Srijato: রামপ্রসাদের গান অথচ গীতিকার হিসাবে শ্রীজাত পাচ্ছেন পুরস্কার? নেটপাড়ার কটাক্ষে চটলেন কবি...
Srijato: ‘পুরস্কার প্রদানকারী সংস্থার তরফে বড় রকমের ত্রুটি হয়েছে এবং বিষয়টি প্রকাশে চলে আসায় তাঁদের উপর ঘটনার দায় বর্তেছে, যা স্বাভাবিক। তাঁরা এই দায় সরকারিভাবে ইতিমধ্যেই কোথাও স্বীকার করেছেন কিনা, আমার জানা নেই। জেনে খুব একটা লাভও নেই। আমি নিজে এই মনোনয়নের বিরোধিতা করেছি এবং তাতে কাজও হয়েছে, এটুকুই জানানোর ছিল’।
Srijato, Ramprasad, Manob Jomin, Rana Sarkar, জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: শনিবার থেকেই নেটপাড়ায় ঘুরছে টেলি সিনে অ্যাওয়ার্ডস-এর সেরা গীতিকারের মনোনয়নপত্র। সেই মনোনয়নপত্রে লেখা ‘মন রে কৃষিকাজ জানো না’, গানের জন্য সেরা গীতিকারের মনোনয়ন পেয়েছেন শ্রীজাত। সেই চিঠি দেখে অবাক সকলেই। রামপ্রসাদের এই জনপ্রিয় গান প্রায় সকল বাঙালিরই জানা। তাহলে গীতিকারের জায়গায় শ্রীজাতর নাম কেন? এই নিয়েই শুরু হয় তরজা। অনেকেই বুঝতে পারেন যে অ্যাওয়ার্ডস কর্তৃপক্ষের একটা বড়সড় ভুল হয়েছে কিন্তু ততক্ষণে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল সেই চিঠি। অনেকেই প্রশ্ন তোলেন কেন এই মনোনয়নের বিরোধীতা করছেন না শ্রীজাত? কেউ কেউ আবার এই নিয়ে শ্রীজাতও ব্যক্তিগত আক্রমণ করতেও ছাড়েননি। রবিবার সকালে এই প্রসঙ্গে মুখ খুললেন শ্রীজাত।
আরও পড়ুন- Mrinal Sen Centenary: নীল আকাশের নীচে অনন্তকাল ধরে হাঁটছেন এক প্রখর পদাতিক...
আসলে কী ঘটেছে ঘটনাটা? শ্রীজাত লেখেন, ‘‘মন রে, কৃষিকাজ জানো না’ – টেলি সিনে অ্যাওয়ার্ডস-এর তরফে এই গানটির জন্য সেরা গীতিকারের মনোনয়নপত্রটি যখন আমার ফোনে আসে, তখন আমি একটি বিজ্ঞাপনের কাজে বিষম ব্যস্ত। তাই কিছুক্ষণ খুলে দেখা হয়নি। পরে চিঠির প্রতিলিপি খুলে তুমুল অঘটনটি দেখামাত্র আমি চেষ্টা করি কোনওভাবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তা জানাতে। আমাদের ছবির প্রযোজক রাণা সরকার মারফত আমার সঙ্গে কথা হয় সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মৃন্ময় কাঞ্জিলালের। তাঁকে আমি স্পষ্টতই জানাই, বিরাট আকারের এক ভ্রান্তি হয়ে গেছে তাঁদের তরফে এবং পুরস্কার তো অনেক পরের কথা, এই মনোনয়ন মেনে নেওয়াই আমার পক্ষে সম্ভব নয়। সব শুনে তিনি ভুল স্বীকার করেন এবং জানান যে যত দ্রুত সম্ভব এই ত্রুটি সংশোধন করে নেওয়া হবে। ব্যক্তিগত স্তরে এই ঘটনার জন্য তিনি আমার কাছে দুঃখপ্রকাশ করেন।’
তবে এরপরেই নেটপাড়ার কটাক্ষের বিরোধীতা করে তিনি লেখেন, ‘মুশকিল হচ্ছে আমাদের এখানে কোনও বিষয়ই বেশিক্ষণ আলোচনার আওতায় থাকে না। ঠাট্টা, মশকরা ও ব্যক্তি-আক্রমণের স্তরে নেমে আসে। বিশেষত তার কেন্দ্রে যদি আমি থাকি। সারাদিন কাজের ব্যস্ততায় সংবাদমাধ্যমের বন্ধুদের ফোন ধরতে পারিনি, কিন্তু টের পাচ্ছিলাম, এ নিয়ে জল ঘোলা হচ্ছে। কিন্তু একটা কথা আছে এখানে। রামপ্রসাদ সেনের গানের জন্য আমাকে মনোনীত করা যেমন বিস্ময়কর অজ্ঞানতা বা অসাবধানতার পরিচায়ক, তেমনই এই মনোনয়নের জন্য আমাকে আক্রমণ করাও অশিক্ষা ও অভব্যতার সামিল। প্রথমত, অনেকেই দেখলাম ধরে নিয়েছেন যে, এই পুরস্কার আমি পাচ্ছি ও গ্রহণ করছি। তাঁরা সম্ভবত মনোনয়ন এবং পুরস্কারের তফাতটুকুও জানেন না। এই দুয়ের মধ্যে কতগুলো পর্যায় আছে বা থাকতে পারে, তাও তাঁদের জানা নেই। এও জানেন না যে, মনোনয়ন ব্যক্তি-মানুষের গ্রহণ বর্জনের বাইরে। গ্রহণ বা বর্জনের বিষয় তখনই আসে, যখন কেউ পুরস্কৃত হন। নইলে নয়। তাই আমি কেন এই মনোনয়ন গ্রহণ করলাম, এ-প্রশ্ন ভিত্তিহীন। কিন্তু এই মনোনয়নের বিরোধ নিশ্চয়ই করা উচিত, যা আমি যথাস্থানে করেওছি’।
তিনি আরও লেখেন, ‘যাঁরা যে-কোনও বিষয়ের কারিগরি দিকগুলি বিচার না-করেই ময়দানে নেমে পড়েন, তাঁদের নিয়ে ভাবার সময় আমার নেই। যেমন খতিয়ে দেখা বা পড়ার মতো বাজে সময় তাঁদেরও নেই, বদলে খেউড়ে অংশ নেবার মতো মহান কাজে নিবিষ্ট থাকতে হয়। দ্বিতীয়ত, বহু মানুষ, হয়তো ইচ্ছাকৃত ভাবেই, এই ঘটনার জন্য আমাকে দায়ী করছেন। এখন, দায়ী করলেই কেউ দায়ী হয়ে যায় না। সে তো মাঝেমধ্যে সিরিয়ায় বোম পড়ার জন্যেও ফেসবুকে আমিই দায়ী থাকি। সেটা কথা নয়। এতে বরং অভিযোগকারীদের অশিক্ষা ও উদ্দেশ্যই প্রকাশ পায়’।