প্রথম ছবি 'ধড়ক'এ নজর কাড়তে পারলেন শ্রীদেবী কন্যা জাহ্নবী?
অভিনয় দিয়ে কী নজর কাড়তে পারলেন শাহিদ কাপুরের ভাই ঈশান খট্টর ও শ্রীদেবী কন্যা জাহ্নবী? চলুন দেখে নেওয়া যাক...
নিজস্ব প্রতিবেদন : মারাঠি আইকনিক ছবি 'সাইরাট'-এর রিমেক করছেন করণ জোহর। তাই সেটা কেমন হবে এটা জানতে 'ধড়ক' নিয়ে দর্শকদের মধ্য়ে আগ্রহ এবং উৎসাহ ছিলই। তবে সেই উৎসাহ, উদ্দীপনা আরও অনেকটাই বেড়ে যায় এই ছবির মাধ্যমেই শ্রীদেবী কন্যা জাহ্নবীর বলিউডে ডেবিউ করার খবরে। তাই শ্যুটিং শুরুর সময় থেকে 'ধড়ক' আলোচনাতেই ছিল। অবশেষে আজ, ২০ জুলাই মুক্তি পেয়েছে ধর্মা প্রোডাকশন প্রযোজিত শশাঙ্ক খৈতান পরিচালিত 'ধড়ক'। কিন্তু কেমন হল ছবিটি? অভিনয় দিয়ে কী নজর কাড়তে পারলেন শাহিদ কাপুরের ভাই ঈশান খট্টর ও শ্রীদেবী কন্যা জাহ্নবী? চলুন দেখে নেওয়া যাক...
ছবির গল্প ও বিষয়বস্তু: ছবির গল্পে কিছু জায়গায় নতুনত্বের ছোঁয়া দেওয়ার চেষ্টা হলেও মূলত 'সাইরাট'কে অনুসরণ করেই তৈরি হয়েছে 'ধড়ক'-এর চিত্রনাট্য। ছবির প্রেক্ষাপট মধুকর ও পার্থবীর অদমনীয় প্রেম। আর এই প্রেমে বাধা হয়ে দাঁড়ায় সমাজ, জাতিভেদ, অর্থনৈতিক বৈষম্য ও রাজনীতি। এসব অতিক্রম করেই মধুকর ও পার্থবী নিজেরদের ভালোবাসা এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়। এসবকিছুতেই নাগরাজ মঞ্জুলের মারাঠি ছবি 'সাইরাট'-এর মতোই শশঙ্ক খৈতানের 'ধড়ক'। তবে 'সাইরাট'এর প্রেক্ষাপট যেখানে ছিল মহারাষ্ট্র, সেখানে 'ধড়ক'এর প্রেক্ষাপট রাজস্থানের উদয়পুর।
ছবিতে পার্থবী (জাহ্নবী) রাজনীতিবিদ রতন সিং-এর (আশুতোষ রানা) মেয়ে। অন্যদিকে মধুকর (ঈশান খট্টর) এক্কেবারেই মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে। তাঁর বাবা এক রেস্তোরাঁ মালিক। অর্থনৈতিক ও সামাজিক বৈষম্য থেকে উদাসীন পার্থবী ও মধুকর একে অপরের প্রেমে পড়ে। আর বিষয়টা জানতে পেরে তাঁদের পরিবা তাঁদেরকে আলাদা করতে উঠে পড়ে লাগে। এসব থেকে বাঁচতে উদয়পুর থেকে মুম্বই হয়ে সোজা কলকাতায় এসে পৌঁছয় তাঁরা। সেখানে তাঁর সচিন ভৌমিক (খরাজ মুখোপাধ্য়ায়) হস্টেলে ঠাঁই নেয়। যেটা মারাঠি ছবি 'সাইরাট'-এর গল্পে ছিল না। তবে শেষপর্যন্ত কী হবে সেটা না হয় আর বললাম না, ওটা সিনেমাটি দেখেই জানবেন।
বিশ্লেষণ: একদিকে পরিচালক নাগরাজ মঞ্জুলের সাইরাটের গল্প যেভাবে বাস্তবের পটভূমিতে পা রেখে চলেছিল। সেখানে করণ জোহর প্রযোজিত শশঙ্ক খৈতান পরিচালিত 'ধড়ক' অনেকটাই ঝাঁ চকচকে করে উপস্থাপন করা হয়েছে। বিশেষ করে পার্থবী ও ঈশান যখন বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গিয়ে নিজেদের ভালোবাসার জন্য লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন তখনও কীভাবে তাঁদের পোশাক কেতাদুরস্থ হতে পারে তা নিয়ে তো প্রশ্ন থেকেই যায়? পাশাপাশি ছবির গল্পও অনেক বেশি নাটকীয় তাই কোথাও যেন বাস্তবের মাটি থেকে দূরত্ব থেকেই যায়।
অভিনয়: ছবিতে ঈশান খট্টর ও জাহ্নবী কাপুরের মধ্যে বেশি নজর কেড়েছেন ঈশানই। তাঁর অভিনয় অনেকটাই সাবলীল ও এনার্জেটিক। সেই তুলনা জাহ্নবী কাপুরের অভিনয় অনেকটাই দুর্বল। বিশষ করে তাঁর ভাষা ব্যবহার শুনে বেশ বোঝা যাচ্ছে তিনি মেবারি উচ্চরণ রীতি বিশেষ রপ্ত করে উঠতে পারেননি। তবে নজর কেড়েছে পার্থবী অর্থাৎ জাহ্নবীর বাবা রাতন সিংয়ের চরিত্র আশুতোষ রানার অভিনয়।
মিউজিক, সিনেমাটোগ্রাফি, চিত্রনাট্য ও পরিচালনা : ছবিতে অজয় অতুলের করা মিউজিক বেশ মন কাড়ছে তা বলাই বাহুল্য। যদিও যেহেতু উদয়পুরের প্রেক্ষাপটে ছবির গল্প এগিয়েছে তাই কখনও কখনও মনে হতে পারে সিনেমার গানে রাজস্থানি গানের ছোয়া থাকলে ভালো হত। তবে নজর কেড়েছে বিষ্ণু রাও-এর সিনেমাটোগ্রাফি।
এদিকে এই ছবির চিত্রনাট্য আলাদা করে নজর কাড়েনি। আর পাঁচটা বানিজ্যিক ছবির মতোই মনে হয়েছে। শেষ পর্যায়ে গিয়ে মনে হয়েছে ছবিটা যেন শেষ হওয়ার জন্য হয়ে শেষ হয়ে গেল। আর পরিচলনার কথা বলতে গেল যেভাবে পরিচলক হিসাবে 'বদ্রীনাথ কী দুলহনিয়া', 'হামটি শর্মা কী দুলহনিয়া'র মতো ছবিতে দর্শকদের মন কেড়েছিলেন শশাঙ্ক খৈতান, সেভাবে হয়ত 'ধড়ক'-এ মন ছুঁতে পারলেন না।
সবমিলিয়ে ধড়ক-কে ৫-এর মধ্যে আড়াই দেওয়া যেতে পারে।