বৈশাখীর উপর আঘাত আসার আগে, সে আঘাত যেন আমার উপর আসে: শোভন
অধ্যাপিকা বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বন্ধুত্ব- বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বারবার বিতর্কের সম্মুখীন শোভন। কিন্তু কে এই বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়? এসব বিষয় নিয়েই ২৪ ঘণ্টাকে একান্ত খোলামেলা সাক্ষাত্কার দিলেন কলকাতার মহানাগরিক।
নিজস্ব প্রতিবেদন: তিনি কলকাতার মহানাগরিক। তিনি রাজ্যের দমকল মন্ত্রী। তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাসভাপতি। তিনি শোভন চট্টোপাধ্যায়। ২০১০ সালে তৃণমূল কলকাতা পুরসভা জেতার পর মমতা বলেছিলেন, কোনও নেতা নয়, মেয়র করা হবে একজন কর্মীকে। এরপর শহরের মহানাগরিকের সিংহাসনে বসেন 'কর্মী' কানন। এরপর বিগত কয়েক বছর রাজনৈতিক কেরিয়ারে চরম উত্থান ঘটলেও সম্প্রতি বেশ খানিকটা ব্যাকফুটে শোভন চট্টোপাধ্যায়। ২৪ বছরের দাম্পত্য ভেঙে বিবাহ বিচ্ছেদ, ব্যক্তিগত নিরাপত্তা কমে যাওয়া, দলে ক্ষমতা হ্রাসের গুঞ্জন এবং অধ্যাপিকা বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বন্ধুত্ব- বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বারবার বিতর্কের সম্মুখীন শোভন। কিন্তু কে এই বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়? এসব বিষয় নিয়েই ২৪ ঘণ্টাকে একান্ত খোলামেলা সাক্ষাত্কার দিলেন কলকাতার মহানাগরিক।
এদিন শোভন জানান, বৈশাখী তাঁর অনেক দিনের পারিবারিক বন্ধু। তিনি এখন ভালো সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন না। বৈশাখীকে এ সময় তিনি পাশে পেয়েছেন। বৈশাখী না থাকলে তিনি অস্তিত্ব সঙ্কটে ভুগতেন বলেও সাফ জানিয়েছেন শোভন। আর এরপরই শোভন বলেন, "বৈশাখীর উপর কোনও আঘাত আসার আগে, সে আঘাত
আরও পড়ুন: বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন? কী বললেন শোভন চট্টোপাধ্যায়
বেহালা পূর্বের বিধায়ক জানান, নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কখনই তাঁকে বৈশাখীর ব্যাপারে কোনও প্রশ্ন করেননি। বস্তুত, বৈশাখীর প্রশ্ন রাজনৈতিক ক্ষেত্রে কেন আসছে, সেটা নিয়েই মর্মাহত শোভন। এদিন সরাসরি শোভন অভিযোগ করেন, ব্যাক্তিগত স্বার্থসিদ্ধি করতেই অনেকে বৈশাখীর সঙ্গে তাঁর নাম জড়িয়ে রাজনৈতিক জীবনকে বিপর্যস্ত করতে চাইছে।
কিন্তু বৈশাখীর উপর কোন আঘাতের কথা বলছেন শোভন?
আরও পড়ুন: ‘ও চাইলে ফিরে আসুক, আমি অপেক্ষা করতে রাজি’
২৪ ঘণ্টাকে এদিন শোভন বলেন, "ওয়েবকুপা থেকে বৈশাখীর অপসরণ অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। আমার পাশে দাঁড়ানোর জন্য যদি ওঁর উপর কোনও আঘাত আসে, আমি কখনই তা মেনে নিতে পারব না।"
এরপর তাঁর 'প্রাক্তন' স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ উঠতেই, আরও বিস্ফোরক দাবি করেন শোভন। কলকাতার মেয়র জানান, শুধু তিনিই নয় তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী রত্নাও বৈশাখীর থেকে সাহায্য নিয়েছেন। রত্না ও বৈশাখীর সম্পর্ক যে একসময় বেশ ভালো ছিল, এদিন সে কথাও জানান শোভন। শোভন আরও বলেন, "প্রয়োজনে অনেকেই বৈশাখীর কাছ থেকে সাহায্য নিয়েছেন, আজ ভুলে গিয়েছেন। আমার পক্ষে বৈশাখীকে ভোলা সম্ভব নয়।"
কিন্তু স্ত্রী রত্নার সঙ্গে কি তাঁর সম্পর্ক আর জোড়া লাগবে?
এমন সম্ভবনায় জল ঢেলে দিয়ে শোভন জানান, আর জোড়া লাগবে না। তিনি বলেন, "বিশ্বাসঘাতকতার সম্মুখীন হয়েছি। না হলে ২৪ বছরের বিবাহিত জীবনে ইতি টানার চেষ্টা করতাম না। বৈবাহিক সম্পর্ক জোড়া লাগার কোনও জায়গা নেই। ও বাড়িতে শুধু আমার মৃতদেহই যাবে।"
আরও পড়ুন: ‘ও বাড়ি শোভনেরই নয়’, চাঞ্চল্যকর দাবি রত্নার
শোভনের রাজনৈতিক ভবিষ্যত কি তলানিতে?
মেয়র পদে থাকা নিয়ে যে গুঞ্জন তৈরি হয়েছিল এদিন তাতেও জল ঢাললেন তিনি। বলেন, "মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে গতকালই আমার কথা হয়েছে। তিনি আমাকে কাজ করে যেতে বলেছেন। ইস্তফা দেওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই।" নেত্রী যে তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কোনও 'আলোকপাত' করেননি, তাও স্পষ্ট করে দেন শোভন।
এতদিন শোভন-বৈশাখীর সম্পর্ক নিয়ে যে জল্পনা চলছিল, এদিন বৈশাখীকে 'দীর্ঘদিনের পারিবারিক বন্ধু' বলে মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বিষয়টি খানিক স্পষ্ট করে দিলেন।