ম ব্লঁ থেকে ভারতী- অজয়নগরে শুক্লা রায়ের ঘরে ঝরনা কলমের একটুকরো ইতিহাস
কলকাতার অজয়নগরের বাসিন্দা শুক্লা রায়। তাঁর ঘর যেন সময়ের দলিল।
অঞ্জন রায়: সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় লিখেছিলেন ভালবাসলে পাথরও ঝরনা হয়ে যায়। কলকাতার শুক্লা রায়ের কালেকশন দেখলে মনে হবে, ভালবাসা পেলে ঝরনা কখনও শুকোয় না। হারিয়ে যাওয়া ঝরনা কলমের আস্ত সংগ্রহশালা গড়ে তুলেছেন শুক্লাদেবী। তাঁর সংগ্রহে রয়েছে করে কম করে ৫০০টি ফাউন্টেন পেন বা ঝরনা কলম।
কলকাতার অজয়নগরের বাসিন্দা শুক্লা রায়। তাঁর ঘর যেন সময়ের দলিল। কুলীন গোত্রের পার্কার, শেফার, ম ব্লঁ থেকে শুরু করে এদেশীয় ভারতী, আর্টেক্স, টিটোনি- কী নেই শুক্লাদেবীর সংগ্রহে! সংখ্যাটা প্রায় ৫০০। ঝরনা ধারার চরাচরব্যাপী মায়া তাঁর ছোট্ট ঘরখানিতে। ঝরনা কলমের ইতিহাসটাও বেশ পুরনো। একটা এলিট ব্যাপারস্যাপারও আছে বইকি! শোনা যায়, লিওনার্দো ভিঞ্চি ব্যবহার করতেন ঝরনা কলম। আবিষ্কারক পেত্রাচে পোয়েনারু। শুক্লাদেবী কিন্তু রবি ঠাকুরের নাম দেওয়া ঝরনা কলম ধরলে, এখনও জলপ্রপাতের শব্দ শুনতে পান। ১৯২০ সালে রবিঠাকুরের নাম দেওয়া কলম দিয়েই ছবি আঁকেন। বাবার কাছ থেকেই পাওয়া কলম গুছিয়ে রেখেছেন আজও।
কলম শব্দটাই গায়েব হয়ে গেছে অনেকদিন। ডটপেন, জেলপেনও এখন মহাপ্রস্থানের পথে। চিঠিপত্তর, লেখালিখিও এখন শেষযাত্রার পথে। কম্পিউটারের কি-বোর্ডই বর্তমান প্রজন্মের স্বাচ্ছন্দ্যের জায়গা। সেখানে ফাউন্টেন পেন সামলানো বেশ ঝক্কির।তবে ঝরনা কলম একেবারে যে উঠে গিয়েছে, তা কিন্তু বলা যাবে না। নামি-দামি সংস্থারা ঝরনা কলম নতুন মোড়কে এনেছে। আগের মতো কালি ভরতে লাগে না। কিনতে পাওয়া যায় কালির রিফিল।
ঝরনা কলমের মুক্তোধারায় মূর্ত হয় মুক্তাক্ষর। শুধুই কী লেখা! ঝরনাকলমে আঁকা ছবি, তাও যে কথা বলে! দেশে-বিদেশে একাধিক ফাউন্টেন পেন কমিউনিটির সঙ্গে যুক্ত শুক্লাদেবী এখনও চিঠি লেখেন। কালি কলম মন -- লেখে তিনজন। তিনি লেখেন, তিরতির করে বয়ে চলে ঝরনা।
আরও পড়ুন- ভারতে এখন আক্রান্তের চেয়ে করোনামুক্ত ২.৯৬ লক্ষ বেশি: স্বাস্থ্যমন্ত্রক