অন্ধ ঘোড়া নিয়ে বিপাকে নওদা গ্রাম
চোখে দেখে না। তাই তার কোনও কদর নেই। খোলা আকাশের নিচে আপন মনে সে ঘুরে বেড়ায়। বৃষ্টি এলে চুপ করে দাঁড়িয়ে সে ভেজে। কারণ সে একেবারে একা। আর এই দৃষ্টিহীন ঘোড়াকে নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন বর্ধমানের নওদা গ্রামের বাসিন্দারা। স্থানীয় প্রশাসন থেকে জেলাশাসক। সাহায্যের জন্য অনেকেরই দরজায় কড়া নেড়েছেন গ্রামবাসীরা। আশ্বাসও মিলেছে। কিন্তু ওইটুকুই। কাজের কাজ হয়নি।
মাস ছয়েক আগের কথা। বর্ধমানের নওদা গ্রামে হঠাতই হাজির একটি বাদামি রঙের ঘোড়ার। কোথা থেকে এলো, কেউ জানে না। ফলে মানুষের কৌতুহলও কম ছিল না। কিন্তু ক্রমে তাঁরা বুঝতে পারেন যে ঘোড়াটি চোখে দেখে না। সেই থেকে তার প্রতি গ্রামবাসীদের মায়া পড়ে যায়। ঘোড়াটির ঠাঁই হয় গ্রামের একটি মাঠে। তখন গ্রীষ্মকাল থাকায় সমস্যা হয়নি।সারাদিন সে মাঠেই চড়ত। রাতটাও কাটত খোলা মাঠেই। কিন্তু বর্ষার আগমনে সমস্যায় পড়ল ঘোড়া। মাঠ জলে ভরে গেল। ক্রমে সেই মাঠে শুরু হল চাষাবাদ। তখন সেই নীরিহ ঘোড়াকে রাখা হল দুটি সেচখালের মধ্যবর্তী জমিতে। যেহেতু সে চোখে দেখে না, তাই মাঝে মাঝেই সে পড়ে যায় সেচখালের জলে। তখন স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে উদ্ধার করে।
নওদাবাসীর আশা, স্থানীয় প্রশাসন যদি দৃষ্টিহীন এই ঘোড়াটির চিকিত্সার ব্যবস্থা করে, তা হলে হয়ত সে আবার দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাবে। বর্ধমানের জেলাশাসকও জানিয়েছেন, ঘোড়াটির দ্রুত চিকিত্সার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশ তিনি দিয়েছেন। গ্রামবাসীদের দাবি, এর আগে স্থানীয় প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে তাঁরা ঘোড়াটির জন্য সাহায্যের আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু তখন আশ্বাস দিলেও কেউ কথা রাখেন নি। এবার খোদ জেলাশাসক এবিষয়ে হস্তক্ষেপ করায় কিছুটা আশাবাদী নওদা গ্রামের মানুষ।