লক্ষ মানুষের সমাবেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার বার্তা সিপিআইএমর

উত্তর ২৪ পরগণা জেলা সিপিআইএমের ডাকা সমাবেশকে ঘিরে কার্যত জনজোয়ারে ভাসল কলকাতা। সমাবেশে যোগ দিতে সকাল থেকেই উত্তর ২৪ পরগণার বিভিন্ন জায়গা থেকে মিছিল করে সভাস্থলে আসেন মানুষ। কলকাতা পুলিসের মতে সোমবারের সমাবেশে প্রায় ১ লক্ষ ৭০ হাজার মানুষের জমায়েত হয়েছিল রানি রাসমনি অ্যাভেন্যুয়ে। থিকথিকে ভিড়ে ঠাসা জেলা সিপিআইএমএর সমাবেশ থেকে উঠে এসেছে রাজ্যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার বার্তাই।  

Updated By: Oct 1, 2012, 07:21 PM IST

উত্তর ২৪ পরগণা জেলা সিপিআইএমের ডাকা সমাবেশকে ঘিরে কার্যত জনজোয়ারে ভাসল কলকাতা। সমাবেশে যোগ দিতে সকাল থেকেই উত্তর ২৪ পরগণার বিভিন্ন জায়গা থেকে মিছিল করে সভাস্থলে আসেন মানুষ। কলকাতা পুলিসের মতে সোমবারের সমাবেশে প্রায় ১ লক্ষ ৭০ হাজার মানুষের জমায়েত হয়েছিল রানি রাসমনি অ্যাভেন্যুয়ে। থিকথিকে ভিড়ে ঠাসা জেলা সিপিআইএমএর সমাবেশ থেকে উঠে এসেছে রাজ্যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার বার্তাই।  
মূল মিছিল শুরু হয় শিয়ালদা স্টেশন থেকে। নৈহাটি, বনগাঁ, বারাকপুর, জগদ্দল, কাঁকিনাড়া, মধ্যমগ্রাম, দূর্গানগর থেকে তখন শহরের রাজপথের দখল নিয়েছে ১৫ থেকে ৮৫-র বাম কর্মী সমর্থকরা। বেলা ২টোয় রানি রাসমনি অ্যাভিন্যুতে যখন পুরোদমে ভাষণ দিচ্ছেন বিভিন্ন বক্তা, মিছিলের শেষ প্রান্ত তখনও শিয়ালদা স্টেশন ছাড়ায়নি। বেশ কিছু মানুষ এভাবেই সাক্ষী থাকলেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সিপিআইএম এর কলকাতা সমাবেশের।
কলকাতা পুলিসের দেওয়া হিসেব অনুযায়ী, সোমবারের মিছিলে পা মিলিয়েছেন কম-বেশি দু`লক্ষ দলীয় কর্মী সমর্থক। মিছিল যত এগিয়েছে ততই স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে মধ্য কলকাতা, এজেসি বোস রোড, সিআইটি রোড, বাইপাস, ক্যামাক স্ট্রিট, জহরলাল নেহরু রোড। নিজেদের মিছিলে নিজেরাই কখনও কখনও এগোতে পারেননি সিপিআইএম কর্মীরা।
আজকের সমাবেশ মঞ্চে একযোগে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন সিপিআইএম নেতারা। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, "রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় প্রতিদিনই মহিলাদের ওপর অত্যাচার বাড়ছে।" কিন্তু এবিষয়ে রাজ্য সরকার নির্বিকার থাকায় সমাজবিরোধীদের কাছে ইতিবাচক বার্তা যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন বুদ্ধবাবু।
সেইসঙ্গে, গোটা রাজ্য জুড়ে চাষিদের খারাপ অবস্থা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। অনাহার ও কৃষক আত্মহত্যার প্রসঙ্গ টেনে এনে তিনি অভিযোগ করেন, রাজ্য সরকার এসব বিষয়ে নজর দিচ্ছে না। শহরের ডেঙ্গি পরিস্থিতি যথেষ্ট ভয়াবহ আকার ধারণ করা সত্ত্বেও, রাজ্য সরকার তথ্য গোপন করছে বলে জানান এই বর্ষীয়ান সিপিআইএম নেতা। কেন্দ্রের জনবিরোধী নীতির প্রতিবাদে সব বাম দলগুলি একসঙ্গে লড়াই করবে বলে আজকের সমাবেশে জানানো হয়। লক্ষ মানুষের জমায়তকে কাজে লাগিয়ে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের লড়াইয়ের ডাক দিয়েছে সিপিআইএম নেতৃত্ব। বুদ্ধবাবু জানান, "পঞ্চায়েত নির্বাচনে আমরা জমি ছেড়ে আসব না।" প্রয়োজনে কর্মীদের নতুন করে জমি তৈরি করার নির্দেশ দেন তিনি।
একই সুর শোনা গিয়েছে অন্য সিপিআইএম নেতাদের গলাতেও। রাজ্যের পঞ্চায়েত ব্যবস্থার অবনতি হয়েছে বলে অভিযোগ করেন সকলে। সব মিলিয়ে, পঞ্চায়েত নির্বাচনে সর্বশক্তি দিয়ে নামতে চলেছে সিপিআইএম। এমনই বার্তা দেওয়া হয়েছে, সমাবেশে উপস্থিত কর্মী সমর্থকদের উদ্দেশ্যে।

.