Chit fund: বিত্তশালীদের ডবল রিটার্নের টোপ, ২০০০ কোটির কেলেঙ্কারি! কলকাতায় জালে চিটফান্ড কর্তা
বেছে বেছে বিত্তশালী বয়স্ক লোকেদের টার্গেট করত শান্তি সুরানার চিটফান্ড সংস্থাটি। নূন্যতম ২৫ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করতে পারবে এরকম লোককেই সুরানার সংস্থা শিকার বানাত বলে অভিযোগ।
নিজস্ব প্রতিবেদন : খাস কলকাতার বুকে ফের চিটফান্ড কেলেঙ্কারি (Chit Fund)। লিজা মুখার্জির পর এবার ২০০০ কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগে এক চিটফান্ড কর্তাকে গ্রেফতার করল DEO। ধৃতের নাম শান্তি সুরানা (Shanti Surana)। বৃহস্পতিবার রাতে বালিগঞ্জের কুইন্সপার্ক থেকে চিটফান্ড সংস্থার ডিরেক্টর শান্তি সুরানাকে গ্রেফতার (Arrest) করা হয়। আজ ধৃত শান্তি সুরানাকে আলিপুরের তৃতীয় জেলা ও দায়রা বিচারকের আদালতের পেশ করা হলে ৩ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে ভবানীপুর সহ রাজ্যের ২০ থেকে ২৫টি থানায় মামলা সুরানার সংস্থার বিরুদ্ধে রুজু হয়। এখন সেইসব মামলার তদন্ত করছে রাজ্যের ডিরেক্টরেট অব ইকনমিক অফেন্সেস (DEO)। তদন্তে উঠে এসেছে, মূলত অবসরপ্রাপ্ত বৃদ্ধ-বৃদ্বাদের টার্গেট করত এই ভুঁইফোঁড় সংস্থাটি। একের পর এক অভিযোগ সামনে আসতেই এবার গ্রেফতার শান্তি সুরানা। তবে এখনও অধরা সংস্থার অন্যতম ডিরেক্টর তাঁর স্ত্রী এবং ছেলে-মেয়ে সহ বাকি অভিযুক্তরা। অভিযোগ, ২০০৭ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে মোটা রিটার্নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমানতকারীদের থেকে এই সংস্থা ২০০০ কোটি টাকা তোলে। বেছে বেছে বিত্তশালী বয়স্ক লোকেদের টার্গেট করত শান্তি সুরানার চিটফান্ড সংস্থাটি।
যেমন মোটা টাকা রিটার্ন পাওয়ার আশায় ২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন লি রোডের বাসিন্দা শুভ্রা মুখাপাধ্যায়। ছেলে-মেয়ের বিয়ের সময় দরকার হবে যখন, তখন মোটা টাকা পাবেন ভেবেছিলেন। তাই বাবার দেওয়া জমি বিক্রির টাকা চেকের মাধ্যমে ২০০৮ সাল নাগাদ শান্তি সুরানার চিটফান্ড সংস্থায় বিনিয়োগ করেছিলেন। কিন্তু সেই টাকা ফেরত পাননি। এ তো গেল একজনের কথা। একটি উদাহরণ মাত্র। শুভ্রা মুখোপাধ্য়ায়ের মতো এমন অনেকেই কোটির উপর টাকা সুরানার সংস্থায় বিনিয়োগ করে এখন সর্বস্বান্ত বলে অভিযোগ। অভিযোগ, ক্যানসার আক্রান্ত এক বয়স্ক দম্পতিও মোটা টাকা রেখেছিলেন। কিন্তু চিকিৎসার জন্য টাকা ফেরত চেয়েও পাননি। এদিকে ইতিমধ্যে স্বামীর মৃত্যু হয়েছে, এখন অসহায় অবস্থা একাকী ৮৪ বছরের বৃদ্ধার।
তদন্তে উঠে এসেছে অন্যান্য চিটফান্ড সংস্থা যেখানে আপাতভাবে মধ্যবিত্ত বা নিন্ম মধ্যবিত্তদের টার্গেট করত, সেখানে সুরানার সংস্থার টার্গেট করত সমাজের বিত্তশালীদের। সেই তালিকায় রয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত জাজ, আইনজীবী, শেয়ার ট্রেডার্স প্রমুখ। নূন্যতম ২৫ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করতে পারবে এরকম লোককেই সুরানার সংস্থা শিকার বানাত বলে অভিযোগ। বিভিন্ন জায়গায় কনস্ট্রাকশন দেখিয়ে সেই ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে উৎসাহিত করত। বিনিময়ে প্রায় ডবল রিটার্ন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিত। পরে ওইসব সম্পত্তি বন্ধক রেখেও টাকা তুলে নেয় অভিযুক্তরা।
আরও পড়ুন, Modi-Mamata Meet: ফের মুখোমুখি মোদী-মমতা, বাংলা নিয়ে হতে পারে 'একান্তে' বৈঠক