প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও তৃতীয় দফার নির্বাচনে ছিল না পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনি, চতুর্থ দফায় আসছে আরও ৩৬ কোম্পানি

তৃতীয় দফার নির্বাচনে ছিল না পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী। স্পর্শকাতর হলেও শুধু বীরভুমেই বহু বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে পারেনি কমিশন।গতকাল সারাদিন এমনই অভিযোগ ছিল ভোটারদের মুখে। কমিশনের হিসেবও অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ করছে। অবস্থা সামাল দিতে রাজ্যে চতুর্থ দফার নির্বাচনে আরও প্রায় ৩৬ কোম্পানি এবং পঞ্চম দফার নির্বাচনে আরও প্রায় ২০০ কোম্পানী কেন্দ্রীয় বাহিনী আসছে রাজ্যে।

Updated By: May 1, 2014, 11:15 PM IST

তৃতীয় দফার নির্বাচনে ছিল না পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী। স্পর্শকাতর হলেও শুধু বীরভুমেই বহু বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে পারেনি কমিশন।গতকাল সারাদিন এমনই অভিযোগ ছিল ভোটারদের মুখে। কমিশনের হিসেবও অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ করছে। অবস্থা সামাল দিতে রাজ্যে চতুর্থ দফার নির্বাচনে আরও প্রায় ৩৬ কোম্পানি এবং পঞ্চম দফার নির্বাচনে আরও প্রায় ২০০ কোম্পানী কেন্দ্রীয় বাহিনী আসছে রাজ্যে।

কিন্তু কেন এমন পরিস্থিতি? নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, পর্যাপ্ত সংখ্যায় কেন্দ্রীয় বাহিনী না থাকাতেই সব বুথে তা মোতায়েন করা সম্ভব হয়নি। শুধুমাত্র বীরভূমের দিকে তাকালেই ছবিটা স্পষ্ট। নির্বাচনের আগে বীরভূমের ৭৫ শতাংশ বুথকেই অতি স্পর্শকাতর বলে ঘোষণা করেছিল কমিশন। বুধবার কমিশনের হাতে মোট কেন্দ্রীয় বাহিনী ছিল ২৬৫ কোম্পানি। এরমধ্যে ১৫ শতাংশ কোম্পানি এরাজ্যেরই।

বুধবার বীরভূমে মোট ৯০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী কাজ করেছে। বীরভূমেই বুথের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ২৯ হাজার, ভোটকেন্দ্র ২২০০ এরমধ্যে ৭৫ শতাংশ বুথ যদি স্পর্শকাতর হয় তাহলে প্রায় ২২০০ বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা দরকার ছিল। কমিশনের হাতে যা বাহিনী ছিল তা দিয়ে স্পর্শকাতর বুথের মদ্যে প্রায় পঁয়তাল্লিশ থেকে পঞ্চাশ শতাংশ বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন সম্ভব হয়েছিল। পঁচিশ শতাংশ স্পর্শকাতর বুথেই মোতায়েন করা যায়নি কেন্দ্রীয় বাহিনী বাকি স্পর্শকাতর বুথগুলিতে রাজ্য পুলিস দিয়েই ভোট পরিচালনা করতে হয়েছে নির্বাচন কমিশনকে। কমিশনের অবশ্য যুক্তি মাওবাদীর শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত এলাকাগুলিতেই প্রথমে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। ফলে অন্যান্য জায়গার উত্তেজনা প্রবণ বহু বুথই ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনীর নজরদারির বাইরে। সেইসব জায়গায় রাজ্য পুলিসের ওপরই ভরসা রাখতে হয়েছে কমিশনকে।

ফলে কার্যত জঙ্গল ও সীমানা এলাকার বাইরে বসতি এলাকায় অধিকাংশ বুথেই কেন্দ্রীয় বাহিনীর দেখা মেলেনি। বিরোধী দলগুলির অভিযোগ কেন্দ্রীয় বাহিনী না থাকার জন্য এইসব এলাকায় অবাধে চলেছে রিগিং। ফলে কার্যত বীরভূমে যে দাওয়াইয়ের কথা বলে সাধারণ মানুষের মনে ভরসা আদায় করেছিল কমিশন। কার্যক্ষেত্রে মানুষের বাস্তব অভিজ্ঞতা হয় একদল ভিন্ন। কারণ, বুথের সামনে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে আশা করে গিয়েও রাজ্য পুলিসের বহু ক্ষেত্রেই নীরব দর্শকের ভূমিকায় দেখতে হয়েছিল সাধারণ ভোটারদের। তারফলে বুধবারের ভোট কমিশনের প্রতি মানুষের আস্থা অনেকটাই কমিয়ে এনেছে। শুধু বীরভূম নয়। একই ছবি বর্ধমান, হাওড়া ও হুগলিতেও।বর্ধমান স্পর্শকাতর বুথ ৪২% কেন্দ্রীয় বাহিনী ৬৫ কোম্পানি। হুগলি স্পর্শকাতর বুথ ৫২% কেন্দ্রীয় বাহিনী ৬০ কোম্পানি হাওড়া স্পর্শকাতর বুথ ৩৩% কেন্দ্রীয় বাহিনী ৪৬ কোম্পানি। ফলে অধিকাংশ জায়গাতেই দেখা মেলেনি কেন্দ্রীয় বাহিনীর।

পরিস্থিতি সামাল দিতে চতুর্থ দফায় রাজ্যে আসছে অতিরিক্ত ছত্রিশ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। পঞ্চম দফায় এরসঙ্গে যোগ দিচ্ছে আরও দুশো কোম্পানী। কিন্তু প্রশ্ন তেকেই যাচ্ছে কেন্দ্রীয় বাহিনী এলেও বাহিনী মোতায়েন সঠিকভাবে না হলে আদও সুষ্ঠু ভোট সম্ভব তো?

.