স্বজনহারা নাট্য স্বজন, আপনজনরা এখন পরস্পরের দুর্জন

নাট্য স্বজনে স্বজন শব্দটা এখন পরিহাসের মতো শোনাচ্ছে। একসময় পরস্পরের আপনজন থাকা এই তৃণমূলপন্থী নাট্যকর্মীরা এখন একে অপরকে দুর্জনের মতো দেখছেন। কী এমন ঘটল এই কদিনেই?

Updated By: Jan 9, 2015, 09:59 PM IST
স্বজনহারা নাট্য স্বজন, আপনজনরা এখন পরস্পরের দুর্জন

কলকাতা: নাট্য স্বজনে স্বজন শব্দটা এখন পরিহাসের মতো শোনাচ্ছে। একসময় পরস্পরের আপনজন থাকা এই তৃণমূলপন্থী নাট্যকর্মীরা এখন একে অপরকে দুর্জনের মতো দেখছেন। কী এমন ঘটল এই কদিনেই?

পরিবর্তনপন্থী বুদ্ধিজীবীদের অনেকেই আর সরকারের পাশে নেই। যাঁরা একদিন পরিবর্তন চেয়ে পায়ে পা মিলিয়েছিলেন, এখন তাঁদের মধ্যেও বড় ফাটল। শহরজুড়ে পরিবর্তনের হোর্ডিং। বাম সরকারকে হঠানোর ডাক বুদ্ধিজীবীদের।

পরিবর্তনের স্লোগান তুলে হোর্ডিংয়ের মুখেরা নেমে এলেন রাস্তায়।

শেষপর্যন্ত এল পরিবর্তন। অবসান ঘটল বাম জমানার। হোর্ডিংয়ের মুখেদের কেউ হলেন এমএলএ, কেউ এমপি। কেউ বা পা রাখলেন  ক্ষমতার অলিন্দের কোণায় কোণায়।

তবে, রাজ্যে পরিবর্তনের পরই কৌশিক সেন, সুমন মুখোপাধ্যায়রা সরে যান শাসকদলের পাশ থেকে। কিছুদিনের মধ্যেই পরিবর্তনে হোর্ডিংয়ে আবার ফাটল। প্রতিবাদী হলেন সুনন্দ সান্যাল।

ততদিনে হোর্ডিংয়ের অনেক মুখই দুরত্ব তৈরি করে ফেলেছেন সরকারের সঙ্গে। আবার, সারদা কেলেঙ্কারিতে ফাঁসার পর শুভাপ্রসন্নদের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করতে চেয়েছে খোদ শাসকদলই।

পরিবর্তনের হোর্ডিংয়ের এই মুহূর্তে দফারফা।

অর্পিতা ঘোষ এবং ব্রাত্য বসু। একজন সাংসদ, আরেকজন ক্যাবিনেট মন্ত্রী। হাত মিলিয়ে তৈরি করেছিলেন নাট্যস্বজন। ক্রমে ক্রমে নাট্যমহলে রটে গেল বার্তা। হয় নাম লেখাতে হবে স্বজনে। না হলে স্থান হবে দুর্জনের তালিকায়। যাঁরা স্বজনে নাম লেখালেন তাঁদের ইনামও মিলল। কিন্তু, স্বজনের মধ্যেই বাসা বেঁধেছিল স্বজনপোষণ।

অভিযোগ, অর্পিতা ঘোষের। তবে, এই অভিযোগ আগে শোনা যায়নি তাঁর মুখে। নাট্যস্বজনে কিছুটা কোণঠাসা হতেই বিদ্রোহী অর্পিতা।

আগেই নাট্যস্বজন ছেড়েছিলেন মণীশ মিত্র, দেবেশ চট্টোপাধ্যায়।  
স্বজনে বিরোধ আরও বাড়তে থাকে।

শেষ পর্যন্ত ব্রাত্যর দিকে আঙুল তুলে স্বজন ছাড়লেন অর্পিতা। কিছুক্ষণের মধ্যেই সভাপতির পদ ছাড়লেন ব্রাত্য বসুও।

ঘনিষ্ঠ মহলে দুজনেই জানিয়েছেন অনেক ক্ষোভের কথা। নাট্য স্বজন কী ভাবে ক্রমশ স্বজনপোষণের আখড়া হয়ে উঠছিল, সেও এখন আর গোপন কথা নয়।

দু-বছরের মধ্যেই নাট্যস্বজনের ইতি। তৃণমূলের ভাবধারায় বিশ্বাসী যাঁরা নাট্যস্বজনে নাম লিখিয়েছিলেন তাঁরা এখন
অভিভাবকহীন।

.