Exclusive: কালো টাকাকে সাদা করতে একাধিক সংস্থা তৈরি পার্থ-অর্পিতার, কীভাবে চলত সেই কাজ?
ইচ্ছে এন্টারটেনমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড, জামির সানশাইন, সেনেন্ট্রি ইন্জিনিয়ারিং প্রাইভেট লিমিটেড, সিম্বোইসিস মার্চেন্টস প্রাইভেট লিমিটেড— কর্পোরেট মন্ত্রকের তথ্য বলছে এরকমই আরও একাধিক সংস্থার ডিরেক্টর অর্পিতা ও যুগ্ম ডিরেক্টর কল্যান ধর। কালো টাকাকে সাদা করতে যে অসংখ্য “পেপার” বা সেল কোম্পানিকে হাতিয়ার করা হয়েছিল ইডির সে অনুমানই স্পষ্ট হল জি ২৪ ঘণ্টার অন্তর্তদন্তে।
পিয়ালি মিত্র: কালো টাকা লুকোতে পেপার কোম্পানিকে (Shell Company) হাতিয়ার করেছিল অর্পিতা (Arpita Mukherjee) ও পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। ইচ্ছে এন্টারটেনমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড, জামির সানশাইন, সেনেন্ট্রি ইন্জিনিয়ারিং প্রাইভেট লিমিটেড, সিম্বোইসিস মার্চেন্টস প্রাইভেট লিমিটেড— কর্পোরেট মন্ত্রকের তথ্য বলছে এরকমই আরও একাধিক সংস্থার ডিরেক্টর অর্পিতা ও যুগ্ম ডিরেক্টর কল্যান ধর। কালো টাকাকে সাদা করতে যে অসংখ্য “পেপার” বা সেল কোম্পানিকে হাতিয়ার করা হয়েছিল ইডির সে অনুমানই স্পষ্ট হল জি ২৪ ঘণ্টার অন্তর্তদন্তে।
সিম্বোইসিসি মার্চেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড
ROC তথ্য বলছে এই সংস্থা নথিভুক্ত রয়েছে ১৯ নবাব আব্দুল লতিফ স্ট্রিট, বেলঘরিয়ার ঠিকানায়। কিন্তু এটি আসলে অর্পিতার পৈত্রিক বাড়ি। তাঁর মা থাকেন এখানে। অর্পিতার আসতেন মাঝেমধ্যে। তবে কোনও কোম্পানির অস্তিত্ব নেই এখানে।
জামির সানশাইন লিমিটেড
কর্পোরেট মন্ত্রকের নথি অনুযায়ী এই সংস্থার নথিভুক্ত ঠিকানা ক্লাবটাউন, ব্লক ৫, ফ্লোর-৮, ফ্ল্যাট নম্বর ৮০১। এটি সেই ফ্ল্যাট যেখান থেকে নগদ প্রায় ২৮ কোটি টাকা, সাড়ে কোটির টাকার সোনা ও সম্পত্তির নথি উদ্ধার করেছিল ইডি। এখানেও কোনও সংস্থার অস্তিত্ব নেই জানালেন অন্য ফ্ল্যাটের বাসিন্দারাও।
সিনেট্রি ইন্জিনিয়ারিং প্রাইভেট লিমিটেড
এই কোম্পানির নথি অনুযায়ী কোম্পানীর ঠিকানা ডায়মন্ড সিটি সাউথ, টাওয়ার ২, ফ্ল্যাট নম্বর ১-এ। এই ফ্ল্যাট থেকে ২২ কোটি টাকা সহ গয়না বৈদেশিক মু্দ্রা পাওয়া যায়। এখানেও এমন কোনও সংস্থার অস্তিত্ব নেই। এমনকি এখানে বাকি দুটি যে ফ্ল্যাট রয়েছে সেখানেও কোনও কোম্পানির হদিশ নেই।
ইডি সূত্রের খবর, তদন্ত নেমে এখনো পর্যন্ত কেবল রাজডাঙার “ইচ্ছে”তে বিয়ে বাড়ি ভাড়া দেওয়ার ব্যবসা ও নেল আর্ট পার্লারের ব্যবসার সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। এছাড়া আর কোনও কোম্পানির অস্তিত্ব নেই। তদন্তকারীদের দাবি, দুর্নীতির মাধ্যমে হাতানো কালো টাকাকে সাদা করতে কাজে লাগানো হয়েছে পেপার কোম্পানি বা শেল কোম্পানিকে। পার্থ ও অর্পিতা দু’জনেই হাতিয়ার করে এই সব পেপার কোম্পনিকে।
কী ভাবে কাজ করে পেপার কোম্পানি?
দুর্নীতি বা অসৎ উপায়ে পাওয়া টাকাকে কখনো হাওয়ালার মাধ্যমে অন্যত্র পাচার বা বিদেশে পাচার করা হয়। আবার অনেক ক্ষেত্রে কাজ লাগানো হয় ভুয়ো কোম্পানিকে। কীভাবে? যে ব্যক্তি কালো টাকাকে সাদা করতে চাইছেন তিনি তার নামে বা তার ঘনিষ্ঠজনের নামে একাধিক ভুয়ো কোম্পানি খোলেন। এবার হাতে বেআইনিভাবে কোনো অর্থ পেলে তা সাদা করতে সাহায্য নেওয়া কিছু সিএ বা এধরনের কাজে যুক্ত ব্যক্তির।
এধরনের মিডল ম্যানদের বেশ কিছু ভুয়ো কোম্পানি থাকে। কমিশনের বিনিময় সেই নগদ অর্থ নিয়ে নিজের বিভিন্ন ভুয়ো সংস্থার টাকা ঢুকিয়ে দেয় ভুয়ো ট্রানজাকশান দেখিয়ে। এরপর ওই মিডল ম্যানরা নিজের কোম্পানি অ্যাকাউন্ট থেকে যে ব্যক্তি নগদ টাকা দিয়েছিলেন তাঁর কোম্পানির অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয় দুই কোম্পানির মধ্যে ভুয়ো ব্যবসায়ীক লেনদেন দেখানো হয়। আর এভাবে অনৈতিকভাবে প্রাপ্ত টাকাকে রেগুলাইজ করা হয়। তদন্তকারীদের ধারণা এইভাবে কালো টাকা সাদা করে কেনা হয়েছে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি।