'বিয়ের অনেক সম্বন্ধই এসেছে, উত্তম সব ভাঙিয়ে দিত':সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়
Zee ২৪ ঘণ্টার এডিটর অনির্বাণ চৌধুরীর সঙ্গে অভিনেত্রীর কথাবার্তায় উঠে এল নানান প্রসঙ্গ।
নিজস্ব প্রতিবেদন: সুচিত্রা সেন ভীষণই মুডি মানুষ। এই ধরুন, আজ হয়ত আমায় চিনল, কাল চিনল না। এই সমস্ত মানুষদের সঙ্গে যেচে কথা বলা খুবই রিস্ক, হয়ত চিনলই না। সম্প্রতি, Zee 24 ঘণ্টা 'ফেস অফ' টক শোয়ে এসে মহানায়িকাকে নিয়ে এমনটাই বলেছেন কিংবদন্তী অভিনেত্রী সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়। Zee ২৪ ঘণ্টার এডিটর অনির্বাণ চৌধুরীর সঙ্গে অভিনেত্রীর কথাবার্তায় উঠে এল নানান প্রসঙ্গ।
অভিনেত্রী সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় স্মৃতির পাতা থেকে একটি ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, ''একবার স্টুডিওতে বসে সুচিত্রা সেন মেকআপ করছেন, আমি অন্যদিকে বসে রয়েছি। উনি নিজেই মেকআপ করতে করতে আয়নায় তাকিয়ে বলছেন, কত কিছুই তো করলি, সাবিত্রী চ্যাটার্জির মতো হতে পারলি কি? '' কথা প্রসঙ্গে সাবিত্রী দেবী বলেন, তিনি অভিনয়ের প্রয়োজনে পরিচালক যে ডায়ালগের কাঁদতে বলবেন, তিনি কাঁদতে পারেন, কোনওদিনই গ্লিসারিন ব্যবহারের প্রয়োজন পড়েনি। তবে কাঁদার থেকেও কমেডি করতেই বেশি ভালোবাসেন। সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের কথায় তিনি নাটকের মেয়ে, সিনেমার থেকে নাটক করতেই তাঁর বেশি ভালোলাগে। তাঁর কথায়, এখন তো কথায় কথায় নায়িকা হয়ে যাচ্ছে। আর আমায় প্রথমে বলা হয়েছিল, বাঙাল ভাষার টান রয়েছে, হবে না।
আরও পড়ুন-শ্রীকান্ত মোহতার গ্রেফতার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত, দাবি রুদ্রনীল ঘোষের
ছবি : ফাইল চিত্র
অভিনয়ের শুরুর দিনের কথা মনে করে সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, শুরুর দিন বাসে করে গিয়েছিলাম, তাও আবার পাশের বাড়ি থেকে শাড়ি ধার করে পরে গিয়েছিলাম। প্রথম অভিনয়ের পরই সবাই হাততালি দিয়ে উঠল। তখন মাসে ২০০ টাকা করে দেবে বলেছিল। তাও তিন মাসের টাকা পায়নি।
Zee ২৪ ঘণ্টার এডিটর অনির্বাণ চৌধুরীর সঙ্গে কথাবার্তায় উঠে এল আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা নিয়ে আজও মানুষের কিছু কম আগ্রহ নেই। আর সেই প্রশ্নটি হল 'উত্তম-সুচিত্রা'র কী প্রেম ছিল? উত্তরে সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় জানান, ''তা আমি তো জানি না, আমার মনে হয় না, আমি তো ওদের কাছ থেকেই দেখেছি।'' পরের প্রশ্নটাই ছিল উত্তম-সাবিত্রীর কি প্রেম ছিল? এর উত্তরে সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় বলেন, '' তা ছিল তো খানিকটা। তবে রটনাটা বেশি, আসলটা কম। যেটা শোনা গিয়েছিল যে আমায় বিয়ে করে বালিগঞ্জে বাড়ি ভাড়া করে আছে, যা নিয়ে ঝড় বয়ে গেল, সেসব কিন্তু কিচ্ছু না। আর তারপর থেকেই আমার জীবনে আরও ট্রাজেডি নেমে এল ''
আরও পড়ুন-অবশেষে নিজের অসুস্থতা ও চিকিৎসা নিয়ে মুখ খুললেন ঋষি কাপুর
ছবি : ফাইল চিত্র
ছবি : ফাইল চিত্র
সোজাসাপটা ভাষায় সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় জানান, '' দেখুন ভালোবাসা এক জিনিস, তবে আমি কখনওই চাইনি সে তার সংসার ছেড়ে চলে আসুক। আমার কপালে যদি এখন বিবাহিত পুরুষই জোটে, তাহলে আমি কী করব? ভালোবাসব না? কিন্তু আমি কারোর ঘর ভাঙবো না। যার জন্য আমার নিজের ঘর হয়নি। তবে উত্তম কুমারকে পাইনি বলে যে বিয়ে করিনি, তেমনটা নয়, বন্ধু অনেক ছিল, তবে ওই সবাই বিবাহিত, আর আমি কারোর ঘর ভাঙতে চাইনি। অবিবাহিত পুরুষও পেয়েছি, কত ভালো সম্বন্ধ এসেছে, উত্তম কুমার গিয়ে ভাঙিয়ে দিয়ে এসেছে। উত্তম আমার প্রতি পজেসিভ ছিল। তবে অনেকে বলেন আমি মিথ্যা বলছি, তাই এটা নিয়ে আমি কোনওদিন কিছু বলিনি।''
আরও পড়ুন-পাওলি ও অর্পিতার সঙ্গে একফ্রেমে দেব
সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ''সংসার করিনি তার জন্য কোনও আফসোস নেই। কারণ আমার দিদির ছেলেপুলেদের মানুষ করেছি। তবে এখনও হয়ত তাঁদের ডাকলেই তাঁরা আসবে, তবে সবারই তো সংসার আছে। এত বড় বাড়িতে তো কথা বলারও সঙ্গী চাই। তাই একা লাগে।'' এখনকার অভিনেত্রীদের মধ্যে কাকে ভালোলাগে? এই প্রশ্নের উত্তরে ঠিক করে কারোর নামই মনে করতে পারলেন না। একবার বললেন কী যেন শ্রী দিয়ে নাম। অনির্বাণ চৌধুরী তাঁকে ধরিয়ে দিলেন,শুভশ্রী। এরপর সাবিত্রী দেবী বলেন, হ্যাঁ, কারোর নামই ঠিক করে জানিনা, সবাই ওই একই অভিনয় করে আলাদা করে কারোর নাম বলতে পারি না।