ল্যাম্পপোস্টে ধাক্কা? হিসেব মিলছে না পুলিসের তত্ত্বের
ল্যাম্পপোস্টে ধাক্কা লেগেই সুদীপ্ত গুপ্তর মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছেন পুলিসকর্তারা। সেই দাবির পক্ষে ময়নাতদন্তের রিপোর্টকেও হাতিয়ার করেছেন তাঁরা। কিন্তু বেশকিছু প্রশ্নের উত্তর মিলছে না। যে কারণে সুদীপ্তর মৃত্যুকে ঘিরে রহস্য রয়েই গেছে।
ল্যাম্পপোস্টে ধাক্কা লেগেই সুদীপ্ত গুপ্তর মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছেন পুলিসকর্তারা। সেই দাবির পক্ষে ময়নাতদন্তের রিপোর্টকেও হাতিয়ার করেছেন তাঁরা। কিন্তু বেশকিছু প্রশ্নের উত্তর মিলছে না। যে কারণে সুদীপ্তর মৃত্যুকে ঘিরে রহস্য রয়েই গেছে।
ডিএল খান রোড রোড থেকে বাঁদিকে বাঁক নিয়ে থ্যাকারে রোড ধরে এগিয়ে গেলে সোজা প্রেসিডেন্সি জেল। এই রাস্তার ওপরেই লাইট পোস্ট নম্বর ৩৭। যে পোস্টে ধাক্কা লেগে সুদীপ্তর মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি পুলিসের। পুলিসের দাবি জোরাল করেছে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট।
কিন্তু ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী যা জানিয়েছেন, তার সঙ্গে পুলিসের বক্তব্যের বিন্দুমাত্র মিল নেই। তাঁদের বক্তব্য আইন অমান্য কর্মসূচীর পর গ্রেফতার হলে বাস থেকে নামানোর সময় সুদীপ্ত সহ বেশ কয়েকজনকে পুলিস বেধড়ক মারে। তাঁদের আরও অভিযোগ, বাস থেকে নামতে গিয়ে পুলিসের ধাক্কায় পড়ে যান সুদীপ্ত। তার পরেও তাঁর উপর মার পড়তে থাকে বলেও জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
বাস চালক রাজা দাসেরও বক্তব্য, পুলিস জেলের সামনে যথেচ্ছ লাঠিচার্জ করে।
যে প্রশ্নের উত্তর মিলছে না
প্রেসিডেন্সি জেলের সামনের রাস্তা অন্তত কুড়ি ফুট চওড়া। দুপাশে আরও তিন-চার ফুট করে ফুটপাত। তারপর লাইট পোস্ট
ফাঁকা এবং চওড়া রাস্তা থাকলে যে কোনও গাড়িচালকই বাঁদিকে অনেকটা জায়গা রেখেই গাড়ি চালান। কলকাতার ভিড় রাস্তায় এবং যুলন্ত যাত্রী নিয়ে বাস চালান যে চালকরা, তাঁরা কখনোই রাস্তার এতটা বাঁদিকে যাবেন না।
পুলিসের দাবি, মাথায় জোরাল আঘাতেই মৃত্যু হয়েছে সুদীপ্তর। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুসারে সুদীপ্তর দুই ভ্রুর মাঝে লম্বালম্বি খুলি ভেঙে গিয়েছিল। ভেঙে গিয়েছিল চোয়ালও। এতবড় আঘাতের কারণ জানতে আমরা পৌঁছে যাই ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ডাঃ অপূর্ব নন্দীর কাছে।
অথচ বাসচালক বলছেন গাড়ি জোরে চলছিল না। পাহারার দায়িত্বে থাকা এক হোমগার্ড বলেছেন, তিনি বাস থেকে নেমে বাসের পাসে দৌড়ে দৌড়ে যাচ্ছিলেন।তাছাড়া যেখান থেকে জেল গেট মাত্র পঞ্চাশ ফুট দূরে সেখানে বাসের ঝোড়ো গতি থাকার কোনও প্রশ্নই নেই।
তাহলে সুদীপ্তর মাথায় এত মারাত্মক আঘাত লাগল কীভাবে?
একইসঙ্গে সুদীপ্তর মাথার পিছনে কীভাবে আঘাত লাগল?
আঘাত লাগার পর সুদীপ্ত যেখানে পড়েছিল সেখানে প্রচুর রক্তপাত হয়। এই অবস্থান নিয়েও সন্দেহ রয়েছে বিশেষজ্ঞদের।
বাসচালকের ওপর দায় চাপিয়ে, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট জানিয়ে আদতে কী কোনও তথ্য চাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে কলকাতা পুলিস ? ধাক্কা দিয়ে, বা জোর করে টেনে নামানো এবং পুলিসের লাঠির আঘাত লোকানোর চেষ্টা হচ্ছে নাতো ?তেমন অভিযোগই উঠছে। আর সেই সঙ্গে উঠছে প্রশ্ন।