গত বছর বিধানসভা ভোটে বিপুল জয়ের পর সরকার গঠন করেই একের পর এক কমিশন গড়ে রীতিমতো শোরগোল ফেলে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার সেই কমিশনের বিরুদ্ধেই কেন আক্রামণাত্মক মুখ্যমন্ত্রী? মানবাধিকার কমিশনের রায়ই কী তাঁর ক্ষোভের কারণ?
মঙ্গলবার রাজ্য বিধানসভার ৭৫ বছর পূর্তি উত্সবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হঠাত্ই কমিশনের বিরুদ্ধে তোপ দাগতে শুরু করেন। তাঁর অভিযোগ, সরকারি অর্থ খরচ ও গুরুত্ব প্রশাসনিক আধিকারিকদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা ছাড়া তদন্ত কমিশনগুলি আর কিছুই করে না। অথচ পরিসংখ্যান বলছে তৃণমূল জমানায় ১৪ মাসে একের পর এক কমিশন গঠন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একনজরে দেখে নেওয়া যাক সেই তালিকা।
১৯৭০ সালের সাঁইবাড়িতে হত্যাকাণ্ড। নতুন করে বিচার বিভাগীয় কমিশনের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর।
১৯৭১-এর কাশীপুর বরানগর গণহত্যা। ফের তদন্ত কমিশনের নির্দেশ।
১৯৭৯-র মরিচঝাঁপিতে পুলিসি নির্যাতনের ঘটনা। তদন্ত কমিশন গঠন করেছে বর্তমান রাজ্য সরকার।
১৯৮২ সালের ৩০ এপ্রিল। বিজন সেতুর ওপর পুড়িয়ে হত্যা ১৭ জন আনন্দমার্গীকে। কমিশন গঠন করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই যুব কংগ্রেসের মহাকরম অভিযানে পুলিসি গুলিতে ১৩ জনের মৃত্যু। বিচারবিভাগীয় কমিশন গঠনের নির্দেশ।
২০০৮ সালে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর ব্লকের বিডিও কল্লোল শুরের অস্বাভাবিক মৃত্যু। ঘটনার তদন্তে বিচারবিভাগীয় কমিশন গঠনের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর।
২০১১-য় এমএলএ হোস্টেলে আত্মহত্যা করেন সিপিআইএম বিধায়ক মোস্তাফা বিন কাসিম। ঘটনার পরেই বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
২০১১ সালে মগরাহাটে পুলিসি গুলিচালনা ঘটনাতেও গঠন করা হয় তদন্ত কমিশন।
দীর্ঘ তালিকার মাত্র কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ খতিয়ান থেকেই স্পষ্ট কমিশন গঠনে মোটেই পিছপা নন মুখ্যমন্ত্রী নিজেও। তবে কেন হঠাত্ সেই কমিশনের বিরুদ্ধেই খড়গহস্ত মুখ্যমন্ত্রী?
সম্প্রতি কার্টুন কাণ্ডে রাজ্য সরকারের ভূমিকার কড়া সমালোচনা করে ১ লাখ টাকা জরিমানারও সুপারিশ করেছে রাজ্য মানবাধিকার কমিশন। তবে কী কার্টুনকাণ্ডে মানবাধিকার কমিশনের এই বিরুদ্ধ রায়ই মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষোভের কারণ?
তদন্ত কমিশন গড়ায় রেকর্ড করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়