চিটফান্ড বিল পাস হলেও আইনের মার প্যাঁচে অধরাই থাকবে সারদার মত রাঘব-বোয়ালরা, স্বীকারোক্তি অর্থমন্ত্রীর
ঢাকঢোল পিটিয়ে চিটফান্ড বিল পাস হলেও সেই আইন দিয়ে সারদা -রোজভ্যালির মত চিটফান্ডদের রাগব বোয়ালদের কাউকেই ধরতে পারবে না সরকার। আর কার্যত তা স্বীকার করে নিলেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র এবং আইনমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টচার্য।
ব্যুরো: ঢাকঢোল পিটিয়ে চিটফান্ড বিল পাস হলেও সেই আইন দিয়ে সারদা -রোজভ্যালির মত চিটফান্ডদের রাগব বোয়ালদের কাউকেই ধরতে পারবে না সরকার। আর কার্যত তা স্বীকার করে নিলেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র এবং আইনমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টচার্য।
কেন্দ্র রাজ্য বিস্তর টানাপোড়েন, শাসক-বিরোধী উত্তপ্ত কাজিয়ার আপাত অবসান। বিধানসভায় পাস হয়ে গেল চিটফান্ড সংশোধনী বিল।কেন্দ্রের কয়েকটি সুপারিশ যেমন রাজ্য মানতে বাধ্য হল, তেমনই রাজ্যের কয়েকটি যুক্তিও মেনে নিল কেন্দ্রও। বিল এবার আইনে পরিনত হওয়া সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু বিতর্ক মিটল কী?
যে সারদা কাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে চিটফান্ড বিল নিয়ে নতুন করে উদ্যোগী হয় তৃণমূল সরকার, সেই সারদা কাণ্ডেরই বিচার কী নতুন আইনে সম্ভব?
উত্তর হল, না। শুধু সারদাই নয় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে আরও যে তেতাল্লিশটি ভুয়ো অর্থলগ্নী সংস্থার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত চলছে, তাদের কারোও বিরুদ্ধেই এই আইনে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব নয়।
কারণ, এই আইনেরই ২২ নম্বর ধারায় পরিষ্কার, আর্থিক অপরাধের ক্ষেত্রে কোনও রেট্রোস্পেক্টিভ এফেক্ট থাকছে না। অর্থাত্ এই আইন কার্যকর হওয়ার আগে, এই আইনের চোখে যা অপরাধ, তেমন কোনও অপরাধ কেউ বা কোনও সংস্থা করে থাকলে,
এই আইনে তার বিচার হবে না।
আসলে ফৌজদারি অপরাধের ক্ষেত্রে কোনও আইনে রেট্রোস্পেক্টিভ এফেক্ট রাখা কখনই সম্ভব নয়।
এই আইনে শুধুমাত্র শ্যামল সেন কমিশনের ক্ষেত্রে রেট্রোস্পেক্টিভ এফেক্ট রাখা হয়। অর্থাত্ আইনের বাইশের নম্বর ধারায় বলা হয়, আইন কার্যকর হওয়ার আগে গঠিত শ্যামল সেন কমিশন, কোনও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তদন্ত করে যদি সরকারের কাছে নেতিবাচক রিপোর্ট দেয়, সেই অপরাধ যদি আইন প্রণয়নের আগেও সংগঠিত হয়ে থাকে, শুধুমাত্র সেক্ষেত্রেই নতুন আইনে পুরনো অপরাধের বিচার হবে।
কিন্তু খোদ অর্থমন্ত্রীই জানিয়ে দিয়েছেন শ্যামল সেন কমিশন কারো বিরুদ্ধেই কোনও রিপোর্ট দেয়নি।
ঠিক এই জায়গাতেই সমালোচনায় সরব বিরোধীরা।
প্রশ্ন তুলছেন সাধারণ মানুষও। রাজ্যের লক্ষ লক্ষ মানুষ সর্বস্বান্ত হলেন যাদের জন্য, তাদেরই যদি এই আইনে বিচার না হয়, তাহলে এই আইন উপকার করবে কার? তাহলে কী সবটাই রাজনৈতিক চমক? সারদা অস্বস্তির হাত থেকে বাঁচতে শুধুই সময় কেনার কৌশল? উঠছে প্রশ্ন।