দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ, শোকজের পর সাময়িক বরখাস্ত রীতেশ-জয়প্রকাশ
শৃঙ্খলাভঙ্গ কমিটির তদন্ত শেষ না পর্যন্ত এই নির্দেশই বহাল থাকবে
![দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ, শোকজের পর সাময়িক বরখাস্ত রীতেশ-জয়প্রকাশ দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ, শোকজের পর সাময়িক বরখাস্ত রীতেশ-জয়প্রকাশ](https://bengali.cdn.zeenews.com/bengali/sites/default/files/2022/01/24/362462-6.jpg)
নিজস্ব প্রতিবেদন: প্রকাশ্য়ে দলবিরোধী মন্তব্য করার জন্য রবিবারই জয়প্রকাশ মজুমদার ও রীতেশ তিওয়ারিকে শোকজ করে রাজ্য বিজেপি। ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই তাদের দু'জনকে সাময়িক ভাবে সাসপেন্ড করল দল। দলের তরফে বলা হয়েছে শৃঙ্খলাভঙ্গ কমিটির তদন্ত শেষ না পর্যন্ত এই নির্দেশই বহাল থাকবে।
সোমবার রাজ্য বিজেপির তরফে সুকান্ত মজুমদারের নির্দেশে রাজ্য বিজেপির তরফে এক নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, দুই নেতার বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে। সেই তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হচ্ছে দুই নেতাকে।
উল্লেখ্য, শোকজ নোটিস পাওয়ার পর দুই নেতা জানিয়েছিলেন দলের শোকজ নোটিসের জবাব তারা চিন্তাভাবনা করে দেবেন। এবার দলের তরফে বরখাস্ত করে বোঝানো হল শোকজ নোটিসের জবাব যতক্ষণ পর্যন্ত না তাঁরা দেন বা শৃঙ্খলাভঙ্গ কমিটি তাঁদের বিরুদ্ধে যতক্ষণ না কোনও সিদ্ধান্ত না নেন ততক্ষণ বরখাস্তই থাকবেন দুই নেতা। এক কথায় দলের শীর্ষ দুই নেতার বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নিল রাজ্য বিজেপি।
বরখাস্তের এই ফরমান নিয়ে রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার(Sukanta Majumdar) বলেন, দলের শৃঙ্খলাভঙ্গের জন্য ২ নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দলে কোনও বিক্ষোভ নেই। তবে দলের বিরুদ্ধে মিডিয়াতে বলা নিরম বহির্ভূত। কোনও সমস্যা হলে দলের মধ্য়ে মুখ খোলা যেতে পারে। দলের বাইরে নয়। দলের শৃঙ্খলাভঙ্গ কমিটি ও নেতৃত্বের মনে হয়েছে এখন এরকম সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন। তাই এই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
কিছুদিন ধরেই রাজ্য বিজেপিতে একের পর এক হোয়াটসঅ্যাপ বিদ্রোহ, দল ছাড়া লেগেই ছিল। পাশাপাশি, কোথায় বৈঠক, কোথাও পিকনিকের নামে শান্তনু ঠাকুরের(Shantanu Thakur) নেতৃত্বে বেসুরোরা ক্রমশই এককাট্টা হচ্ছিলেন। সবেমিলিয়ে একটা ডামাডোলের পরিস্থিতি ক্রমেই তৈরি হচ্ছিল। তাই একপ্রকাশ বাধ্য় হয়েই এই ব্যবস্থা নিল দল। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল শৃঙ্খলাভঙ্গের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ প্রথম নেওয়া হল একেবারে গুরুত্বপূর্ণ দুই নেতার বিরুদ্ধে। এভাবেই দলের সর্বস্তরে একটা বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করল রাজ্য বিজেপি।
রাজ্যের একাধিক নেতার বেসুরো মনোভাবের পাশাপাশি প্রকাশ্য়ে বেসুরো গাইছিলেন তথাগত(Tathagata Roy), দিলীপ ঘোষরা(Dilip Ghosh)। ফলে কিছুটা কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল দলীয় নেতৃত্ব। ফলে একটা প্রশ্ন উঠছিল, আদৌ কি রাজ্য নেতৃত্ব বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে? সূত্রের খবর বেসুরোরা দিল্লি যাওয়ার পরিকল্পনাও করেছিলেন। তার পরেই এই পদক্ষেপ।
আরও পড়ুন-রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা নামল ৫ হাজারের নীচে
রাজ্যে বিজেপি সূত্রে খবর, দলের নেতারা মনে করছেন শোকজ করার পরও জয়প্রকাশ ও রীতেশ চুপ করেননি। সংবাদমাধ্যমে একাধিক মন্তব্য করেছেন। সেই কারণেই দলের তরফে এই কড়া অবস্থান নেওয়া হয়েছে। তা না নেওয়া হলে দলের ভাবমূর্তি অত্যন্ত ক্ষুন্ন হবে। বিধানসভা ভোটের পর দলে যে ভাঙন ধরেছে, ডামাডোল শুরু হয়েছে তা আরও বেড়ে যাবে।
রবিবার রীতেশ ও জয়প্রকাশকে শোকজ করার পর কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর প্রশ্ন তুলেছিলেন, যারা তাঁর সঙ্গে বৈঠক করবেন তাদেরই কি দল শোকজ করবে? এখন এই দুজনকে বরখাস্ত করার পর বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠী কি আরও সরব হবে? রাজনৈতিক মহলের অভিমত, দলের যে দুই শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে বরখাস্ত ফরমান জারি করা হয়েছে তার পেছনে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সায় নেই এটা মনে করার কোনও কারণ নেই। কারণ এই ধরনের পদক্ষেপের লক্ষ্য কিন্তু শান্তনু ঠাকুরের মতো হেভিওয়েটরাও। তবে এই ব্যবস্থা নেওয়ার পরই বিক্ষোভ কতটা কমবে তা নিয়ে একটা প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।