জন্মদিনে মহানায়িকা

২০০৫ এ ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সর্ব্বোচ্চ সম্মান দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তিনি বেছে নিয়েছেন নির্জনতা। তাই লোকসমক্ষে না গিয়ে সেই পুরস্কার না নেওয়ার সাহস দেখিয়েছিলেন তিনিই। এই মোহ ত্যাগ করতে পারেন আর কে? বাংলা সিনেমার সর্বকালের মোহময়ী একমাত্র মহানায়িকা সুচিত্রা সেন ছাড়া ? তাঁর ৮১ তম জন্মদিন।

Updated By: Apr 6, 2012, 10:08 PM IST

২০০৫ এ ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সর্ব্বোচ্চ সম্মান দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তিনি বেছে নিয়েছেন নির্জনতা। তাই লোকসমক্ষে না গিয়ে সেই পুরস্কার না নেওয়ার সাহস দেখিয়েছিলেন তিনিই। এই মোহ ত্যাগ করতে পারেন আর কে? বাংলা সিনেমার সর্বকালের মোহময়ী একমাত্র মহানায়িকা সুচিত্রা সেন ছাড়া ? তাঁর ৮১ তম জন্মদিন।

১৯৩১-এর ৬ এপ্রিল। পাবনার এক স্কুল শিক্ষকের ঘর আলো করে জন্ম নিল এক নক্ষত্র। শিক্ষক করুণাময় দাশগুপ্তর পঞ্চম সন্তান রমা। বিশাল আয়তাকার দুই চোখে অপার রহস্য। সেই চোখের রহস্যের ঘেরাটোপে আজও আচ্ছন্ন আপামর বাঙালি। দমবন্ধ করে দেওয়ার মত আশ্চর্য সুন্দর এই রমাই হয়ে উঠলেন বাঙলা ছবির কিংবদন্তী। বাঙলা সিনেমাপ্রেমীদের একমাত্র স্বপ্নের নারী সুচিত্রা সেন। ১৯৫২-তে সুচিত্রার প্রথম ছবি `শেষ কোথায়।` যদিও সেই ছবি মুক্তি পায়নি। সুচিত্রাকে বাঙালি পেলেন `সাড়ে চুয়াত্তর`-এ। একদল যুবকের বোর্ডিং-এ একফালি স্বপ্নের মত আবির্ভাব এই দুঁদে সুন্দরীর। সেই সাড়ে চুয়াত্তর থেকেই তো উত্তমের সঙ্গে যাত্রা শুরু করলেন সুচিত্রা। বাঙালির প্রেমের আইকন আজও সেই সুচিত্রা-উত্তম।

উত্তমকে ছাড়াও সুচিত্রা নিজের ক্যারিশমা প্রমাণ করেছেন। `দ্বীপ জ্বেলে যাই` ছবিতে নার্সের অসহায় প্রেম, বা `উত্তর ফাল্গুনী`-র পান্নাবাই। সুচিত্রা সেন ছাড়া সম্ভব হত কি? `সাত পাকে বাঁধা` ছবিতে নারী পুরুষের সম্পর্কের জটিল সমীকরণ সুচিত্রার অভিনয় জীবনের এক অন্যতম মাইলস্টোন। প্রথম ভারতীয় অভিনেত্রী হিসেবে মস্কো ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে পেলেন সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার। বিশ্বজয় করেও সুচিত্রা রয়ে গেলেন বাঙালির নিজস্ব হয়েই। যদিও মাঝেখানে বলিউড পাড়ি দেওয়াও হয়ে গেছে তাঁর। ১৯৫৫-তে সেরা অভিনেত্রী হলেন বিমল রায়ের `দেবদাস` ছবিতে। দিলীপরায়ের দেবদাসের সঙ্গে `পারো` হয়ে যোগ্য সঙ্গত করলেন এই দাপুটে অভিনেত্রী। এরপর `বোম্বাই কা বাবু` বা `আঁধি`। সুচিত্রার জয়যাত্রা অব্যাহত।

এই সুচিত্রাই ডেট দিতে পারেননি বলে সত্যজিত্ রায় বাস্তবায়িত করেননি তাঁর স্বপ্নের প্রোজেক্ট দেবী চৌধুরানি। দর্শকরা বঞ্চিত হলেন সত্যজিত্-সুচিত্রা যুগলবন্দী থেকে। উত্তম-সুচিত্রা জুটির শেষের দিকের ছবি `আলো আমার আলো।` এরপর `প্রিয় বান্ধবী।` ব্যাস। এই শেষ। এরপর ধীরে ধীরে পাদপ্রদীপের আলো থেকে সরে যেতে থাকেন সুচিত্রা সেন। যে জীবন সুচিত্রা বেছে নিয়েছেন তাকে সম্মান জানাই আমরা। সেই আলোর ঠিকানা আমাদের অজানা। কিন্তু সেই আলোর জ্যোতি আজও অম্লান।
বাঙলি পুরুষদের হৃত্কম্পন আজও থামেনি। জন্মদিনে আপনাকে অনেক শুভেচ্ছা। ভালো থাকুন আপনি। আর থাকুন চিরদিনের রহস্যময়ী হয়েই।

.