Evolving Mental Health: কলকাতাবাসীর মানসিক সাহায্য প্রয়োজন? দেশের সব চেয়ে 'অসুস্থ' শহর কল্লোলিনী তিলোত্তমাই?

Evolving Mental Health Landscape in India, Kolkata: সম্পর্কজনিত সমস্যাই এখন সব থেকে বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ভারতের শহরগুলিতে, বিশেষ করে কলকাতায়। সম্প্রতি এ বিষয় নিয়ে কাজ করা এক সংস্থার বিশ্লেষণে উঠে এসেছে এমনই পর্যবেক্ষণ। ভারতে মানসিক স্বাস্থ্যের সংকট কি ক্রমবর্ধমান? কলকাতা নিয়ে কি গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে?

Updated By: Jan 18, 2025, 01:20 PM IST
Evolving Mental Health: কলকাতাবাসীর মানসিক সাহায্য প্রয়োজন? দেশের সব চেয়ে 'অসুস্থ' শহর কল্লোলিনী তিলোত্তমাই?

জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: কলকাতার বাসিন্দাদের মানসিক সাহায্যের প্রয়োজন? সম্পর্কের বিভিন্ন ধরনের সমস্যাগুলি চরম উদ্বেগ তৈরি করছে এখানে, এমনই মত সংশ্লিষ্ট মহলের। বিষয়টি বিভিন্ন শহুরে সমস্যাগুলিকে প্রতিফলিত করে। এমপাওয়ারের মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত হেল্পলাইনের তথ্য ভারতে মানসিক স্বাস্থ্যের ক্রমবর্ধমান ছবিটাকে  সম্প্রতি তুলে ধরেছে। দেখা যাচ্ছে, উদ্বেগ এবং সম্পর্কের টানাপোড়েন সেখানে প্রাধান্য পেয়েছে।

আরও পড়ুন: 129 Year Old Baba in MahaKumbh | Swami Sivananda Baba: বিশ্বের সবচেয়ে প্রবীণ সাধু! অলৌকিকতায় ভরপুর তাঁর জীবন কিন্তু আগাগোড়া স্নিগ্ধ সহজ সরল...

কেন হঠাৎ শহরের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে এই আলোচনা?

আসলে সম্প্রতি কলকাতায় ঘটে গিয়েছে এক দুর্ঘটনা। কিছুদিন আগে মধ্য কলকাতার ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছে সংগীতশিল্পী চন্দ্রমৌলি বিশ্বাসের ঝুলন্ত দেহ। বয়স হয়েছিল ৪৮ বছর। চন্দ্রমৌলি কি অবসাদের জেরে আত্মহত্যা করলেন? দীর্ঘদিন ফসিলসের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পরে ফসিলস থেকে বেরিয়ে 'গোলক', 'জম্ব্ কেজ কন্ট্রোল' নামের ব্যান্ডের সঙ্গেও যুক্ত হয়েছিলেন। জানা গিয়েছিল, মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন চন্দ্রমৌলি। আর্থিক অনটন থেকে শুরু করে কাজের অভাব, সবই প্রভাব ফেলেছিল তাঁর মানসিক স্বাস্থ্যে। উঠে এসেছে তাঁর হাতে কাজ না থাকা থেকে শুরু করে অর্থকষ্ট এবং তজ্জনিত অবসাদের প্রসঙ্গ।

তবে, সম্পর্কজনিত সমস্যা এখন সব থেকে বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে কলকাতায়। আদিত্য বিড়লা এডুকেশন ট্রাস্টের একটি শাখা এবং শীর্ষস্থানীয় মানসিক সুস্থতা প্রদানকারী এমপাওয়ারের দেওয়া একটি বিস্তৃত বিশ্লেষণে উঠে এসেছে, ভারতে মানসিক স্বাস্থ্যের ক্রমবর্ধমান পটভূমিতে সম্পর্কের সমস্যাগুলি অন্যান্য শহুরে চ্যালেঞ্জগুলিকে প্রতিফলিত করেছে, যার ফলে চরম উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।

প্রায় এক লাখেরও বেশি হেল্পলাইন নম্বরে পাওয়া কলের উপর ভিত্তি করে এই বিস্তৃত বিশ্লেষণ প্রকাশিত হয়েছে। মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ভারতীয়দের যথেষ্ট পরিমাণে প্রভাবিত করছে। আর এই তালিকার শীর্ষে কলকাতা। সারা ভারতে মোট পাওয়া কলের নিরিখে পঞ্চম স্থানে রয়েছে কলকাতা। উল্লেখযোগ্য ভাবে, কলকাতা শহরটিতে অনন্য লিঙ্গ বণ্টন লক্ষ্য করা যায়, যেখানে ৫২%  পুরুষ এবং ৪৮%  মহিলা ফোন করে সাহায্য চেয়েছেন। সম্প্রতি একটি প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছে, দেখা গিয়েছে, কলকাতার পুরুষরা মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাউন্সেলিংয়ের ব্যাপারে যথেষ্ট উদার।

