তৃণমূলের বিরুদ্ধে 'প্রমাণ' কিনতে ম্যাথুকে ২ কোটি, বিস্ফোরক অডিও ফাঁসে ব্যবস্থা মুকুলের
ডিও ক্লিপটি শুনে মনে হচ্ছে, বিজেপির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে ফোন করেছেন মুকুল রায়।
নিজস্ব প্রতিবেদন: এক সপ্তাহের মধ্যে মুকুল-কৈলাসের আরও একটি ফোনালাপ ভাইরাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। আর এব্যাপারে আরও বিস্ফোরক তথ্য জনসমক্ষে। এরপরই দিল্লি হাইকোর্টের শরণাপন্ন হওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন মুকুল রায়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল অডিওটিতে একটি কণ্ঠস্বর কৈলাস বিজয়বর্গীয়র, আর একটি মুকুল রায়ের। এক্ষেত্রেও অডিওটির সত্যতা পরীক্ষা করেনি জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল। দুজনের কথোপকথন আন্দাজ মিলছে, ম্যাথু স্যামুয়েলের (পড়ুন নারদ স্টিং অপারেশন) কাছে তৃণমূলের একটি ২৪ ঘণ্টার ভিডিও রয়েছে। যে ভিডিওটিতে অনেক বড় কিছু ফাঁস হতে পারে। সেই জন্য ২ কোটি টাকা দাবি করছেন ম্যাথু স্যামুয়েল।
অডিও ক্লিপটি শুনে মনে হচ্ছে, বিজেপির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে ফোন করেছেন মুকুল রায়। মুকুলকণ্ঠী ফোনে বলছেন, ম্যাথুর কাছে ২৪ ঘণ্টার একটি তথ্যচিত্র রয়েছে। তা সামনে আসলে ধ্বংস হয়ে যাবে তৃণমূল। ২ কোটি টাকা দাবি করেছেন ম্যাথু স্যামুয়েল। টাকাটা পাঠাতে হবে হংকংয়ে। আগাম ৫০ লক্ষ টাকা, বাকি টাকা ২০ দিনের মধ্যে মেটাতে হবে।
ভাইরাল অডিওয় কৈলাস বিজয়বর্গীয়র কণ্ঠ বলছেন, জুয়াটা খেলা যেতে পারে। জুয়াটা খেলা উচিত। তখনই মুকুল রায়ের কণ্ঠস্বর থেকে শোনা যায়, 'হ্যাঁ জুয়া খেলতে রাজি। তবে আপনার সঙ্গে কথা হওয়ার পর'।
এই অডিওক্লিপটি ভাইরাল হওয়ার পর ফের একবার তোলপাড় হয় রাজ্য রাজনীতি। ক্লিপটি প্রকাশ্যে আসার পর দিল্লি হাইকোর্টের শরণাপন্ন হয়েছেন মুকুল রায়। তাঁর অভিযোগ, তাঁর ফোনে আড়ি পাতছে রাজ্য সরকার।
গত ২ অক্টোবর আর একটি অডিওক্লিপ ভাইরাল হয়েছিল। কথোপকথনটি শুনে মনে হয়েছিল, মুকুল রায়কে ফোনটি করেছিলেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়। ফোনে মতুয়া ভোট টানা ও চার আইপিএস অফিসার 'নিয়ন্ত্রণে'র করার কথা শোনা গিয়েছে মুকুল রায়ের মুখে। দূরাভাষে কৈলাস বিজয়বর্গীয় জানান, মতুয়া পরিবারের শান্তনু রায় তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন। অস্ট্রেলিয়া নিবাসী শান্তনু বিজেপির হয়ে মাঠে নামতে চায়। বিভিন্ন জায়গায় প্রচারের জন্য একটি গাড়ি চেয়েছেন তিনি। ছেলেটি তাঁর মনে ধরেছে বলেও মুকুলকে জানান কৈলাস বিজয়বর্গীয়। তাঁর কথায়, ''ছেলেটা বেশ স্পার্কিং''। মুকুলবাবু তখন কৈলাসকে আশ্বস্ত করেন, তাঁর সঙ্গে দেখা করলে শান্তনুকে সব কিছু দিয়ে সহযোগিতা করবেন। এমনকি এক সাংসদকে ভাঙিয়ে আনার কথাও মুকুলবাবু ফোনে বলেছেন। এর পাশাপাশি মুকুল রায় মনে করিয়ে দেন, ২০১৬ সালে শান্তনুর দাদা সুব্রত ঠাকুর বিজেপির প্রার্থী ছিলেন বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রে। তিনি গরু পাচারে যুক্ত ছিলেন। কৈলাসকে মুকুল পরামর্শ দেন, ''মঞ্জুরকৃষ্ণ ঠাকুরের স্ত্রী শঙ্করের মা স্পার্কিং। ফাইটিং লেডি''।
উল্লেখ্য, বিজেপিতে যোগদানের পর ফোনে আড়িপাতার অভিযোগে দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন মুকুল রায়। এব্যাপারে রাজ্য সরকারের বক্তব্য জানতে চায় আদালত। সেই মতো নথি জমা দেয় সরকার। এরপর দিল্লি হাইকোর্ট জানায়, উপযুক্ত তথ্য প্রমাণের অভাবে মুকুল রায়ের অভিযোগ খারিজ করা হল। তবে ফের চাইলে মুকুল আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন বলে জানান বিচারপতি।
আরও পড়ুন- শ্রীভূমির মণ্ডপে ছবি বিতর্কে প্রতিক্রিয়া ফিরহাদ হাকিমের