খাবার খবর, 'আহারে বাংলা'

নিন্দুকেরা বলেন বাঙালির হৃদয় রয়েছে তার পেটে! চাউমিন, পিত্জা, বার্গার, বিরিয়ানি। গোটা দুনিয়ার খাবারকে আপন করে নিয়েছে বাঙালি। কিন্তু বাঙালির নিজের হেঁশেলেই আছে জিভে জল আনা হাজারো পদ। তারাও মাত করতে পারে গোটা দুনিয়া। দরকার শুরু সঠিক ব্র্যান্ডিংয়ের।

Updated By: Oct 21, 2016, 10:09 PM IST
খাবার খবর, 'আহারে বাংলা'

ওয়েব ডেস্ক: নিন্দুকেরা বলেন বাঙালির হৃদয় রয়েছে তার পেটে! চাউমিন, পিত্জা, বার্গার, বিরিয়ানি। গোটা দুনিয়ার খাবারকে আপন করে নিয়েছে বাঙালি। কিন্তু বাঙালির নিজের হেঁশেলেই আছে জিভে জল আনা হাজারো পদ। তারাও মাত করতে পারে গোটা দুনিয়া। দরকার শুরু সঠিক ব্র্যান্ডিংয়ের।

বাঙালি মানেই পাত পেরে খাওয়া। তা অওধের নবাবি বিরিয়ানি হোক বা গ্রিলড অক্টোপাস, বাঙালির প্লেটে সক্কলে ওয়েল কাম। চিনের ক্যান্টোনিজ চিকেন হোক বা ইতালির পিত্জা বাঙালি খাচ্ছে চেটে পুটে।

সেই কবে লখনৌ ছেড়ে কলকাতা এসেছিলেন ওয়াজেদ আলি শাহ। সঙ্গে এনেছিলেন বিরিয়ানি। তার পর থেকে সেই বিরিয়ানি কলকাতারই। চিনা খাবারেরও সেই একই গল্প। টেরিটি বাজারের চিনা পাড়া ছেড়ে চাউমিন, চিকেন মাঞ্চুরিয়ান এখন বাঙালির পাড়ায় পাড়ায়। যে স্বাদ এক বার জিভে ঠেকেছে তাকেই আপন করে নিয়েছে বাঙালি। আর এই সবেরই দাপটে হারিয়ে গেছে বাঙালির নিজের খাবার। যেমন বিয়ে বাড়ির পাতে বাসন্তী পোলাওকে সরিয়ে শাসন করছে বিরিয়ানি...আহারে বাঙালি।

আচ্ছা বলুনতো বাঙালি মানে কী শুধুই ইলিশ মাছ আর রসগোল্লা? শুনেছেন চাপর ঘণ্ট, ব্যান্নন, নারকেল কুমড়ি বা শশার চাটনির কথা? বাঙাল হোক বা ঘটি, জেলার হেঁশেলে হেঁশেলে কিন্তু ছড়িয়ে আছে এমন অনেক মনি-মাণিক্য। ভাবতেই পারবেন না লাউয়ের খোসার ছেঁচকি ঠিক কতটা সুস্বাদু হতে পারে! তবে সে সব আর জানেন ক জন।

ইদানিং তৈরি হওয়া বাঙালি রেস্তোরাগুলিতেও ইলিশ পাতুরি, ডাব চিংড়ির মতো প্রচলিত খাবারেরই বেশি রমরমা। কিন্তু ঠাকুমার হাতের তিতোর ডাল বা মরিঝোল কোন অংশে কম থাই গ্রিন কারির থেকে?
গ্রাম বাঙলার মা-বোনেদের তৈরি গয়না বড়ির মতো চোখ ধাঁধানো, মুচমুচে খাবার প্লেটে পড়লে মহূর্তে লুফে নেবে গোটা দুনিয়া, দরকার শুধু ব্র্যান্ডিং।

আরও পড়ুন- দু'-তিনদিনের মধ্যে চকোলেট ও দোদোমা ফের নিষিদ্ধ বাজির তালিকায়

জার্মানির ব্ল্যাক ফরেস্ট কেকের নাম শুনলেই জিভে জল আসে। দুনিয়া জুড়ে তাঁর খ্যাতি। আচ্ছা ভেবে দেখেছেন বাঙালির নিজের পিঠে-পায়েসের এরকম বিপণন করা যায় কিনা। স্বাদে, গন্ধে আমাদের নিজস্ব গুড়ের পায়েস, নকশি পিঠে, গোলাপ পিঠে কিন্তু কম নয়। একবার বিশ্বের দরবারে সঠিক ব্র্যান্ডিং হলে কিন্তু টোকিও থেকে টেক্সাস, সকলেই মজবে এই মধুতেই।
 
চিন মানেই চাউমিন, ইতালির পিত্জা...হরেক তাঁর ব্র্যান্ড। রকমারি তার বিপণন। গোটা দুনিয়ায় এই সব খাবারের বিরাট বাজার। এমনটা হতে পারে বাঙলার শিলবাটা চিংড়ি, পুরভরা চাল কুমড়ো, কালিবুক চচ্চড়ি বা মাছের টকের ক্ষেত্রেও। এই খাবারের টানে এ রাজ্যে ফুড টুরিজমের সম্ভাবনাও কিন্তু কম নয়। বিশ্বের দরবারের বাঙলার মা -ঠাকুমাদের হারিয়ে যাওয়া খাবারের বিপুল সম্ভাবনাকে তুলে ধরতেই এবার উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য। আহারে বাংলা উত্সব হচ্ছে মিলন মেলায়।

এক বার দুনিয়ার নজর পড়তেই খুলে যাবে বিনিয়োগের দরজা। আসবে আর্থিক সমৃদ্ধি, ভাতের থালাতেই লক্ষ্মী আসবে রাজ্যে।

আরও পড়ুন  ভুল ওষুধ খাইয়ে অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠল

কিন্তু, আহারে বাংলার অনুষ্ঠানের প্রতিবাদে পথে নেমেছে বামেরা। তাঁদের অভিযোগ, একদিকে যখন চা বাগানে অনাহারে শ্রমিকদের মৃত্যু হচ্ছে, রাজ্যে বহু মানুষ  ঠিক মতো খাবার পাচ্ছে না, তখন এই উত্সব অর্থহীন। প্রতিবাদে হাজরা মোড় আর এন্টালিতে প্রতিকী অনশনে বসেন বাম নেতা কর্মীরা। বাম নেতাদের দাবি, শুরুতে তাঁদের কর্মসূচিতে বাধা দেয় পুলিস। তবে পুলিসি বাধা সত্ত্বেওপালিত হয়েছে কর্মসূচি। শিলিগুড়িতেও প্রতিবাদ কর্মসূচি হয়।

.