#zeeclassic দ্য বিমল রায় ফেস্টিভ্যাল উপস্থাপনায় বোমান ইরানি

Updated By: Feb 6, 2016, 10:00 AM IST
#zeeclassic দ্য বিমল রায় ফেস্টিভ্যাল উপস্থাপনায় বোমান ইরানি

বিশ্ববরেন্য পরিচালক বিমল রায়ের ৫০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে Zee Classic এর শ্রদ্ধার্ঘ — বিমল রায় ফেস্টিভ্যাল। উপস্থাপনায় বোমান ইরানি। দেখুন পাঁচটি দুর্মূল্য রত্ন — ‘দো বিঘা জমিন’, ‘দেবদাস’, ‘মধুমতি’, ‘সুজাতা’ ও ‘বন্দিনী’, পর পর পাঁচ সপ্তাহ ধরে। তাছাড়া রয়েছে বিমল রায়ের উপর একটি তথ্যচিত্র থেকে নির্বাচিত কিছু অংশ। যাতে স্মৃতিচারণা করবেন ধর্মেন্দ্র, বৈজন্তিমালা, গুলজার ও আশুতোষ গোয়ারেকর। শোনাবেন বিমল রায়ের সঙ্গে তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা। ফেস্টিভ্যাল-এর প্রথম ছবি কান চলচিত্র উৎসবে পুরস্কৃত 'দো বিঘা জমিন'।   

দো বিঘা জমিন

জীবিকার জন্য লড়াই। পরিচয়ের জন্য লড়াই। সন্মানের জন্য লড়াই। শ্রদ্ধেও শ্রী বিমল রায়ের 'দো বিঘা জমিন' ছায়াছবিটিতে প্রতিফলিত হয় সেই চিরকালীন মাটির জন্য লড়াই। অশিক্ষার অন্ধকারে ডুবে থাকা সরল কৃষক শম্ভু — তাঁকে  নির্মমভাবে পীড়ন করে জমিদার। হিসেব না জানা অসহায় মানুষটিকে আদালতে ঋণ শোধের সময় দেয় মাত্র তিন মাস। এরপর শুরু হয় এক অসম লড়াই — সত্যের সঙ্গে অসত্যের, ধর্মের সঙ্গে অধর্মের। শম্ভু তার চিরপরিচিত স্বদেশ ছেড়ে পা বাড়ায় অজানার আহ্বানে। মনে আশার আলো জ্বেলে রাখে সে। বিদেশে তার সঙ্গী তার ছোট্ট ছেলেটি — 'বাছুয়া'। চরম প্রতিকুলতা তাকে শ্রীঘ্রই পরিণত করে দেয়। উপার্জনের তাগিদে কৃষকের হাতে উঠে আসে রিকশার হাতল। ছেলেটি তুলে নেয় জুতো পালিশের বাক্স। এমনকি কৃষকবধুটিও ঘরের আঙিনা ছেড়ে পথে নামে দুটো পয়সার আশায়।

এত করেও শেষ রক্ষা হয় না। কিছু বেশি টাকার জন্য বেপরোয়াভাবে যান চালায় শম্ভূ। গুরুতর আহত হয় সে। স্বামীর খোঁজে শহরে আসা কৃষকবধু 'পারো' সম্মুখিন হয় বিপদের। অবশেষে ঈশ্বর কৃপায় তাঁদের মিলন হয়। মাটির অমোঘ টানে, ছিন্নমূল অসহায় পরিবারটি ফের ফেরে গ্রামে। তাঁদের জমির উপর দাঁড়িয়েছে জমিদারের দর্প — নতুন কারখানা। ফেরত যাবার সময় একমুঠো মাটি তোলে কৃষক — নিজের অস্তিত্বের  শেষ চিহ্নটুকু সাথে চায় সে। পাহারাদারের রক্তচক্ষু তাঁকে সেটুকু থেকেও করে বঞ্চিত। তাঁকে আশা দেয় নতুন প্রজন্ম — তাঁরই সন্তান। অনুপ্রাণিত করে নতুন দিশার পথিক হতে — পুরাতনকে বিসর্জন দিয়ে নতুনকে আহ্বান করতে। বিশ্বকবির ভাষা যেন প্রাণ পায়: "ওরে সবুজ, ওরে আমার কাঁচা, আধমরাদের ঘা মেরে তুই বাঁচা"।

যদিও শম্ভুর জীবন সংগ্রামের সঙ্গে আজকের সমাজ সম্যকভাবে পরিচিত নয়, তবুও এই মর্মস্পর্শী ছবিটি পরিণত মনস্কতার পথে এক সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ তো বটেই। নিজের জেদ, স্বপ্ন ও জীবিকার পরিপূর্ণতায় মানুষের সংগ্রাম এক চিরন্তন সত্য, যত কষ্টই আসুক না কেন, এগিয়ে যেতেই হবে। এই হল জীবনের মূল মন্ত্র — যাতে হোক প্রতিটি মানুষের দীক্ষা।

আজকের সমাজের পটভূমিকায় মানুষকে প্রতি মুহুর্তে সম্মুখীন হতে হয় কঠোর বাস্তবের। দুর্বলের উপর নেমে আসে সবলের রোষ ও অত্যাচার। তা সত্বেও মানুষ হত্দ্যম হয় না। পরস্পরের প্রতি বাড়ায় সহযোগিতার হাত, ঘুরে দাঁড়ায়, আশায় বুক বাঁধে। মানসিক ও পারিবারিক পীড়ন সহ্য করেও তাঁরা সত্যের ও জীবনের গানই গায়। প্রকৃতির রুদ্র হুঙ্কারও মানুষকে থামিয়ে রাখতে পারে না। জীবনের পথে যেন ব্রতী হয় তাঁরা।
নতুন আশায় "তোলে ছিন্নবিণা, বাঁধে তাকে নতুন তারে।" বিশ্বকবির ভাষায় অনুপ্রাণিত হয়ে তারা গেয়ে ওঠে — "নাই, নাই ভয়, হবে, হবে জয়।"                

দেখতে ভুলবেন না। দ্য বিমল রায় ফেস্টিভ্যাল উপস্থাপনায় বোমান ইরানি। সিরিজের প্রথম ছবি 'দো বিঘা জমিন' দেখানো হল শনিবার, সন্ধে ৮ টায়, Zee Classic এ।      
            

 

.