জলভর্তি বালতিতে ডুবে মৃত্যু মেটিয়াবুরুজের দেড় বছরের শিশুর

খেলতে খেলতেই বাথরুমে জলভর্তি বালতির মধ্যে ডুবে দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হল দেড় বছরের শিশুর। মর্মান্তিক ঘটনায় বাকরুদ্ধ মেটিয়াবুরুজের ব্রাহ্মসমাজ লেনের বাসিন্দারা।

Updated By: Feb 19, 2018, 05:27 PM IST
জলভর্তি বালতিতে ডুবে মৃত্যু মেটিয়াবুরুজের দেড় বছরের শিশুর

নিজস্ব প্রতিবেদন:  পাশের ঘরেই ছিলেন বাবা-মা।  ‘চোখের মণি’ নজর এড়িয়েছিল মাত্র এক মুহূর্তের জন্য। আর তাতেই ঘটে গেল চরম বিপত্তি। খেলতে খেলতেই বাথরুমে জলভর্তি বালতির মধ্যে ডুবে দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হল দেড় বছরের শিশুর। মর্মান্তিক ঘটনায় বাকরুদ্ধ মেটিয়াবুরুজের ব্রাহ্মসমাজ লেনের বাসিন্দারা।

আরও পড়ুন: অকথ্য যৌন অত্যাচারের পর গোপনাঙ্গে ঢোকানো হল ধাতব বস্তু, বেরিয়ে এল অঙ্গপ্রত্যঙ্গ!

আপাত সম্ভ্রান্ত পরিবার, ঝাঁ চকচকে কেতাদুরস্ত বাড়ি।  আর সেই বাড়িই মাতিয়ে রাখত নরেশ বেহড়ার ছোট্ট ছেলে রাজগোপাল। সবেমাত্র গুটি গুটি হাঁটা শিখেছিল সে। টলমল পায়ে সারা বাড়ি মাতিয়ে রাখত একরত্তি ছেলেটা। দু'কামরার ঘরের ড্রয়িং রুমই ছিল তার অবাধ বিচরণ ক্ষেত্র। আর তার ঠিক পাশেই বাথরুম। ছেলেকে সবসময় চোখে চোখেই রাখতেন নরেশবাবু ও তাঁর স্ত্রী। বাড়িতে ছিলেন আরও এক সদস্য। কিন্তু সকলের অলক্ষ্যে এক মুহূর্তের মধ্যে যে এই ঘটনা ঘটে যাবে তা ভাবতে পারেননি কেউই।

অন্যান্য দিনের মতো সোমবার সকালে নিজের কাজে ব্যস্ত ছিলেন নরেশবাবুর স্ত্রী। নরেশবাবু সেসময় বাইরে ছিলেন। কিছুক্ষণের জন্য বাড়িতে আসার পর স্ত্রীর সঙ্গে প্রয়োজনীয় কথা বলতে ঘরে গিয়েছিলেন।  পরিবারের দাবি, তখন ড্রয়িং রুমেই ঘোরাফেরা করছিল ছোট্ট রাজগোপাল। কিন্তু  দরজা খোলা থাকায়, কখন যে সে বাথরুমে ঢুকে পড়ে, তা খেয়াল করেননি কেউ। অনেকক্ষণ ছেলের কোনও সাড়াশব্দ না শুনতে পেয়ে টনক নড়ে নরেশবাবু ও তাঁর স্ত্রীর। দেখেন, বাথরুমে জলভর্তি বালতির মধ্যে মুখ থুবড়ে পড়ে রয়েছে রাজগোপাল।

এক নিমেষের মধ্যে যেন গোটা পৃথিবীটা অন্ধকার হয়ে যায় নরেশবাবু ও তাঁর স্ত্রীর। ছেলেকে এরপর বালতি থেকে তুলে অনেক নাড়াচাড়া করেন। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ হয়ে গিয়েছে। রাজগোপালের ছোট্ট শরীরে তখন আর কোনও সাড়া নেই।  

আরও পড়ুন: ট্রাফিক সার্জেন্টের বেমক্কা চড়ে বেহুঁশ ভ্যানচালক

বুক ফাটা কান্নায় ততক্ষণে বিষয়টি জানতে পেরে গিয়েছেন পড়শিরাও। খবর গিয়েছে থানাতেও। পুলিস গিয়ে ছোট্ট রাজগোপালের দেহ উদ্ধার করে। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় শিশুটির বাবা-মাকেও। কীভাবে বাবা-মায়ের সামনেই এই ঘটনা ঘটল, এটা নিছক দুর্ঘটনা না কি এর নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ রয়েছে, সবই খতিয়ে দেখছে পুলিস।

আরও পড়ুন: তোর ছবি ভাইরাল করব এখনই, কলেজছাত্রীদের ছবি বিকৃত করে হোয়াটসঅ্যাপে ব্ল্যাকমেলিং যুবকের

ব্রাহ্মসমাজ লেনের ওই বাড়িতে এখনও ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ছোট্ট রাজগোপালের খেলনা। বাথরুমে এখনও পড়ে রয়েছে সেই জলভর্তি বালতিও। কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, পড়শিদের কানাঘুষো। কীভাবে এতটুকু ছোটো ছেলেকে ছেড়ে দিল বাবা-মা, কীভাবে এতটা উদাসীন হতে পারলেন তাঁরা, সমালোচনায় মুখর হয়েছেন অনেকেই। অনেকে আবার সমবেদনার ভাষা হারিয়ে বলছেন, ওঁদের কপালে ছিল, তাই হয়েছে..

.