কলকাতা শহর নয় আবেগ! সাইকেল চালিয়ে 'সাহসিনী' নীলাঞ্জনাকে চিঠি পৌঁছে দিয়ে প্রমাণ করলেন রবিন বাবু
১২৩ টা মিসড কল ৯৯ টারও বেশি হোয়াটসঅ্যাপ বার্তার থেকেও তাঁর মনের কাছে থেকে গেল রবিন বাবুর চিঠি।
নিজস্ব প্রতিবেদন: কলকাতা শহরে এখন "সাহসিনী" বলতে একজনকেই লোকে চেনে, নাম তাঁর নীলাঞ্জনা। শুধু আনন্দপুর নয় সারা বাংলা আজ তাঁকে নিয়ে গর্বিত। নির্যাতিতাকে উদ্ধার করে সাহসের এক নতুন অধ্যায় রচনা করেছেন তিনি। সারা বাংলা থেকে শুভেচ্ছা বার্তা এসেছে নীলাঞ্জনার স্বামীর কাছে। কিন্তু মন ছুঁয়ে গেল রবিন পাত্রের দেওয়া শংসাপত্র।
৭৩ বছরের রবিন পাত্র বইয়ের দোকানে কাজ করেন। বেলেঘাটা থেকে সাইকেল চালিয়ে এসেছেন "সাহিসিনী" নীলাঞ্জনাকে তাঁর লেখা চিঠি দিতে। চিঠিতে শ্রদ্ধেয় নীলাঞ্জনাদি ও দীপদাকে লেখা, "আপনারা কল্লোলিনী কলকাতার সম্মান আরও বৃদ্ধি করলেন। কলকাতা নয় বরং সারা পৃথিবীর। আরও কিছুদিন বাঁচার আশা আপনাদের দেখে পেলাম।"
আর সেই চিঠিখানা দেখেই কলকাতার সঙ্গে ভালবাসার বন্ধন যেন আরও শক্ত হলো নীলাঞ্জনার স্বামীর। তিনি প্রথমে কাগজ হাতে রবিন বাবুকে দেখে ভেবেছিলেন হয়তো সাহায্য চাইতে এসেছেন। কিন্তু কানে কানে "সাহসিনীর" স্বামীকে রবিন বাবু বললেন, "আমার তো আর কেউ নেই, কিন্তু কিছু জমানো টাকা আছে, যদি আপনার দরকার হয় বলবেন।"
একথা শুনে আর চোখে জল ধরে রাখতে পারেননি নীলাঞ্জনার স্বামী। তবে রবিন বাবুর মতো লোকেরা বিস্ময়। তিনি এটুকুতেই ব্রাত্য নয়। বললেন, "বাড়িতে আমার ছেলেকে বলে এসেছি যদি রক্ত লাগে তাহলে সে যেনো চলে আসে।" এই সময়েও এমন ত্রাতারা আছেন, অনেকেরই বিশ্বাসযোগ্য লাগে না। তাঁদেরই মাথা ঝাঁকিয়ে দেন রবিন বাবুরা।
খবরটা পাওয়ার পর থেকেই মন কেমন করছিল রবিন বাবুর। তাই তিনি ছুটে এসেছেন "সাহসিনীর"কাছে। আর পাশে এই সহ নাগরিককে পেয়ে দীপদা যেন একসঙ্গে লড়াইয়ের বার্তা পেলেন। আর ১২৩ টা মিসড কল ৯৯ টারও বেশি হোয়াটসঅ্যাপ বার্তার থেকেও তাঁর মনের কাছে থেকে গেল রবিন বাবুর চিঠি।
পরিশেষে অবাক হয়ে দীপদা ফের আবেগতাড়িত হয়ে গেলেন কল্লোলিনীর কার্যকলাপে। আর মনে মনে বললেন, "কলকাতা শুধু একটা শহর নয় এটা আবেগ।"
আরও পড়ুন: বাদ বৈশাখী, জায়গা পেলেন জ্যোতির্ময়ী, ১০৫ জনের নয়া রাজ্য কমিটিতে ২৫ শতাংশ নতুন মুখ