বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার তদন্তে স্বরাষ্ট্রসচিবের নেতৃত্বে কমিটি গঠন মমতার

গত ১৫ মে শেষ দফার ভোটের আগে কলকাতায় অমিত শাহের রোড শো ঘিরে তুলকালাম কাণ্ড বাঁধে বিদ্যাসাগর কলেজে। 

Updated By: May 27, 2019, 10:23 PM IST
বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার তদন্তে স্বরাষ্ট্রসচিবের নেতৃত্বে কমিটি গঠন মমতার

সুতপা সেন

বিদ্যাসাগর কলেজে ঈশ্বরচন্দ্রের মূর্তি ভাঙার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই তদন্ত কমিটির মাখায় রয়েছেন নতুন স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন, কারা, কীভাবে মূর্তি ভাঙল, সেটা তদন্ত করে রিপোর্ট দেবে কমিটি।   

গত ১৫ মে শেষ দফার ভোটের আগে কলকাতায় রোড শো করেন অমিত শাহ। অমিতের মেগা শো বিদ্যাসাগর কলেজের পাশে দিয়ে যাওয়ার সময় শুরু হয় দুপক্ষের সংঘর্ষ। ওই সংঘর্ষের সময় ভাঙে বিদ্যাসাগরের মূর্তি। তৃণমূল অভিযোগ করেছে, বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙেছে বিজেপির বহিরাগতরা। সেই অভিযোগ অস্বীকার করে বিজেপি নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানায়। এমনকি সিসিটিভির ফুটেজ প্রকাশ করারও দাবি করে তারা। এদিন নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী বলেন,''খুব জঘন্য কায়দায় বিদ্যাসাগরের ২০০ বছরের পুরনো মূর্তি ভেঙেছে। কেন হয়েছে, কী হয়েছে, সেটা তদন্ত করে দেখবে কমিটি। ইতিমধ্যেই দুটো এফআইআর দায়ের হয়েছে। ৩৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিস''।

রাজ্য সরকারের গঠিত কমিটিতে রয়েছেন কলকাতার পুলিস কমিশনার, অতিরিক্ত পুলিস কমিশনার জাভেদ শামিম, ইনস্পেক্টর কৌশিক দাস ও বিদ্যাসাগরের কলেজের প্রিন্সিপ্যাল। কমিটির চেয়ারম্যান স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়।  

গত ১৫ মে অমিত শাহের সভা ঘিরে প্রথমে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কলেজস্ট্রিট। বিজেপি কর্মীদের লক্ষ্য করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইট ছোড়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিরুদ্ধে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে মারমুখী হয়ে ওঠেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। দুপক্ষের বিবাদ থামাতে নাজেহাল অবস্থা হয় পুলিসের। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে সদর দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তারপরেও দুপক্ষের মধ্যে ইট-পাটকেল ছোড়ছুড়ি চলতে থাকে। এরপর বিদ্যাসাগর কলেজের সামনে আরও এক দফা সংঘর্ষে জড়ায় দুপক্ষ। বিজেপি অভিযোগ করেছিল, তাদের কর্মী-সমর্থকদের লক্ষ্য করে ইট ছোড়া হয়েছে। এরপরই তাদের কর্মীরা ঢুকে পড়ে কলেজের ভিতরে। সেই অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। তারা দাবি করে, কালো পতাকা দেখানো হয়েছিল। কিন্তু ইট ছোড়া হয়নি। বিজেপি কর্মীরাই ভিতরে ঢুকে তাণ্ডব চালিয়েছে। পড়ুয়াদের মারধর করে তারা। বিদ্যাসাগরের বাইরে তিনটি বাইকও জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙে দেয় বিজেপি কর্মীরা। মূর্তি ভাঙার অভিযোগ অস্বীকার করে সিসিটিভির ফুটেজ প্রকাশের দাবি করে গেরুয়া শিবির।

ওই ঘটনার পর শুরু হয় রাজনৈতিক টানাপোড়েন। রাজপথে ধিক্কার মিছিল করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের বুদ্ধিজীবীদের একাংশ। পাল্টা বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙে মমতার বিরুদ্ধে রাজনীতি করার অভিযোগ করেন অমিত শাহ। দাবি করেন, তাঁর দলে কোনও কর্মীই গেট পেরিয়ে কলেজের ভিতরে প্রবেশ করেননি। পঞ্চধাতুর বিদ্যাসাগরের মূর্তি গড়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।    

আরও পড়ুন- একে মুকুলে রক্ষে নেই, শুভ্রাংশু দোসর, মঙ্গলবার তৃণমূলের হাতছাড়া হচ্ছে ২ পুরসভা?

.