Nusrat Jahan: 'ডাইভারশন অফ ফান্ড' ফিনান্সিয়াল ক্রাইম! দায় এড়াতে পারেন না নুসরত...
Nusrat Jahan: আমানতকারীদের টাকায় ফ্ল্যাট না বানিয়ে নুসরতকে কেন লোন? নুসরত-ই বা কেন ব্যাংক থেকে লোন না নিয়ে কোম্পানি থেকে লোন নিলেন? মিডিয়া এই প্রশ্ন তোলাতেই অপ্রিয়!
সঞ্জয় ভদ্র: দুর্নীতি ইস্যুতে প্রশ্নবাণে বেসামাল নুসরত! মিডিয়াকে দুষে মাত্র ৭ মিনিটেই ছাড়েন প্রেস ক্লাব। দুর্নীতি প্রশ্নে সদুত্তর দিতে না পেরে তোপ দাগেন মিডিয়া ট্রায়ালের। বলেন, 'হাফ বেকড স্টোরি'র কথা। কিন্তু, 'হাফ বেকড স্টোরি' অভিযোগের কোনও জায়গা নেই। কারণ, তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি কোনও উত্তর দেননি। তৃণমূল সাংসদ তথা অভিনেত্রী নুসরত জাহান দাবি করেছেন, 'কোম্পানি কীভাবে চলত, কী করত, তার আমি কিছুই জানি না।' কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, যখন এই অপরাধটা হয়েছে, তখন ২০১৪ সালে তিনি কোম্পানির একজন অন্যতম ডিরেক্টর। ২০১৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত তিনি ওই কোম্পানির একজন অন্যতম ডিরেক্টর ছিলেন। তাই কীভাবে এই ঘটনার দায় এড়াতে পারেন তিনি? এমনকি একজন সাংসদ হিসেবে, একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবেও তিনি দায় এড়াতে পারে না।
নুসরত ছিলেন মেসার্স ৭ সেন্স ইনফাস্ট ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির একজন ডিরেক্টর। এখন কোম্পানির কোনও অ্যাক্টে যদি কোনও দায় থাকে, তবে সেই দায় বর্তায় ওই কোম্পানির প্রত্যেক ডিরেক্টরের উপর। যে কোনও প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির বোর্ড মিটিংয়ে তার পলিসি ডিসিশন হয়। এখানে অন্যতম বোর্ড মেম্বার ছিলেন নুসরত। ফলে কোনওভাবেই তিনি দায় এড়াতে পারেন না। ২০১৪ থেকে ২০২৭ সাল, তিনি কোম্পানির ডিরেক্টর ছিলেন। এই সময়কালের মধ্যে কোম্পানি প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, আমানতকারীদের কাছ থেকে টাকা তুলে, সেই টাকার বিনিময়ে ফ্ল্যাট দিতে প্রতিশ্রুতি পালনে ব্যর্থ হয়। ৩ বছরের মধ্যে ফ্ল্যাট দেওয়ার যে প্রতিশ্রুতি কোম্পানি দিয়েছিল, ১০ বছর হতে চললেও সেই ফ্ল্যাট হাতে পাননি আমানতকারীরা। তাই যত-ই নুসরত জাহান আজ কোম্পানি থেকে পদত্যাগের প্রসঙ্গকে নিজের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে চান, এর সম্পূর্ণ দায় তিনি এড়াতে পারেন না। দায়ের একটা অংশ তাঁকে নিতেও হবে।
পাশাপাশি, ফ্ল্যাট বানিয়ে দেওয়ার নামে আমানতকারীদের কাছ থেকে টাকা তুলে, সেই কাজ না করে অন্য কাউকে লোন দেওয়াটা 'ডাইভারশন অফ ফান্ডে'র মধ্যে পড়ে। আমানতকারীদের কাছ থেকে তোলা টাকা থেকে এভাবে লোন দেওয়া- অর্থাৎ এই 'ডাইফারশন অফ ফান্ড' ফিনান্সিয়াল ক্রাইমের অন্যতম একটা অংশ। যে অভিযোগ উঠেছে, যে কাগজপত্র সামনে এসেছে, তাতে সেই অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, আমানতকারীদের টাকায় ফ্ল্যাট না বানিয়ে নুসরতকে কেন লোন? নুসরত-ই বা কেন ব্যাংক থেকে লোন না নিয়ে কোম্পানি থেকে লোন নিলেন? আর মিডিয়া এই প্রশ্ন তোলাতেই মিডিয়া এখন 'খারাপ' নুসরতের চোখে! নুসরত টেনে আনলেন, মিডিয়া ট্রায়ালের প্রসঙ্গ! প্রোমোশনে মিডিয়া প্রিয়, আর প্রশ্ন তুললেই মিডিয়া অপ্রিয়?
প্রসঙ্গত, নুসরত জাহানের সাংবাদিক বৈঠকের পরই পালটা সাংবাদিক বৈঠক ডেকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা। শঙ্কুদেব তোপ দাগেন, একাধিক প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গিয়েছেন নুসরত। ডিরেক্টর হয়ে কেন কোম্পানি থেকে লোন? দাবি করেন, ঋণ নিয়ে মিথ্যা তথ্য দিচ্ছেন নুসরত। নুসরত জাহান ১ কোটি ৯৮ লাখ টাকা নিয়েছেন ওই কোম্পানি থেকে। দফায় দফায় টাকা নিয়েছেন নুসরত। প্রতারণার টাকা সাইফন হয়েছে। এই দুর্নীতির মাস্টারমাইন্ড নুসরত। প্রতারণার নেপথ্যে বড় মাথা আছে। শঙ্কুদেব প্রশ্ন তুলেছেন, আদৌ কি ওই কোম্পানির বোর্ড অফ ডিরেক্টর বা অন্য কাউকে লোন দেওয়ার এক্তিয়ার রয়েছে? অর্থাৎ রেজিস্টার অফ কোম্পানিতে তাঁরা যখন রেজিস্ট্রেশন করেছে, সেইসময় এমওএম-এ এধরনের প্রাথমিক কোনও ক্লজ আছে? যেখানে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, না নেই।
আরও পড়ুন, Nusrat Jahan: দুর্নীতি ইস্যুতে প্রশ্নবাণে বেসামাল নুসরত! মিডিয়াকে দুষে ৭ মিনিটেই ছাড়লেন প্রেস ক্লাব
Nusrat Jahan: নুসরত জাহানের বিরুদ্ধে ২৪ কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ! ইডির দ্বারস্থ বিজেপি