এই বসন্তে নেই তুমি
দাদা নেই, তাই আর দোল খেলেনি ওরা। অরূপের ভাই, বোন, মা, বাবা, দিদি পারাপর্শিক সবাই আজ ধুসরে নিজেদের মুড়ে রেখেছেন। একটা বছর আগেই দাদার হাত ধরে দোল খেলতে গিয়েছিল অরুপের ভাই সৌরভ। আজ দাদা নেই। তাই এক ছিটে ফোঁটা রঙ লাগাতে দেয়নি নিজের শরীরে।
হাওড়া, সালকিয়া: দাদা নেই, তাই আর দোল খেলেনি ওরা। অরূপের ভাই, বোন, মা, বাবা, দিদি পারাপর্শিক সবাই আজ ধুসরে নিজেদের মুড়ে রেখেছেন। একটা বছর আগেই দাদার হাত ধরে দোল খেলতে গিয়েছিল অরুপের ভাই সৌরভ। আজ দাদা নেই। তাই এক ছিটে ফোঁটা রঙ লাগাতে দেয়নি নিজের শরীরে।
"এখন যার যৌবন, প্রতিবাদের শ্রেষ্ঠ সময় তাঁর", এটাই তো করেছিল অরুপ। স্বরস্বতী পুজোর বিসর্জনে বোনের সম্মান রক্ষার জন্যে প্রতিবাদ জানিয়েছিল অরূপ। খুন হয় অরুপ। দোষীরা সবাই জেলে। কিন্তু এখনও বিচার অধরা। বিচার পেলেই একমাত্র রঙিন হবে তাদের বসন্ত।
২ ফুট বাই ৪ ফুটের ঘরে অসুস্থ মা আজও পথ চেয়ে বসে থাকে। দিদি ভাতের থালা হাতে নিয়ে ভাইয়ের ছবির দিকে তাকিয়ে। কথা বলতে বলতেই চোখ ছল ছল করে বাবার। পাড়ার সবাই মেনে নিতে পারছে না অরূপের মৃত্যু। অকালে ঝরেনি ও। কেড়ে নেওয়া হয়েছে ওর জীবন। তাই বসন্তকে বয়কট করল ওরা। রঙ নিয়ে মাতামাতি ছিল যার সবথেকে বেশি, সেই আর নেই। তাই রঙকে 'না'।
আমাদের রঙ চাই না, দোল চাই না। চাই বিচার। হাওড়ার হাওয়ায় বসন্তের সুরে কোথাও ভাসছে এই কর্কশ আওয়াজ।
পাশের ঘরের কাকিমা ভুলতে পারছেন না সেই দিন গুলির কথা। অরূপের লাল রঙে ভূত হয়ে আসা। সারা দিন পর এসে একসঙ্গে খাওয়া দাওয়া, বার বার মনে পরছে অরূপের বাবার। আরও বেশি করে মনে পড়ছে অরূপের সাহস।
যৌবনের অনেকগুলি বসন্ত রঙিন ভাবে কাটিয়েছিল অরূপ। আবারও বসন্ত এসছে। এই বসন্তে অরূপ চলে গেছে। বসন্ত আবারও আসবে। কিন্তু অরূপ আর আসবে না।