নিয়মিত টক দই শরীরকে রাখে টেকসই
জানেন কি প্রতিদিন একটু একটু করে ক্ষয়ে যাচ্ছে আপনার শরীর? কমে যাচ্ছে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। রোজ টক দই খান। ভ্যানিশ হয়ে যাবে আপনার শরীরের হাজারো সমস্যা। এমনকি টক দই আপনাকে দিতে পারে দীর্ঘায়ু।
ওয়েব ডেস্ক: জানেন কি প্রতিদিন একটু একটু করে ক্ষয়ে যাচ্ছে আপনার শরীর? কমে যাচ্ছে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। রোজ টক দই খান। ভ্যানিশ হয়ে যাবে আপনার শরীরের হাজারো সমস্যা। এমনকি টক দই আপনাকে দিতে পারে দীর্ঘায়ু।
স্ট্রেসফুল লাইফ। শিফটের ডিউটিতে বায়োলজিক্যাল ক্লকের দফারফা। সারা বছর খুচখাচ কিছু না কিছু শরীর খারাপ লেগেই আছে। তার মানে কমছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। কত ওষুধ খাবেন আর কত ভ্যাক্সিনই বা নেবেন! শরীর-মন ফিট রাখতে একটা জিনিস রেগুলার ট্রাই করতে পারেন। তা হল টক দই।
খাদ্যগুণের নিরিখে টক দই হল অলরাউন্ডার। ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক, ভিটামিন B2, ভিটামিন B12 -- কী নেই টক দইয়ে! যত গুণ, তত উপকারিতা।
১) খাদ্যনালী বা অন্ত্রের মধ্যে থাকে মাইক্রোফ্লরা যা হজমে সাহায্য করে। টক দইয়ের মধ্যে থাকে GOOD ব্যাক্টেরিয়া যা অন্ত্রের মাইক্রোফ্লরাকে ভাল রাখে, ফলে হজম ভাল হয়।
২) BAD FOOD HABIT এর কারণে অনেকেই গ্যাসট্রিক ও কোলনের সমস্যায় ভোগেন। টক দই এসব ক্ষেত্রে কার্যত ওষুধের মতো কাজ করে।
৩) কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়ারিয়া, ল্যাক্টোস সমস্যা, এসব তো আছেই, টক দই খুব ভাল কাজ করে কোলন ক্যান্সারের ক্ষেত্রেও।
৪৫ হাজার জনের ওপর করা একটি গবেষণা, ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ ক্যান্সার, তাতে প্রকাশিত হয়েছিল ওই রিপোর্ট। রিপোর্টে গবেষকদের দাবি, দইয়ের মধ্যে যে হেলদি ব্যাক্টেরিয়া আর প্রোবায়োটিকস থাকে, কলোরেক্টাল ক্যান্সার রোধে তা সাহায্য করে।
বয়সের সঙ্গে সঙ্গে হাড় খয়ে যায়। দুর্বল হয় হাড়ের গ্রন্থি। নিউ ইয়র্কের প্রখ্যাত হাড় বিশেষজ্ঞ JERI NIEVES এর দাবি, দইয়ের মধ্যে যেহেতু ভিটামিন ও ক্যালসিয়াম দুই-ই থাকে, তাই তা অস্টিওপোরোসিস রোধে সাহায্য করে।
ডায়াবেটিসে ওজন বৃদ্ধি। এই সমস্যা এখন ঘরে ঘরে। টক দই শরীরের অতিরিক্ত ফ্যাট পুড়িয়ে দেয়। সেই সঙ্গে ওজন কমিয়ে বডি ফিট রাখতে সাহায্য করে। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, দইয়ের প্রোবায়োটিকস অন্ত্রের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এমনকী খাদ্যনালীতে কোষ উত্পাদনেও বড় ভূমিকা নেয় প্রোবায়োটিকস
৮ আউন্স দইয়ে ৬০০ মিলিগ্রাম পটাসিয়াম থাকে। চিকিত্সা বিজ্ঞানীরা বলছেন, দইয়ের পটাসিয়াম, সোডিয়াম নিয়ন্ত্রণ করে উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকলে, ঠিক থাকে স্নায়ুতন্ত্রও।
দইয়ে থাকে ল্যাক্টোবেসিলাস, অ্যাসিডোফিলাস এর মতো বিভিন্ন প্রোবায়োটিকস যা খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন, বাসনার সেরা বাসা রসনায়। শারীর বিজ্ঞানের নিরিখে কথাটা দারুণ সত্যি। হজম ভাল হলে মন ভাল থাকে। অন্ত্রের সঙ্গে তাই মনের নিবিড় সম্পর্ক। টক দই অন্ত্রকে যেভাবে নানা দিক থেকে সুরক্ষিত রাখে, তাতে ভাল হজম আর ভাল মুড, দুটোই মেলে।
পার্কিনসনস, অ্যালজাইমার্স, অটিজমের মতো রোগের ক্ষেত্রে টক দইয়ের উপকারিতা অনেক। ক্রনিক ব্যথা দূর করতেও সাহায্য করে দই। বিজ্ঞানীরা বলছেন, বারবার অ্যান্টিবায়োটিক খেলে অন্ত্রের খারাপ ব্যাক্টেরিয়ার সঙ্গে ভাল ব্যাক্টেরিয়ারও মৃত্যু হয়। তাঁদের সাজেশন, কথায় কথায় ওষুধ না নিয়ে মেপে দই খান। বহু রোগ থেকে দূরে থাকবেন। দীর্ঘায়ু হবেন। (আরও পড়ুন- এই লক্ষ্মণগুলো দেখলেই চোখ নিয়ে সাবধান হোন!)