কলকাতা থেকে পাওয়া তথ্যে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগের ধরন এবং এই পরিস্থিতিতে পড়ে সাহায্যপ্রার্থনা থেকে এর মূল প্রবণতাটা প্রকাশ পাচ্ছে। সম্পর্কের সমস্যাগুলিই বেশি-বেশি করে সামনে এসেছে। সমস্ত ফোন কলের যা ৪৫%! অর্থাৎ, মোট জনসংখ্যার ৩৩%-এর চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। এর পরেও উদ্বেগ ২৪%, বিষণ্ণতা ১৭% এবং মানসিক চাপ ১১% দেখা গিয়েছে। এই সমস্ত তথ্য কলকাতার জনসংখ্যার মানসিক সুস্থতা নিয়ে তৈরি হওয়া আশঙ্কাকেই স্পষ্ট করে তুলে ধরে। যা সম্ভবত শহরের অন্যান্য সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক গতিশীলতার দ্বারা প্রভাবিত।

গোটা দেশের প্রবণতার তুলনায় কলকাতা একটি অনন্য মানসিক স্বাস্থ্যের দৃশ্য়পট উপস্থাপন করে। দেখা গিয়েছে, হেল্পলাইন কলগুলিতে তরুণদের প্রাধান্য বেশি, ৪৯% কল এসেছে ১৮-২৫ বছর বয়সিদের তরফে, ৩৬% কল এসেছে ২৬-৪০ বছর বয়সিদের কাছ থেকে। এই জনসংখ্যার সাহায্যের জন্য জরুরি প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, 'সম্পর্কের সমস্যা' কলকাতায় প্রাথমিক উদ্বেগ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে আর এই উদ্বেগ কলকাতাকে দেশের মধ্যে প্রথম স্থানে রেখেছ। এই শহরের অনন্য সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটের মধ্যে থাকা চ্যালেঞ্জগুলির উপর জোর দেওয়ার ইঙ্গিত দেয়, যা পারিবারিক গতিশীলতা এবং সামাজিক চাপের মতো কারণগুলির দ্বারা প্রভাবিত হতে পারে।

কলকাতার বাসিন্দাদের মধ্যে, বিশেষ করে ১৮-২৫ বছর বয়সিদের মধ্যে সম্পর্কের সমস্যার উচ্চ প্রকোপ একটি উল্লেখযোগ্য উদ্বেগের বিষয়-- এমনই বলেছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ প্রীতি পারিখ। তিনি শরৎ বোস রোডে অবস্থিত এমপাওয়ার সেন্টারের প্রধান।

তরুণরা জটিল সামাজিক ও মানসিক পটভূমিতে চলাচল করছে। পরিচয় গঠন, কেরিয়ারের চাপ, সুস্থ সম্পর্ক স্থাপনের সঙ্গে লড়াই করছে। এই চ্যালেঞ্জগুলি তাদের মানসিক সুস্থতা এবং সামগ্রিক বিকাশকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করতে পারে। এই উদ্বেগগুলির সঙ্গে মোকাবিলা করতে এবং এই দুর্বল জনগোষ্ঠীর জন্য ইতিবাচক মানসিক স্বাস্থ্যের ফলাফল প্রচারের জন্য প্রাথমিক হস্তক্ষেপ এবং উপযুক্ত সাহায্যের ব্যবস্থা করা অত্যন্ত প্রয়োজন।

এমপাওয়ার কলকাতার বাসিন্দাদের জন্য সহজলভ্য এবং কার্যকর মানসিক স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং সহায়তা চাওয়ার গুরুত্ব সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সতেচনতা বৃদ্ধি করতে বদ্ধপরিকর। কোভিড-১৯ মহামারির সময় বিচ্ছিন্ন ব্যক্তি এবং তাঁদের পরিবারের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্যের চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত এমপাওয়ার কলকাতা সেন্টার চার বছরেরও বেশি সময় ধরে চালু রয়েছে। এই বছরগুলি ধরে এই সেন্টার তার বহুমুখী মানসিক স্বাস্থ্য পরিষেবার বিস্তৃত পরিসরের মাধ্যমে অসংখ্য ব্যক্তিকে সাহায্য করেছে।

'এমপাওয়ার' সম্পর্কে কিছু তথ্য--

'এমপাওয়ার' আদিত্য বিড়লা এডুকেশন ট্রাস্টের একটি উদ্যোগ, মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি রূপান্তরের জন্য নিবেদিত অগ্রণী এক সামাজিক উদ্যোগ। ৮ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত এমপাওয়ার সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি সামগ্রিক মানসিক স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানের ক্ষেত্রেও অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। এমপাওয়ারের সমন্বিত পদ্ধতি এবং সরকারি সংস্থাগুলির সঙ্গে এর সহযোগিতামূলক কর্মপদ্ধতি আগামী দিনে এক সুস্থ মানসিক স্বাস্থ্যের দৃশ্যপট তৈরি হয়ে ওঠার প্রতিশ্রুতিকে জোরদার করে।

আরও পড়ুন: New Antibiotic from India | Zaynich: চিকিৎসা করাতে গিয়ে হাসপাতাল থেকে নতুন সব সংক্রমণ নিয়ে ঘরে ফেরার দিন শেষ! এসে গেল মুশকিল আসান...

[আপনি কি অবসাদগ্রস্ত? বিষণ্ণ? চরম কোনও সিদ্ধান্ত নেবেন না। আপনার হাত ধরতে তৈরি অনেকেই। কথা বলুন প্লিজ... 

iCALL (সোম-শনি, ১০টা থেকে ৮টা) ৯১৫২৯৮৭৮২১

কলকাতা পুলিস হেল্পলাইন (সকাল ১০টা-রাত ১০টা, ৩৬৫ দিন) ৯০৮৮০৩০৩০৩, ০৩৩-৪০৪৪৭৪৩৭]

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)

.