রসিকামৃত্যুর নেপথ্যে তৃতীয় কারও অদৃশ্য প্রভাব? বাড়ছে রহস্য

জানা গিয়েছে, রসিকা-কুশলের মধ্যে প্রায়শই ঝগড়া হত।

Updated By: Mar 4, 2021, 02:46 PM IST
রসিকামৃত্যুর নেপথ্যে তৃতীয় কারও অদৃশ্য প্রভাব? বাড়ছে রহস্য

নিজস্ব প্রতিবেদন: যে-ফোনটি রসিকা সব চেয়ে বেশি ব্যবহার করতেন সেটির হদিস মিলছে না! রসিকার সঙ্গে তাঁর ননদের ফোনে যোগাযোগ হয়েছিল, তার তথ্য খোঁজা চলছে!

কলকাতার (kolkata) দুই শিল্পপতি পরিবারের মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্ক। বছর ঘুরতেই ঘনিয়ে এল বিষাদের ছায়া। রহস্যমৃত্যু রসিকা আগরওয়াল জৈনের। ২০১৯ সালে বিয়ে। ২০২০ সালে ঘটা করে অনুষ্ঠিত হল এক বছরের বিবাহবার্ষিকী। এদিকে এর ঠিক পরেই লকডাউনের (lockdown) লগ্ন। লকডাউনের ঘরবন্দি একান্ত দৈনন্দিনেই চমক ভাঙল রসিকার। স্বামী মাদকাসক্ত বলে অনুমান এবং পরে এ নিয়ে অভিযোগও দৃঢ় তাঁর। এ ছাড়া আরও নানা অশান্তির ঘটনাক্রম ছিল। অশান্তি, ঝগড়া। ১৬ ফেব্রুয়ারি শ্বশুরবাড়ির টেরেসের নীচে পাওয়া গিয়েছিল রসিকার দেহ। এটুকুই প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছিল-- এই মৃত্য়ু 'ফল ফ্রম হাইটে'র জেরে। উঁচু থেকে পড়ে মৃত্য়ু (death)। প্রশ্ন হল-- রসিকা নিজেই কি অসাবধানে পড়ে গিয়েছিলেন? সজ্ঞানে পড়েছেন, আত্মহত্যামানসে? নাকি, কেউ তাঁকে ঠেলে ফেলে দিয়েছে? উত্তর হাতড়াচ্ছেই গোয়েন্দাদল।

আরও পড়ুন: শিল্পপতি কন্যার মৃত্যুর পরতে পরতে রহস্য, কে এই রসিকা জৈন?

এই প্রেক্ষিতেই রসিকামৃত্যুর রহস্য কিন্তু ক্রমশ বাড়ছে। বা বলা ভাল, তা ক্রমশ নানা অচিন গোলকধাঁধার ঘন অন্ধকারে ঢুকে পড়ছে, মোড় নিচ্ছে, জটিল হচ্ছে। আপাতত, রসিকার বাপের বাড়ি রসিকাকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ জানিয়ে মামলা রুজু করেছে তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের বিরুদ্ধে। এবং সেই মোতাবেকই তদন্ত  এগোচ্ছে। 

আর সেই তদন্তেই বেরিয়ে আসছে নতুন সব তথ্য। যেমন- রসিকার মৃত্যুর ঘটনার ঠিক আগে দিল্লি থেকে কুশলের দিদি কথা বলেন ভাইয়ের বউ রসিকার সঙ্গে। রসিকা আর তাঁর ননদের মধ্যে ভিডিয়ো কল ও হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটের হদিস পায় পুলিস। ননদকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিস।

আগরওয়ালবাড়ির দুই ডোমেস্টিক হেল্প ও দুই ড্রাইভারকেও জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিস। জেরায় এই চার জন জানান, রসিকা কুশলের মধ্যে প্রায়শই ঝগড়া হত। দুজনেই মাথা গরম করে ফেলতেন। তাঁরাই জানান, ভ্যালেন্টাইন্স ডে'তেও তাঁদের ঝগড়া হয়। তবে কী নিয়ে ঝগড়া, তা তাঁরা বলতে পারেননি।

তবে পুলিস জানতে পারে, ভ্যালেন্টাইন্স ডে-তে কুশলের প্রাক্তন বান্ধবীর সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ রাখার প্রসঙ্গেই রসিকা-কুশল মতান্তর ঘটে। সেদিন একটি বিলাসবহুল রেস্তোরাঁয় তাঁদের খাওয়ার কথা ছিল। সেখানে গিয়েছিলেনও তাঁরা। কিন্তু সেদিন সেখান থেকেই ঝগড়া-বিবাদের শুরু।

পুলিস রসিকার দিদিকেও জিজ্ঞাসাবাদ করে।

এই ভাবে ক্রমশই রসিকা মৃত্যুরহস্য ঘনীভূত হচ্ছে। সন্দেহের বৃত্ত ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছে। স্বামীর মাদকাসক্তির প্রতিবাদ এবং তার জেরে নির্যাতন এবং তার ফলেই রসিকার মৃত্যু, নাকি এই মৃত্যুর নেপথ্যে গাঢ় হয়েছিল তৃতীয় কোনও পক্ষের প্রবল প্রভাব? কে জানে? ভ্যালেন্টাইন্স ডে'র রাতে কে বা কাদের নিয়ে তাঁদের ঝগড়া, কেনই-বা ঝগড়া, তা খতিয়ে দেখছে পুলিস। কাদের সঙ্গে কুশল ওই সময়-পর্বে যোগাযোগ রাখতেন দেখছে তা-ও। 

আরও পড়ুন: দুর্ঘটনা? খুন? আত্মহত্যা? অভিজাত ঘরে 'দমবন্ধ পরিবেশ' রসিকার

.