পশ্চিমবঙ্গে লোকসভা নির্বাচনে পদ্ম ফোটাতে মুকুলেই ভরসা অমিতের
লোকসভা নির্বাচন কমিটির প্রধান করা হল প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুকুল রায়কে।
অঞ্জন রায়
পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত ভোটের পর লোকসভা ভোটেও মুকুল রায়ের উপরে আস্থা রাখলেন অমিত শাহ। রাজ্যে লোকসভা ভোটের দায়িত্ব মুকুলের উপরে সঁপে দিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। লোকসভা ভোটে বাংলায় বিজেপির ঘুঁটি সাজাবেন রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ।
কেন্দ্রীয় বিজেপির তরফে বিবৃতি জারি করে জানানো হয়েছে, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুকুল রায়কে পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনী সমিতির সংযোজক পদে নিযুক্ত করলেন সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। পঞ্চায়েত ভোটেও বিজেপির 'অধিনায়ক' ছিলেন মুকুল রায়। আর পঞ্চায়েতে বাম-কংগ্রেসকে পিছনে ফেলে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে গেরুয়া শিবির। শোনা যাচ্ছিল, মুকুলের পারফরম্যান্সে আপাতভাবে খুশি অমিত শাহ। সেই ভরসার ফলই পেলেন মুকুল রায়। এবার লোকসভা ভোটে বাংলায় গেরুয়া শিবিরের নেতৃত্ব দেবেন তৃণমূলের প্রাক্তন চাণক্য।
গতবছর নভেম্বরে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন মুকুল রায়। তারপর থেকে ক্রমেই নতুন দলে তাঁর উচ্চতা বেড়েছে। মুকুল রায়ের মতো অভিজ্ঞ রাজনীতিক বঙ্গ বিজেপিতে নেই। আর সে কারণে মুকুলকে দলে এনেছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। যদিও মুকুল কোনও পদ পাননি, তা সত্ত্বেও ঘটনা পরম্পরা বলে দিচ্ছে, পদে না থেকেও রাজ্যে পদ্মশিবিরের নির্বাচনী রণকৌশলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চলেছেন মুকুল রায়। শেষপর্যন্ত সেটাই হল। দিলীপ ঘোষদের কার্যত অপাংক্তেয় করে মুকুলই হলেন পদ্মশিবিরের লোকসভা ভোটের কাণ্ডারি।
সূত্রের খবর, রাজ্য নেতাদের কাজকর্মে এমনিতেই অসন্তুষ্ট দিল্লি বিজেপি নেতৃত্ব। অতিসম্প্রতি কৈলাস বিজয়বর্গীয় উষ্মাপ্রকাশ করেছিলেন, মমতা বিরোধীদের হাতে ইস্যু তুলে দিলেও তার ফায়দা তুলতে পারেননি বিজেপি নেতারা। বড়সড় আন্দোলন গড়ে তুলতেও ব্যর্থ হয়েছেন। এরপর এলপিজি দুর্নীতি, ধর্ষণের অভিযোগের মতো বিষয়গুলি নিয়ে যারপরনাই রুষ্ট হন অমিত শাহ। ২৮ সেপ্টেম্বর বৈঠকও করেন দিল্লিতে। রাজনৈতিক মহলের মতে, নানা কারণে বঙ্গ বিজেপি নেতাদের উপরে আস্থা রাখতে পারছে না দিল্লি। আরও একটা বিষয়, মুকুল রায়ের মতো অভিজ্ঞতাও কারও নেই। বাংলায় কীভাবে ভোট করাতে হয়, তা ভালমতো জানেন মুকুল রায়। এর পাশাপাশি বাংলায় সামাজিক বিন্যাস তাঁর হাতের তালুর মতো চেনা।
তাছাড়া আরও একটি কারণ রয়েছে, শোনা যাচ্ছে, লোকসভা ভোটে দিলীপ ঘোষ, রাহুল সিনহারা প্রার্থী হতে চলেছেন। তাঁদের পক্ষে নিজের কেন্দ্র ছেড়ে ৪২টি কেন্দ্রে মনোনিবেশ করা শক্ত। সুতরাং সেটাও একটা বড়।
আরও পড়ুন- মধ্যপ্রদেশ-রাজস্থানে জোর ধাক্কা কংগ্রেসের, জোটে থাকবেন না মায়াবতী