Recruitment Scam : ৪০ কোটির নিয়োগ দুর্নীতি পুরসভায়! ইডির হাতে বিস্ফোরক তথ্য
অয়নের বিস্ফোরক দাবি, এই ৪০ কোটি টাকা তিনি রাখেননি। ৪০ কোটির মধ্যে ২০-২৫ শতাংশ কমিশন পেতেন তিনি। বাকি ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ চলে যেত নির্দিষ্ট পুরসভার প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কাছে!
বিক্রম দাস: পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে ইডির হাতে এল বিস্ফোরক তথ্য। ১২ কোটি নয়, ৪০ কোটি টাকার দুর্নীতি! পুরসভায় নিয়োগ পাইয়ে দেওয়ার নামে ১২ কোটি টাকা নয়, ৪০ কোটি টাকা নিয়েছিল অয়ন শীল। শুধু অয়ন শীল-ই নিয়োগের ভুয়ো প্রতিশ্রুতি দিয়ে তুলেছিল ৪০ কোটি টাকা।
ইডি এর আগে জানিয়েছিল যে, অয়ন শীলের অফিস থেকে উদ্ধার হওয়া হার্ড ডিস্কের একটি ফোল্ডারে ১২ কোটির হিসেব পাওয়া গিয়েছে। সেই হিসেবকে সামনে রেখে অয়ন শীলকে জেরা করে ইডি। সেই জেরার সূত্র ধরেই এবার ইডি ৪০ কোটির হদিশ পেয়েছে। ইডি সূত্রে খবর, অয়ন শীল ৪০ কোটি টাকা তোলার কথা স্বীকার করেছে।
ইডির জেরায় অয়নের বিস্ফোরক দাবি, এই ৪০ কোটি টাকা তিনি রাখেননি। ৪০ কোটির মধ্যে ২০-২৫ শতাংশ কমিশন পেতেন তিনি। বাকি ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশ চলে যেত নির্দিষ্ট পুরসভার প্রভাবশালী ব্যক্তিদের কাছে। অয়নের বয়ানের ভিত্তিতে পুরসভার সেই প্রভাবশালী ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। নামের তালিকা সহ এই রিপোর্ট আদালতে জমা দেবে ইডি।
প্রসঙ্গত অয়ন শীলের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, যাঁরা নিজের যোগ্যতায় চাকরি পেয়েছিলেন, তাঁদের থেকেও লাখ লাখ টাকা দাবি করেন অয়ন শীল। টাকা না দেওয়ায় প্যানেল থেকে নাম বাদ পর্যন্ত দিয়ে দেন! হুগলির চুঁচুড়ার চয়নিকা আঢ্যর যেমন অভিযোগ, পুরসভায় যোগ দিয়েও টাকা না দিতে পারায় সেই চাকরি আর করতে পারেননি তিনি।
জাতীয় স্তরের যোগাসন চ্যাম্পিয়ন, অ্যাথলিট চয়নিকা আঢ্য প্লেয়ার্স কোটায় চাকরির পরীক্ষা দিয়ে ইন্টারভিউয়ে ডাক পান। ইন্টারভিউয়ের পর চাকরিও হয়ে যায় তাঁর। ২০১৯-এর ১১ নভেম্বর চয়নিকাকে পুরসভার তরফে জয়েনিং লেটারও দেওয়া হয়। চয়নিকার অভিযোগ, এরপরই এক পুলিসকর্মী একদিন তাঁর বাড়িতে গিয়ে বলেন অয়ন শীলের অফিসে গিয়ে দেখা করতে। চয়নিকা তখন চুঁচুড়ার জগুদাসপাড়ায় অয়ন শীলের অফিসে গিয়ে দেখা করেন। অয়ন তাঁদের বলেন, চাকরির জন্য ৫ লাখ টাকা দিতে হবে।
এরপর তিনি টিটাগড় পুরসভায় গিয়ে কথা বলেন চেয়ারম্যানের সঙ্গে। তখন হবে না, হবে না করেও তাঁকে জয়েন করানো হয়। স্যালারির জন্য স্থানীয় বেসরকারি ব্যাঙ্কে জিরো ব্যালান্স অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়া হয়। এটিএম কার্ডও দেওয়া হয়। কিন্তু মাত্র ৬ দিন পুরসভার চতুর্থ শ্রেণির কর্মী হিসেবে কাজ করতে পেরেছিলেন চয়নিকা। তারপর তাঁকে বের করে দেওয়া হয় পুরসভা থেকে।
আরও পড়ুন, 'পুরোটাই পূর্বপরিকল্পিত, রাজ্যের অবস্থা গণতন্ত্রের উপযুক্ত নয়'