বিষাদের বিজয়ায় বাঙালি ব্যস্ত বিসর্জন আর শুভেচ্ছায়

ষষ্ঠী থেকে নবমী, `খুশী নৌকা`-র পালে হাওয়া দিয়ে কাটিয়ে দেওয়া ৪টে দিনের অবসান। আজ মনকেমনের দশমী। দেবী দুর্গার ফিরে যাওয়ার পালা। প্রথম শাড়ি, অল্প ঝারি, নতুন প্রেম, পায়ে ফোস্কা, প্রেমিকের গার্জেনগিরি সব খতম। আবার ফিরে যাওয়া বচ্ছর ভর অপেক্ষার দিকে।

Updated By: Oct 24, 2012, 10:18 AM IST

ষষ্ঠী থেকে নবমী, `খুশী নৌকা`-র পালে হাওয়া দিয়ে কাটিয়ে দেওয়া ৪টে দিনের অবসান। আজ মনকেমনের দশমী। দেবী দুর্গার ফিরে যাওয়ার পালা। প্রথম শাড়ি, অল্প ঝারি, নতুন প্রেম, পায়ে ফোস্কা, প্রেমিকের গার্জেনগিরি সব খতম। আবার ফিরে যাওয়া বচ্ছর ভর অপেক্ষার দিকে। ফিরে যাওয়া সক্কাল সক্কাল নাকে মুখে গুঁজে ভিড় বাসে ট্রামে ঠেলাঠেলি করে স্কুল, কলেজ, আফিস যাত্রার দিকে। আবার সেই অটোর চোখ রাঙানি, আর ট্যাক্সি ড্রাইভারদের সঙ্গে উদুম ঝগড়া। আবার করে মাস ফুরলে গড়ের মাঠ পকেটের চিন্তায় কপালে ভাঁজ। বাড়তে থাকা বাজার দরের আগুনে পুড়তে থাকা মধ্যবিত্তের আবার শুধু দিন গোনা। তার মধ্যেই দশমীকে আঁকড়ে ধরে বাকি থাকা আনন্দটুকু দু`হাত পেতে চেটেপুটে খেতে প্রস্তুত আপামর বাঙালি।

বছরে মাত্র একবার বাপের বাড়ি আসা। তাও মাত্র ৪ টে দিনকে সঙ্গে করে। তাতে কি মন ভরে? কিন্তু কিছু করারও নেই। যেতে দিতেই হবে। না, হলেই পেট মোটা শিব ঠাকুরের গোঁসা হবে। বাউন্ডুলে জামাইকে সমঝে চলে সব বাঙালিই। শ্বশুর বাড়িতে মেয়ের সুখের কাছে ৩৬১ দিনের যান্ত্রিক জীবনের কষ্ট যে বড়ই তুচ্ছ। তাই হাসিমুখে উমা কে বিদায়ের আগে জোরকদমে ঘরে ঘরে চলছে বিজয়ার মিষ্টিমুখের তোড়জোর। সঙ্গে বারোয়ারি থেকে আবাসন, সব মণ্ডপেই সিঁদুর খেলার প্রস্তুতি।
চারপাশে এখন বেশ আসন্ন শীতের শিরশিরে আমেজ। তার মাঝেই দুর্গার ফিরে যাওয়ার দিন। ইঁট-কাঠ-পাথরের শহুরে সীমানা ছাড়িয়ে একটু এগিয়ে গেলেই শরৎ কিছু বিক্ষিপ্ত কাশ ফুল উপহার দিয়েছিল। আজ তারাও বড় চুপচাপ। আইসক্রিম-মেঘের নীল আকাশের মুখ কেউ যেন দুমড়ানো কালো মনখারাপের প্লাস্টিকে ঢেকে দিয়েছে। দৈনন্দিন জীবনের বাঁধা হিসাবে আবদ্ধ বাঙালি আসলে পুজোর চারটে দিনে মুক্তির ছোঁয়া পায়। সারা বছরে লুকিয়ে থাকা ইচ্ছেডানা গুলো এদিক ওদিক থেকে বেরিয়ে আসে। খুশিয়াল মেজাজে ভর করে তাদের চারদিন অবাধ ওড়াউড়ির আজ সমাপ্তি। আবার তাদের গুটিয়ে যাওয়ার পালা। এবার ফিরে চলা প্রতীক্ষার কাছে। তবে মনের মধ্যে আবিরাম ঢাকের বাদ্যি কিন্তু জানান দিয়ে যায় ... আসছে বছর আবার হবে।
মন খারাপের সঙ্গেই আজ যে মিষ্টিমুখের দিন। বিভিন্ন দোকানে পসরা সাজিয়ে ব্যস্ত দোকানীরা। নতুন মিষ্টির সঙ্গে হাজির নিকুতি, গজার মত ক্রমশ ভুলতে বসা মিষ্টিগুলিও।
বিসর্জন উপলক্ষ্যে রাজ্য সরকারের তরফে বাবু ঘাটে আয়োজন করা হয়েছিল। বিশেষ সিঁদুর খেলার। হাজির ছিলেন, রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী মদন মিত্র, অভিনেত্রী জুন মালিয়া সহ অন্যান্যরাও।

.