আচানক ইয়ে মন, কিসিকে জানে কে বাদ, করে বসে উসকে ইয়াদ
স্বরূপ দত্ত
বাংলায় থাকতেন বেশি। নিজেকে গ্লোবালাইজেশনের ভিড়ে হারিয়ে দিতে পারেননি। তবু, কখনও মনের আনন্দে বেড়িয়েছেন এদিক ওদিক। তাতেই সাম্রাজ্য দখল করে নিয়েছেন। কখনও চেঙ্গিস খাঁ হতে হয়নি তাঁকে। কিন্তু দিব্যি গর্ব করে বলতে পারেন, তাঁর সুরের সীমারেখা অনেকটা। সাম্রাজ্যর আকার কম নয়।
বাংলায় যা করেছেন, একটা শুনলেই পরেরটায় যেতে পারবেন না। উদাহরণ স্বরূপ, নিশিদিন – নিশিদিন, শোনা শুরু করলেন হয়তো। কিন্তু শেষ হয়ে গেলই মনে হবে, ওই শুরুর মন লাগে না,-টা আরও একবার শুনতে। আগের ভালোলাগা থেকে বেড়োতেই তো পারছেন না। পরের গান শুনবেন কখন!
হিন্দিতে গিয়েও তো তাই। ধরেই নিন মধুমতী শুনবেন। সেখানেই বা শুনবেন কোনটা কোনটা? আপনার ইচ্ছে করবে সুহানা সফর শোনার জন্য। কিন্তু আপনার মনে বাজবে দিল তরফ তরফ কে ক্যাহে রাহা হ্যায়,। আটের দশকে অমল পালেকরের এত হিট নায়ক হওয়ার পিছনেও খানিকটা কারণ তো সলিল চৌধুরি বটেই। না জানে কিউ, হোতা হ্যায় ইয়ে জিন্দেগিকে সাথ, আচানক ইয়ে মন, কিসিকে জানেক কে বাদ, করে বস উসকে ইয়াদ, ছোটি ছোটি সি বাত। আবার আপনি ‘আনন্দ’-এ ঢুকে পড়লেও যে, ওখান থেকে বেড়িয়ে ফের রজনীগন্ধা ফুল তুমহারে পর্যন্ত আসতে পারবেন না!
অসমিয়া, মালয়ালম, কন্নড়, তেলেগু, তামিল, সেখানেও তো রাজই করলেন গিয়ে। একের পর এক ফিল্মের গানে সুর করলেন। আর তা ব্লকবাস্টার হিট করল। লতা মঙ্গেশকরকে দিয়ে বাংলায় গাওয়ালেন, অন্তবিহীন, কাটে না আর যেন বিরহেরও দিন। সেই একই সুর তামিলে গিয়ে যেশু দাসকে দিয়েও গাওয়ালেন, দেবি- দেবি, একদিন শুনেই দেখুন না। একটা গান থেকে আপনাকে আর একটায় যেতেই দেবে না।
এই হল সলিল চৌধুরি। তাঁকে সেরা বলব না তো কাকে বলব?