টার্গেটে পৌঁছতে পারলেন না কেন? বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বের কাছে উষ্মাপ্রকাশ অমিতের

২ থেকে ঝাঁপ দিয়ে একেবারে ১৮। উচ্ছ্বাসে ভাসছেন বাংলার বিজেপি নেতানেত্রীরা। এত ভাল ফলের পরও অবশ্য না-খুশ অমিত শাহ। 

Updated By: Jun 5, 2019, 11:36 PM IST
টার্গেটে পৌঁছতে পারলেন না কেন? বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বের কাছে উষ্মাপ্রকাশ অমিতের

অঞ্জন রায়

২৩টি আসনের টার্গেট দিয়েছিলেন অমিত শাহ। কিন্তু তার আগেই থমকে গেল বঙ্গ বিজেপি। পাঁচটি আসন কম পেয়েছে তারা। ফল আশাতীত হলেও সন্তুষ্ট নন অমিত শাহ। বরং তাঁর উষ্মার মুখে পড়লেন বঙ্গ বিজেপি নেতারা।         

২ থেকে ঝাঁপ দিয়ে একেবারে ১৮। উচ্ছ্বাসে ভাসছেন বাংলার বিজেপি নেতানেত্রীরা। এত ভাল ফলের পরও অবশ্য না-খুশ অমিত শাহ। রাজ্য থেকে প্রাথমিকভাবে ২২টি আসন জেতার লক্ষ্য নিয়ে নেমেছিলেন অমিত শাহ। সেই মতো আসনগুলি বেছেও নিয়েছিল বিজেপি। পুরুলিয়ায় গিয়ে সেই টার্গেট ২৩ করে দেন অমিত শাহ। সর্বভারতীয় সভাপতি বলেছিলেন, পুরুলিয়ার আসন ধরে ২৩টি জিতবেন তাঁরা। ভোটের ফলপ্রকাশের পর দেখা যায়, ২৩টি আসনে পৌঁছতে পারেনি বিজেপি। ১৮-এ থমকে গিয়েছে তারা। এহেন ফলাফলের পর বাহবা পাওয়ার কথা রাজ্য নেতাদের। কিন্তু, না! অমিত শাহ লক্ষ্যপূরণ না হওয়ায় খানিকটা হতাশ। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতির মতে, অন্তত চারটি আসনে তাঁদের জয়ের সম্ভবনা অত্যন্ত প্রবল ছিল। 

কোন ৪টি?                  

ঘাটালে তৃণমূল সাংসদ দেবের কাছে হেরে গেছেন ভারতী ঘোষ। বীরভূমে দুধকুমার মণ্ডলকে হারিয়ে দেন শতাব্দী রায়। আরামবাগে সামান্য ব্যবধানে ফের জয়ী হন অপরূপা পোদ্দার। কৃষ্ণনগরে কল্যাণ চৌবেকে হারিয়ে দেন মহুয়া মৈত্র।

মন্ত্রিসভার শপথের দিন, রাতে বাংলার বিজেপি নেতাদের দিল্লির বাড়িতে ডাকেন অমিত শাহ। সূত্রের খবর, সেখানেই এই চারটি আসন হাতছাড়া হওয়ায় উষ্মা প্রকাশ করেন তিনি। বাংলার নেতাদের তিনি মনে করিয়ে দেন, ঘাটাল, বীরভূম, আরামবাগ এবং কৃষ্ণনগর দখল করতে পারলে তৃণমূলের চেয়ে এগিয়ে থাকত বিজেপি। বিধানসভা নির্বাচনের আগে, যা দলকে বাড়তি অক্সিজেন দিত।

ঘাটালে গতবারের তুলনায় তৃণমূলের জয়ের ব্যবধান কমেছে প্রায় দেড় লাখ। বীরভূমে অবশ্য তৃণমূলের জয়ের ব্যবধান কিছুটা বেড়েছে। আরামবাগে হাজারখানেক ভোটে জিতেছে তৃণমূল। ব্যবধান কমেছে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ। কৃষ্ণনগরে গতবারের তুলনায় তৃণমূলের জয়ের ব্যবধান কমেছে প্রায় ১০ হাজার। 

ভোটের আগে এই চারটি আসনকেও পাখির চোখ করেছিল বিজেপি। অমিত শাহর মতে, প্রধানমন্ত্রী ১৭টি সভা করার পর, নেতাকর্মীরা যথাযথ পরিশ্রম করলে এই আসনগুলিতে জয় আসতই। দলকে তাঁর নির্দেশ, আত্মতুষ্টির জায়গা নেই। বিধানসভা ভোট পর্যন্ত দাঁতে দাঁত চেপে লড়ে যেতে হবে। অধিকাংশ পরাজিত প্রার্থীকে লোকসভা কেন্দ্রে মাটি কামড়ে পড়ে থেকে আন্দোলন সংগঠিত করার নির্দেশও দেন অমিত শাহ। সেই মতো হাজরায় দলের নির্বাচনী পর্যালোচনা সভায় হেরো প্রার্থীদের এলাকায় পড়ে থেকে মানুষের সেবা করার নির্দেশ দিয়েছেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়। বিজেপির এহেন কৌশল নতুন নয়। অমেঠিতে রাহুল গান্ধীর সঙ্গে হারের ব্যবধান গতবার এক লাখে নামিয়ে এনেছিলেন স্মৃতি ইরানি। পাঁচ বছর ওই কেন্দ্রে পড়ে থাকার পর কংগ্রেস সভাপতিকে তাঁর গড়েই মাত দিয়েছেন বিজেপি প্রার্থী। গান্ধীদের গড়ে কংগ্রেস সভাপতিকে যদি পড়ে থেকে হারানো যায়, তবে অসম্ভব কিছুই নয়। সেই টোটকাই বাংলার নেতানেত্রীদের দিলেন শীর্ষ নেতৃত্ব, মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের। 

আরও পড়ুন- একুশের আগে রাজ্যজুড়ে ঘাসফুল ছাঁটতে বিজেপির দাওয়াই 'ভাটপাড়া' মডেল

.