অভাব উপেক্ষা করে দত্তক

পর পর পাঁচবার মেয়ে। ফলে পুত্রসন্তান না থাকার আক্ষেপ ছিল। আর ছিল একরাশ অভাব। পেশায় সব্জি ব্যবসায়ী অধীর হালদারের অভাব এখনও আছে। তবে এবার বেধহয় সরিয়ে ফেলতে পারবেন আক্ষেপটাকে।

Updated By: Dec 27, 2011, 11:00 PM IST

পর পর পাঁচবার মেয়ে। ফলে পুত্রসন্তান না থাকার আক্ষেপ ছিল। আর ছিল একরাশ অভাব। পেশায় সব্জি ব্যবসায়ী অধীর হালদারের অভাব এখনও আছে। তবে এবার বেধহয় সরিয়ে ফেলতে পারবেন আক্ষেপটাকে। রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে অবাঞ্ছিত এক সদ্যোজাতকে পুত্র হিসেবে দত্তক নিতে উদ্যোগী নিউ টাউনের ন্দননগরের বাসিন্দা হালদার দম্পতি। স্বাধীনতার ৬৪ বছর পর এখনও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে, আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েই রাস্তায় ফেলে যাওয়া হয় একাধিক অবাঞ্ছিত শিশুকে। সরকারি হোমেই জায়গা হয় ব্রাত্য এইসব শিশুদের। তবে সেক্ষেত্রেও চূড়ান্ত বঞ্চনা এবং অবহেলার শিকার হয় এই শিশুরা। তবে এই ঘটনার এক নিরব প্রতিবাদে এবার নজির গড়লেন নিউটাউন থানার নন্দননগরের বাসিন্দা অধীর হালদার। শুধুই রাস্তা থেকে এক সদ্যোজাত শিশুকে তুলে নিজের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া নয়। এবার সেই শিশুটিকে দত্তকও নিতে চান হালদার দম্পতি। পেশায় সামান্য সব্জি বিক্রেতা অধীরবাবুর সংসারে অভাব অনটন নিত্য সঙ্গী। তবে তাতে দমবার নন অধীরবাবু। মঙ্গলবার ভোররাতে পাইকারি দরে সব্জি কিনতে যাচ্ছিলেন তিনি। সেই সময়েই বাগজোলা খাল লাগোয়া রাস্তার ধারে আবর্জনার স্তূপের মধ্যেই এক সদ্যোজাত শিশুকে পড়ে থাকতে দেখেন অধীরবাবু। 
শুনশান রাস্তায় শিশুটিকে ঘিরে থাকা একাধিক কুকুরের চিত্কারেই বিষয়টি লক্ষ্য করেন অধীর হালদারের। সঙ্গীর সাহায্যে কুকুর তাড়িয়ে কোলে তুলে নেন সদ্যোজাতটিকে। ঠিক করে ফেলেন হালদার পরিবারেই ঠাঁই হবে অবাঞ্ছিত এই সদ্যোজাতর। সদ্যোজাত শিশুটিকে নিয়ে যান চিকিত্সকরের কাছেও। কিনে ফেলেন সদ্যোজাতের প্রয়োজনীয় যাবতীয় সরঞ্জামও। স্ত্রী এবং পাঁচ মেয়েকে নিয়েই অভাবের সংসার অধীরবাবুর। পর পর পাঁচবার কন্যাসন্তান জন্মানোয় সাংসারিক অশান্তিও কম হয়নি।  আত্মীয়দের কাছে হেনস্থা হতে হয়েছে অধিরবাবুর স্ত্রী মিনতীদেবীকেও। তাই এই শিশুটিকে নিজের ছেলের মতো বড় করতে আগ্রহী মিনতী হালদার।  তবে শুধুই পুত্র সন্তান না থাকার আক্ষেপ নয়,বরং অবাঞ্ছিত শিশুটিকে সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠা দিতেই হালদার দম্পতির এই পদক্ষেপ। শিশুটিক আইন মোতাবেক দত্তক নিতে আগ্রহী হালদার দম্পতি। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থারও দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা।
 

.