পুজোর আগে ব্যাপক রক্ত সংকট, কীভাবে সামাল দেবে রাজ্য?

Updated By: Aug 19, 2014, 10:19 AM IST
পুজোর আগে ব্যাপক রক্ত সংকট, কীভাবে সামাল দেবে রাজ্য?

নির্বাচন কেটেছে। গ্রীষ্মের দিনগুলিতে রক্ত সংকট ছিলই। সামনেই দুর্গাপুজো। কিন্তু যে পরিমাণ রক্তসংকট তৈরি হয়েছে, তা কিভাবে সামাল দেবে রাজ্য, তার হিসেব কষতেই দিশেহারা সকলে।

রক্তের যোগান ও চাহিদায় বিস্তর ফারাক তো আছেই। সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিকল্পনার অভাবে নষ্ট হচ্ছে জীবনদায়ী রক্ত। এই মুহুর্তে কতটা রক্ত সংকটের মুখোমুখি রাজ্য, সমাধানের পথই বা কি, দেখুন চব্বিশ ঘণ্টার বিশেষ রিপোর্ট। একনজরে দেখে নেওয়া যাক, রাজ্যে ব্লাড ব্যাঙ্কের সংখ্যা কত।

রাজ্যে সরকারি ব্লাড ব্যাঙ্কের সংখ্যা আটান্ন। কেন্দ্রীয় সরকারের ব্লাড ব্যাঙ্ক ষোলো। বেসরকারি ব্লাড ব্যাঙ্কের সংখ্যা পঁয়ত্রিশ। রাজ্যে প্রতি বছর রক্তের চাহিদা ১০ লক্ষ ইউনিট। মাসের হিসেবে সংখ্যাটা তিরাশি হাজার তিনশো চৌত্রিশ ইউনিট।

এবার দেখে নেওয়া যাক রাজ্যে প্রতি বছর কত পরিমাণ রক্ত জমা হয়। বছরে রাজ্যের সংগ্রহ চার লক্ষ একষট্টি হাজার পাঁচশো তেরো ইউনিট রক্ত। কেন্দ্রীয় ব্লাড ব্যাঙ্কগুলির সংগ্রহ এগারো হাজার ২৩৭ ইউনিট। আর বেসরকারি ব্লাড ব্যাঙ্কগুলির সংগ্রহ ২ লক্ষ ৮২ হাজার ৬৫৬ ইউনিট। মোট সংগ্রহ ৭ লক্ষ ৫৫ হাজার ৪০৯ ইউনিট।

কিন্তু এতেও পূরণ হয় না রক্তের চাহিদা। রাজ্যে বার্ষিক রক্তের ঘাটতি ২ লক্ষ ৪৪ হাজার ৫৯১ ইউনিট। মাসে রক্তের ঘাটতি দু হাজার ৩৮২ ইউনিট। অর্থাত্‍ রাজ্যে প্রতিদিন রক্ত পাচ্ছেন না ছশো আশিজন।

এবার দেখে নেওয়া যাক রাজ্যে রক্ত সংকটের কারণ কী-

রাজ্যে ৩০ শতাংশ রক্তদান শিবির বন্ধ। এর প্রধাণ কারণ, উপহার না পাওয়ায় রক্তদানে উত্‍সাহ হারাচ্ছেন রক্তদাতারা। আর্থিক ক্ষমতা না থাকায় ছোট ছোট ক্লাব বা সংগঠনগুলিও ভালো উপহার দিতে পারছে না। ফলে ক্রমশ কমছে রক্তদান শিবির।

শুধু কি রক্তদান শিবির বন্ধ হওয়াই রক্ত সংকটের মূল কারণ? সেটা মানতে নারাজ বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে ব্লাড ব্যাঙ্কগুলিরও পরিকল্পনার অভাব রয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম...

-রক্ত সংগ্রাহক বা ব্লাড কালেক্টর টিম কমছে।
-বিকেল পাঁচটার পর সরকারি ব্লাডব্যাঙ্কে রক্ত নেওয়া হয়না।
-দুর্গাপুজো, নির্বাচন, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মত বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে রক্ত সংকটের প্রচার হয়না।
-সংরক্ষণের অভাবে অনেক সময় নষ্ট হয় রক্ত।

পাউচের ব্যবস্থা না থাকায় শিশু কিম্বা নবজাতকদের রক্ত দেওয়ার ক্ষেত্রে এই সমস্যা হয়। কারণ তাদের শরীরে যে রক্ত লাগে, একটা পূর্ণ বয়স্ক মানুষের শরীরে সেই পরিমাণ রক্ত লাগে না। ফলে বাকি রক্ত অপচয় হয়।

অনেকেই মনে করেন, রক্তদান এখন উত্‍সব। রক্তদাতাদের উপহার দেওয়ার জন্য ক্লাবগুলোর মধ্যেও চলে প্রতিযোগিতা। তাই যাঁরা ভালো উপহার দিতে পারেন না, তাঁদের রক্তদান শিবিরেও সাড়া মেলে না। সমস্যা আরও আছে। হেল্পলাইন চালু না হওয়া। ফলে প্রয়োজনের সময় কোন গ্রুপের রক্ত কোন ব্লাড ব্যাঙ্কে আছে, তা আগাম জানতে না পারায় ব্লাড ব্যাঙ্ক গুলিতে ঘুরে ঘুরে হয়রানির শিকার হতে হয় সাধারণ মানুষকে। সমস্যার দ্রুত সমাধান না হলে অশনি সংকেত দেখছেন চিকিত্‍সকরা।

 

.