অঞ্জন রায়: গেরুয়া শিবিরে যোগদানের পর এক মাসও হয়নি, এরমধ্যেই বিজেপিতে জাঁকিয়ে বসেছেন মুকুল রায়। তৃণমূলের একদা সেকেন্ড ইন কম্যান্ড 'কী বস্তু'! তা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। মুরলীধর সেন লেনে কানাঘুষো, অস্তিত্ব সংকটে ভুগছেন রাজ্য বিজেপির নেতারা। তা স্পষ্ট হল শুক্রবার দিলীপ ঘোষের কথায়। মুকুলকে পাশে বসিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতির চিমটি, ''উনি সর্বভারতীয় নেতা। দিল্লিতে বেশি ঘোরাফেরা করেন।''
দিলীপ ঘোষের আপাত নিরীহ টিপ্পনির পিছনে গভীর রাজনৈতিক ইঙ্গিত রয়েছে বলেই মত ওয়াকিফহাল মহলের। রাজ্য বিজেপি সূত্রে খবর, আগাগোড়া মুকুলকে নিয়ে আপত্তি ছিল না দিলীপ শিবিরের। তবে এখন তাঁর উপস্থিতি ভালভাবেই টের পাচ্ছেন দিলীপ, রাহুলরা।
আরও পড়ুন- মুকুলের হাত ধরে বিজেপিতে সিঙ্গুরের চাষিরা
মুকুলকে গুরুত্ব দিচ্ছে টিম অমিত শাহও। গুজরাটে বিজেপির ভোটপ্রচারেও গিয়েছিলেন মুকুল। শুধু তাই নয়, আমদাবাদ বিমানবন্দরে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন খোদ অমিত শাহ। মুকুলকে ওয়াই ক্যাটগরির নিরাপত্তা দিচ্ছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।বিজেপির কোনও পদে না থেকেও রাজ্য দফতরে আলাদা ঘর পেয়েছেন তিনি। ফি দিনই সেখানে ভিড় লেগে রয়েছে মুকুল অনুগামীদের। মুরলীধর লেনের পুরনো বাড়িটা এমন জমজমাট কস্মিনকালেও ছিল না। মুকুলের জনপ্রিয়তার সৌজন্যেই তা সম্ভব হয়েছে তা আড়ালে স্বীকার করছেন বিজেপি নেতারাই।
দিল্লির নির্দেশ মেনে পঞ্চায়েত, লোকসভা ও বিধানসভার ঘুঁটি সাজাতে শুরু করে দিয়েছেন মুকুল রায়। সূত্রের খবর, রাজ্য নেতৃত্বের আশঙ্কা, সংগঠনে ব্যাপক রদবদল করতে পারেন। পদ খোয়ানোর আশঙ্কায় অনেকেরই রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে। একঘরে হয়ে যাওয়ার ভয়ে মুকুল-শঙ্কা কি লুকিয়ে রাখতে পারলেন না দিলীপ ঘোষ? প্রশ্ন রাজনৈতিক মহলের একাংশের। তাদের মতে, তাই কি সুকৌশলে সর্বভারতীয় রাজনীতির দিকে মুকুলকে ঠেলে দিলেন বিজেপির রাজ্য নেতারা? দিন কয়েক আগেই তো এই দিলীপই বলেছিলেন, খাবারের শেষে যেমন চাটনি লাগে তেমনই মুকুল রায়। দু'দিন যেতে না যেতেই সেই চাটনিই তেতো লাগছে না তো? না কি ভোজের প্রধান পদ হয়ে উঠছেন তিনি? প্রশ্ন এক রসিক বিজেপি নেতার।
'মুকুল ভূত' দেখছেন না কি রাজ্য বিজেপি নেতারা?