মহানায়কের ২১১ ছবির নাম দিয়ে কবিতা

Updated By: Sep 3, 2016, 08:56 PM IST
 মহানায়কের ২১১ ছবির নাম দিয়ে কবিতা

স্বরূপ দত্ত

দৃষ্টিদান দিয়ে শুরু তোমার, কামনা করেছিলে তারপরেই।
মর্যাদা পেতে দেরি হয়নি, তাই তো আমাদের সহযাত্রী হলে।।
নষ্টনীড়ের ওরে যাত্রী, সঞ্জীবনী সুধা কী পেলে?
বসু পরিবার মলিন হল বলো তো কার পাপে।।

সারে চুয়াত্তর আর লাখ টাকা নিয়ে নবিন যাত্রা করলে।
বউ ঠাকুরানির হাট থেকে মরণের ওপারেও গেলে।।
চাঁপাডাঙ্গার বউ ফেলে কিনা ওরা থাকে ওধারে!
প্লট নাম্বার ফাইভকেই বাছলে প্রতিশোধের ব্যাপারে।।

মনে আছে অন্নপূর্ণার মন্দিরে গিয়ে অগ্নিপরীক্ষা দিয়েছিলে।
মনের ময়ূর নাচিয়ে গৃহপ্রবেশ করেছিলে হাতে বকুল নিয়ে।
কল্যাণী, ব্রতচারীনী করে এই ছিল বিধিলিপিতে সদানন্দের মেলা।
অনুপমা উপহারই যে ছিল সবার উপরে, লক্ষ্য হীরা।।

রাজকমল হাতে নিয়ে কঙ্কাবতীর ঘাটে সাঝের প্রদীপ জ্বেলেছিলে।
শ্যামলী, শিল্পীদের নিয়ে সাহেব বিবি গোলামের শাপমোচন করেছিলে।।
একটি রাতে সাগরিকা সঙ্গে নিয়ে পূত্রবধুর সঙ্গে পরিচয় করিয়েছিলে
চিরকুমার সভায় রাত ভোরে সুরের পরশে পূনর্মিলন করেছিলে।

চন্দ্রনাথ কোথায় তোমার বড় দিদি, হারানো সুর খুঁজতে গিয়ে পথে হল দেরী।
তাসের ঘর ভেঙে দিয়ে নতুন করে সব্যসাচীর যাত্রা হল শুরু।
অভয়ের বিয়েতে জীবন তৃষ্ণার দায়ে হারজিত ভুলে সূর্যতোরণ গড়লে
মৃন্ময়ী গার্লস স্কুলের ইন্দ্রাণীর ডাক্তারবাবু যৌতুক দিল খেলাঘরে।।

রাজলক্ষ্মী শ্রীকান্তকে নিয়ে পাড়ি দিলে মরুতীর্থ হিংলাজে।
খোকাবাবুর প্রত্যাবর্তন বিচারকের চাওয়া পাওয়া গলি থেকে রাজপথে।
এ বড় অবাক পৃথিবী, তাই তো সোনার হরিণেরও রাজা সাজা।
কূহক, মায়ামৃগ, হাত বাড়ালে বন্ধু তবুও বন্ধু খুঁজে যাওয়া।।

সাথীহারা মানুষের সপ্তপদী কী হবে, শুধু লেখা শহরের ইতিকথা।
বিপাশার নেকলেস হারালে দুই ভাই শেষ অঙ্ক কীভাবে মেলাবে!
আমাদর দেশে দেওয়া নেওয়া, ভ্রান্তিবিলাস তো হবেই।
নিশীথে তোমার, মোমের আলোয় লাল পাথর জ্বলবেই।।

সূর্যতপা যতুগৃহে কী আর নতুন তীর্থ হয়।
বিভাস রাজকন্যা নিয়ে থানা থেকে আসছি বললেই ভয়!
নায়ক বদলে গিয়ে হয়েগিয়েছিলে রাজদ্রোহী।
শঙ্খবেলায় কাল তুমি আলেয়া ছিলে চিরবিদ্রোহী।।

অ্যন্টনি ফিরিঙ্গী তুমি যেন এসেছিলে চিড়িয়াখানায়।
নায়িকা সংবাদ, জীবন মৃত্যু, এই তো জীবনের তিন অধ্যায়।
অপরিচিত প্রকৃতি, কখনও মেঘ, তবু চৌরঙ্গী চিরদিনের।
কমললতা, সবরমতীর পাড়ে চলে গেল মন নিয়ে।।

মঞ্জরী অপেরার কলঙ্কিত নায়ক বিলম্বিত লয়ে নিশিপদ্ম ফোঁটায়।
রাজকুমারী, ধন্যিমেয়ে দুটি মনের বিলম্বিত লয়।
আলো আমার আলো, তুমি কেন ছদ্মবেশী হয়ে হার মানা হার মানবে?
নবরাগে এখানে পিঞ্জর, মেমসাহেব জীবন জিজ্ঞাসায় জড়াবে।।

বিরাজ বউয়ের অন্ধ অতীত ভুলে স্ত্রীর সঙ্গে ঝিন্দের বন্দি হবে।
সোনার খাঁচায় ছিন্নপত্রই শেষে বনপলাশীর পদাবলী রচনা করবে।।
রৌদ্রছায়ার যদুবংশ আলোর ঠিকানায় রাতের রজনীগন্ধা।
বিকেলে ভোরের ফুল আসলে রোদন ভরা বসন্তে সন্ন্যাসী রাজা।।

মৌচাকের কী কপাল, শেষে গিয়ে অমানুষ হবে।
নগর দর্পণে, প্রিয় বান্ধবী, অগ্নিশ্বরকেও রক্ততিলক পড়াবে।
বাঘবন্দির খেলার সেই চোখ-তে ছিল বহ্নিশিখা।
হোটেল স্নো ফক্সের নিধিরাম সর্দারের হাতে মোমবাতি।।

আনন্দ আশ্রমের হিসেব জানো, চাঁদের কাছাকাছি।
ভোলা ময়রার সিস্টারই আসলে সব্যসাচী।
শ্রীকান্তের উইল পড়ে দেবদাসের দুই পুরুষের নাম ও নিশান।
অসাধারণ, ধনরাজ তামাং এসে করলেন সব সমাধান।।

রাজাসাহেব এসে খুললেন নবদিগন্ত, আওড়ালেন ব্রজবুলি।
পক্ষীরাজ ঘোড়ায় চেপে দুই পৃথিবীতে এলেন আরও এক রাজনন্দীনী
ওগো বধূ সুন্দরী তোমার দর্পচূর্ণ কবে হবে।
সূর্যসাক্ষী কলঙ্কীনী কঙ্কাবতীই রবে।।

ইমন কল্যাণ দেশপ্রেমী, তারমাঝেই সত্যজিতের নায়ক।
এ পৃথিবীতে তুমি চিরসবুজ, প্রণাম আমাদের চিরকালের মহানায়ক।।

আরও পড়ুন জেনেই হোক অথবা না জেনেই, নীল আলো শহরে বসানোর জন্য ধন্যবাদ দিতে চাই মুখ্যমন্ত্রীকে

.