পাহাড়-তরাই-জঙ্গলমহলের মন জয়ের চেষ্টা বাজেটে
"বিগত সরকারের ভ্রান্তনীতিতে তরাই, পার্বত্য অঞ্চল অশান্ত হয়ে উঠেছিল, জঙ্গলমহলে উন্নয়ন হয়নি, উন্নয়ন হয়নি পিছিয়ে পড়া জেলায়"! নিছক সরকারি আয় ব্যয়ের হিসেব নয়, দলনেত্রীর ইচ্ছেকে শিরোধার্য করে তাঁকে যে আদ্যন্ত রাজনৈতিক বাজেট পেশ করতে হচ্ছে, বক্তৃতার সূচনাপর্বেই তাঁর স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছিলেন অমিত মিত্র। তিন দশক পর রাজ্য বিধানসভায় পেশ হওয়া প্রথম পূর্ণাঙ্গ `অ-বাম বাজেট`-এর ছত্রে ছত্রে ছিল সেই রাজনৈতিক দায়বদ্ধতা পালনের প্রতিচ্ছবি। আর জনমোহিনী রাজনীতির চেনা পথে হেঁটেই বাজেট বক্তৃতায় `অশান্ত` পাহাড়-তরাই আর উন্নয়নের লেখচিত্রে `পিছিয়ে পড়া` জঙ্গলমহলের তিন জেলার জন্য কিছু নতুন প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছেন তিনি।
"বিগত সরকারের ভ্রান্তনীতিতে তরাই, পার্বত্য অঞ্চল অশান্ত হয়ে উঠেছিল, জঙ্গলমহলে উন্নয়ন হয়নি, উন্নয়ন হয়নি পিছিয়ে পড়া জেলায়"! নিছক সরকারি আয় ব্যয়ের হিসেব নয়, দলনেত্রীর ইচ্ছেকে শিরোধার্য করে তাঁকে যে আদ্যন্ত রাজনৈতিক বাজেট পেশ করতে হচ্ছে, বক্তৃতার সূচনাপর্বেই তাঁর স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছিলেন অমিত মিত্র। তিন দশক পর রাজ্য বিধানসভায় পেশ হওয়া প্রথম পূর্ণাঙ্গ `অ-বাম বাজেট`-এর ছত্রে ছত্রে ছিল সেই রাজনৈতিক দায়বদ্ধতা পালনের প্রতিচ্ছবি। আর জনমোহিনী রাজনীতির চেনা পথে হেঁটেই বাজেট বক্তৃতায় `অশান্ত` পাহাড়-তরাই আর উন্নয়নের লেখচিত্রে `পিছিয়ে পড়া` জঙ্গলমহলের তিন জেলার জন্য কিছু নতুন প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর দার্জিলিং সফরে গিয়ে পাহাড়ের উন্নয়ন এবং সেখানকার অধিবাসীদের কর্মসংস্থানের জন্য সুসংহত পরিকল্পনা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন অমিত মিত্রের পেশ করা সাধারণ বাজেটে দার্জিলিং পার্বত্য অঞ্চল উন্নয়নে ১১৮.০৪ কোটি বরাদ্দ করা হয়েছে। দার্জিলিঙে নেপালি অ্যাকাডেমি চালু, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাস গড়া এবং নতুন কলেজ স্থাপনের কথা বলা হলেও নতুন কোনও কর্মসংস্থানমুখী প্রকল্পের ঘোষণা নেই বাজেটে। সামগ্রিকভাবে রাজ্যের পর্যটন ক্ষেত্রে বরাদ্দের পরিমাণ ৪৪ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ৯০ কোটি ধার্য করার প্রস্তাব থাকলেও এর কতটা অংশ পাহাড় বা ডুয়ার্স এলাকার জন্য ধার্য করা হবে, তা এখনও অস্পষ্ট। যেমন স্পষ্ট নয় উত্তরবঙ্গের উন্নয়ন দফতরের জন্য বরাদ্দ ২০০ কোটি টাকা খরচের রূপরেখা। এদিনের বাজেট প্রস্তাবে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে সাঁওতালি ও হিন্দীতে নতুন পাঠ্যক্রম চালু, কোচবিহারে নতুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা আর জলপাইগুড়িতে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন শাখা খোলার প্রস্তাবের মধ্যেই থেকে সীমাবদ্ধ গিয়েছে রাজ্যের নয়া শাসকদের তরাই এলাকার উন্নয়ন-ভাবনা।
২০১২-১৩ অর্থবর্ষের রাজ্য বাজেটে জঙ্গলমহলের উন্নয়নের জন্য ২১০.৮৬ কোটি টাকা ধার্য করার প্রস্তাব পেশ করেছেন অমিত মিত্র। দার্জিলিঙে নেপালি অ্যাকাডেমি`র মতোই জঙ্গলমহলে সিধু-কানহু অ্যাকাডেমি গড়ার কথা ঘোষণা করেছেন তিনি। ১১টি অনগ্রসর জেলায় সড়ক সংস্কারের উদ্দেশ্যে পূর্ত দফতরে ৩৩.৩০% বরাদ্দবৃদ্ধির একটা বড় অংশ পাবে জঙ্গলমহল। পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়নে বরাদ্দ ২০৫.৬ কোটি টাকার মধ্যেও অংশিদারিত্ব থাকবে পুরুলিয়া-বাঁকুড়া-পশ্চিম মেদিনীপুরের পিছিয়ে পড়া অঞ্চলগুলির। ঝাড়গ্রামে `স্বাস্থ্য জেলা` প্রকল্প রূপায়ণ, লালগড়ে ডিগ্রি কলেজ নির্মাণ, কেলেঘাই-কপালেশ্বরী নদী প্রকল্প, বালিচকে নতুন সেতু তৈরি, বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে হিন্দি ও সাঁওতালি ভাষায় নতুন পাঠ্যক্রম চালুর মতো প্রস্তাব রয়েছে অর্থমন্ত্রীর এদিনের বাজেট বক্তৃতায়।