি যেতে চান ডাক্তাররা। কোনও তাড়াহুড়ো নয়। শুভব্রত'র মনের গভীরে পৌঁছতে ধীরে ধীরে পা ফেলতে চাইছেন চিকিত্সকেরা। ৩ সপ্তাহের আগে শুভব্রত সম্পর্কে পুলিসকে কোনও রকম রিপোর্ট দেওয়া সম্ভব নয় বলেও জানিয়েছেন তাঁরা।

আরও পড়ুন, শুভব্রত স্কিতজোফ্রেনিক, মনে মনে কথা বলেন রুশ-জার্মান কনসুলেটদের সঙ্গে

এদিকে, প্যাভলভে শুক্রবার রাতে মাত্র দুটি বিস্কুট খেয়েছিলেন শুভব্রত। শনিবার সকালে খেয়েছেন দুধ, রুটি এবং ডিম। বার বারই বাড়ি ফিরতে চাইছেন শুভব্রত। বলছেন, বাবার সঙ্গে বাড়ি ফিরবেন তিনি। এমনকি সকল রোগীদের সঙ্গে শৌচাগার ব্যবহারও করতে চাইছেন না।

.