জন্মদিনে মহানায়ক
আরও একবার এল ৩ সেপ্টেম্বর। মহানায়ক উত্তম কুমারের আরো একটা জন্মদিন। ৩১ বছর হল বাংলা ছবি হারিয়েছে তার মহানায়ককে। তবুও আজও উত্তমকুমারে আটকে গোটা বাঙলা। রোমান্টিক উত্তম সর্বকালের সেরা। তাঁর তাকানো, কথা বলা, হাসি, সবমিলিয়ে চুম্বকের মতো ছিল তাঁর ব্যক্তিত্ব।
আরও একবার এল ৩ সেপ্টেম্বর। মহানায়ক উত্তম কুমারের আরো একটা জন্মদিন। ৩১ বছর হল বাংলা ছবি হারিয়েছে তার মহানায়ককে। তবুও আজও উত্তমকুমারে আটকে গোটা বাঙলা। রোমান্টিক উত্তম সর্বকালের সেরা। তাঁর তাকানো, কথা বলা, হাসি, সবমিলিয়ে চুম্বকের মতো ছিল তাঁর ব্যক্তিত্ব। উত্তমের সঙ্গে যোগ্য সঙ্গত করেছেন তাঁর নায়িকারা। স্বতঃস্ফূর্তভাবেই সাড়া দিয়েছেন তাঁর রোমান্টিকতায়।
১৯৪৮ সালে নিতিন বোসের ছবি `দৃষ্টিদান`-এ বাংলা ছবি পেল এক নতুন অভিনেতাকে। সাধারণ ছেলেটি ধীরে ধীরে হয়ে উঠল অসাধারণ। তৈরি হল সুন্দর পুরুষের নতুন সংজ্ঞা। `সাড়ে চুয়াত্তর`, `পথে হল দেরি`, `সপ্তপদী`, `মৌচাক`, `ভ্রান্তিবিলাস`, `অগ্নীশ্বর`। উত্তম কুমারের আবির্ভাব, অবিস্মরণীয় অভিনয় রচনা করল বাংলা ছবির স্বর্ণযুগ। নায়ক থেকে কালে কালে হয়ে উঠলেন মহানায়ক। আজকের নায়িকারা কীভাবে দেখেন বাংলার এই মহানায়ককে?
ভগ্ন হৃদয়ে দেবশ্রী রায় জানালেন, "আমার উত্তম কুমারের সঙ্গে একটি ছবিতে তাঁর মেয়ের ভূমিকায় অভিনয় করার কথা ছিল। কিন্তু সবকিছু ঠিক হয়ে যাওয়ার পরও কোন এক অজ্ঞাত কারণে আমাকে বাদ দেওয়া হয়। সেই দু:খ আজও ভুলতে পারিনি"।
সুদেষ্ণা রায়- "যদি আমি ওনার সঙ্গে অভিনয় করার সুযোগ পেতাম তাহলে অবশ্যই `সপ্তপদী`র রিনা ব্রাউন হতে চাইতাম`।
রিমঝিম মিত্র- "ওনার সঙ্গে যদি একটা ফ্রেমও শেয়ার করতে পারতাম তাহলে হয়তো জীবনই অন্যরকম হতো"।
অঞ্জনা বসু- "সপ্তপদী`, `হসপিটাল`...ওনার সব ছবির নায়িকা হতে চাইতাম।
লকেট চ্যাটার্জি- "নায়িকা না হতে পারলেও যদি ওনার সঙ্গে পার্শ্ব চরিত্রেও অভিনয়ের সুযোগ পেতাম ভীষণ ভাল লাগত"।
শুধু নায়িকারা নন। উত্তম ম্যাজিকে মশগুল আজকের নায়করাও।
রুদ্রনীল ঘোষ জানালেন- "আমার প্রথম এবং শেষ হিংসার পুরুষের নাম উত্তম কুমার। উনি মারা যাওয়ার পরও বেঁচে আছেন, আমাদের সঙ্গেই রয়েছেন। আমি যখন স্টুডিওতে ঢুকি প্রত্যেকটা মুহুর্ত কমপ্লেক্সে ভুগি। এতবড় সুপারস্টার আর কেউ হবে না। আমরা সবাই ধূপকাঠি। তারা হওয়া তো দূরের কথা"।
দেবদূত ঘোষ- "ওনার কোটি অংশের এক অংশও যদি আমি হতে পারি নিজেকে ধন্য মনে করব"।
রজতাভ দত্ত- "উত্তম কুমার একটা মিথের নাম"।
বিশ্বনাথ বসু- "উনি যেই ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করেছেন আমি তার এক ছোট্ট সদস্য হতে পেরে গর্বিত"।
আবীর চট্টোপাধ্যায়- "যেই কাজ উনি করে গেছেন কারও পক্ষে আর কোনওদিন সম্ভব নয়"।
রাহুল- "গুরু, ইউ আর দ্য বেস্ট, ইউ আর দ্য বেস্ট, অ্যান্ড...ইউ আর দ্য বেস্ট"।
শুধুমাত্র বাঙলা ছবির মহানায়ক হয়েই সারাটা জীবন কাটিয়ে দেননি তিনি। তাঁর মহিমা দেখেছে বলিউডও। `কিতাব`, `অমানুষ`-এর মতো বহু ছবিতে পাওয়া গেছে ভার্সাটাইল এই অভিনেতাকে। `অমানুষ` ছবির জন্য বেস্ট অ্যাক্টর ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডও ডিতেছেন উত্তম কুমার। `ওগো বধূ সুন্দরী`র সেটে জীবনের শেষ শট দেন ৫৫ বছরের মহানায়ক। ১৯৮১-র ২৪ জুলাই।
গগণচুম্বী ব্যক্তিত্ব, লার্জার দ্যান লাইফ ইমেজ। তিনি আজও বেঁচে আছেন। বেঁচে থাকবেন। বাঙালি মহিলাদের হৃদয়ে। বাঙালি পুরুষের দীর্ঘশ্বাসে।