পার্ক স্ট্রিট কাণ্ড: 'ক্লোজ' করা হল ২ পুলিস অফিসারকে

পার্ক স্ট্রিট ধর্ষণকাণ্ডে মহিলার সঙ্গে দুর্বব্যহারের অভিযোগে ২ পুলিস অফিসারকে 'ক্লোজ' করা হল। পার্ক স্ট্রিট থানায় অভিযোগকারী মহিলার সঙ্গে ওই ২ অফিসার দুর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ। নগরপালের নির্দেশে সেই অভিযোগের তদন্ত করে প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দেনযুগ্ম কমিশনার-ট্রাফিক। তারপরই ওই ২ অফিসারকে ক্লোজ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

Updated By: Feb 18, 2012, 07:19 PM IST

পার্ক স্ট্রিট ধর্ষণকাণ্ডে মহিলার সঙ্গে দুর্বব্যহারের অভিযোগে ২ পুলিস অফিসারকে 'ক্লোজ' করা হল। পার্ক স্ট্রিট থানায় অভিযোগকারী মহিলার সঙ্গে ওই ২ অফিসার দুর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ। নগরপালের নির্দেশে সেই অভিযোগের তদন্ত করে প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দেনযুগ্ম কমিশনার-ট্রাফিক। তারপরই ওই ২ অফিসারকে ক্লোজ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
পার্ক স্ট্রিট ধর্ষণকাণ্ডে ধৃতদের ১৪ দিনের পুলিসি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। রবিবার ৩ অভিযুক্ত, রুমান খান ওরফে টুসি, সুমিত বাজাজ ও নাসিরকে ব্যাঙ্কশাল কোর্টে তোলা হয়। আদালত তাদের ৩ মার্চ পর্যন্ত পুলিসি হেফাজতের নির্দেশ দেয়। অপরদিকে, এই ধর্ষণ কাণ্ডে মূল অভিযুক্তের সন্ধান পেয়েছে পুলিস। গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে গাড়ির মধ্যে যে ব্যক্তি মহিলার ওপর শারীরিক অত্যাচার চালিয়েছিল, তার নাম কাদির খান। সে ধৃত নাসিরের ভাই। এই কাদির খানই শরাফতের নাম ভাঁড়িয়ে মহিলার সঙ্গে আলাপ জমিয়েছিল। ১৬ ও ১৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কোনও একটা দিন ভিন রাজ্যে পালিয়ে যায় কাদির। সেইমতো কলকাতা পুলিসের গোয়েন্দাদের একটি দল কাদিরের সন্ধানে ভিন রাজ্যে রওনা হয়েছে।
এক মহিলার দেওয়া সূত্র ধরেই পার্কস্ট্রিট কাণ্ডের কিনারা করেছে পুলিস। ঘটনার দিন নাইটক্লাবে উপস্থিত ছিলেন ওই মহিলা। ওই মহিলাই প্রথম পুলিসকে জানান, ধর্ষণের অভিযোগ যিনি এনেছেন, তিনি সেদিন নাইটক্লাবেই ছিলেন। তিনি ৪-৫ জনের সঙ্গে কথাও বলছিলেন। এরপর মহিলাকে শরাফত ও আজহারের ছবি দেখায় পুলিস। তখন মহিলা জানান, ওই ২ জন নয়, সেদিন অন্য আরও ৪-৫ জনের সঙ্গে কথা বলছিলেন আক্রান্ত মহিলা। এরপরই  পুলিসের সন্দেহ দৃঢ় হয়, শরাফত ও আজহারের নাম ভাঁড়িয়ে অন্য কয়েকজন যুবক মহিলাকে ধর্ষণ করেছে। সেই সূত্র ধরে তদন্ত চালিয়েই নাসির, কাদের, সুমিত বাজাজদের হদিশ পায় পুলিস।
কাদিরকে ধরতে পারলেই পার্ক স্ট্রিট রহস্যের জাল গোটানো যাবে বলে কার্যত নিশ্চিত গোয়েন্দারা। কারণ ঘটনার পর মহিলা অভিযোগে জানিয়েছিলেন, শরাফত নামের ব্যক্তিই তাঁর ওপর শারীরিক নির্যাতন চালিয়েছিল। নাসিরের ভাই কাদির খানের চামড়া রফতানির ব্যবসা রয়েছে। অন্যদিকে যে গাড়িতে মহিলাকে নিগ্রহ করা হয়েছিল, সেই গাড়ি থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা। শনিবারই এই ৩ জনকে গ্রেফতার করে পুলিস। নাম ভাঁড়িয়ে গত ৫ ফেব্রুয়ারি নৈশক্লাবে মহিলার সঙ্গে আলাপ করে রুমান খানই। গাড়িতে ওঠার পর মহিলাকে মারধর এবং ধর্ষণ করা হয় বলে পুলিসকে জানিয়েছে ধৃতরা। মহিলার অভিযোগ সঠিক বলেই জানিয়েছেন যুগ্ম কমিশনার দময়ন্তী সেন। পাশাপাশি, শরাফাত আলি এবং আজহার আলি পুরোপুরি নির্দোষ বলেও পুলিসের তরফে জানানো হয়েছে।

এর আগে, অভিযোগকারী মহিলা জানিয়েছিলেন নৈশক্লাবে লাভি গিদওয়ানি, শরাফত আলি এবং আজহার আলির সঙ্গে তাঁর পরিচয়। অথচ তদন্ত শুরু করে পুলিস জানতে পারে লাভি গিদওয়ানি দীর্ঘদিন বিদেশে। শরাফাত এবং আজহার আলির মোবাইল টাওয়ার অনুযায়ী, ঘটনাস্থলে তাঁরা উপস্থিত ছিলেন না। এরপরই উঠতে থাকে একের পর এক সম্ভাবনা। তাহলে কী নাম ভাঁড়িযে মহিলার সঙ্গে কেউ পরিচয় করল? এই পথেই এগোতে থাকে তদন্ত। পার্কিংয়ের রেকর্ড দেখে গাড়ির নম্বরও বের করে ফেলে পুলিস। জানা যায়, গাড়িটি গড়িয়াহাটের বাসিন্দা সুমিত বাজাজের। উপস্থিত আরও একজনকে চিহ্নিত করেন গোয়েন্দারা। নিশাদ আলি ওরফে টুসি রুমন খান। দেখা যায়, বেনিয়াপুকুরের বাসিন্দা রুমন এবং সুমিত কলকাতা ছাড়ার পরিকল্পনা করে ফেলেছে। গোয়েন্দাদের ধৃতরা স্বীকার করেছে, লাভি গিদওয়ানি, শারাফত আলি এবং আজহার আলিকে আগে থেকেই চিনত তারা। সুমিত বাজাজের গাড়িটি আটক করেছে পুলিস।
পার্ক স্ট্রিট ধর্ষণ কাণ্ডের তদন্তের শুরুতেই ধর্ষিতা মহিলার যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছিলেন নগরপাল আর কে পচনন্দা। এমনকী এই ঘটনাকে সংবাদমাধ্যমের চক্রান্ত বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু গোয়েন্দারা জানান, সেদিন কিছু একটা ঘটেছে।

.